তুরস্ক সরকার প্রতি বছর সারা বিশ্বের পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এই স্কলারশিপকে তুর্কি ভাষায় ‘তুর্কিয়ে বুরসলারি’ (TÜRKİYE BURSLARI) বলে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীসহ বিশ্বের সকল দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত এই স্কলারশিপ।
যা যা থাকছে স্কলারশিপে-
-সম্পূর্ণ টিউশন ফি।
-মাসিক বৃত্তি- অনার্সের জন্য ৭০০ লিরা, মাস্টার্সের জন্য ৯৫০ লিরা এবং পিএইচডির জন্য ১৪০০ লিরা।
-মূল কোর্স শুরু হওয়ার আগে এক বছরের ফ্রি তুর্কি ভাষা শিক্ষা কোর্স।
-সরকারি/বেসরকারি ডর্মিটরিতে বিনামূল্যে থাকার ব্যবস্থা (সকাল ও রাতের খাবারসহ)
-প্রথমবার আসা ও কোর্স শেষে নিজদেশে যাওয়ার বিমান টিকেট (তার্কিশ এয়ারলাইন্সে)।
-স্বাস্থ্যবীমা।
আবেদনকারীর যোগ্যতা
-আপনি তুরস্কের নাগরিক নন।
-তুরস্কের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ভর্তি হননি।
-আপনি স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি কিংবা রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক।
-আপনার এসএসসি/দাখিল, এইএইচসি/আলিম পরীক্ষায় ৭০% মার্ক থাকলে অনার্সের জন্য, আর উল্লেখিত পরীক্ষাগুলো ও অনার্সে ৭৫% মার্ক থাকলে মাস্টার্সের জন্য, আর মাস্টার্সসহ সকল পরীক্ষায় ৭৫% মার্ক থাকে তাহলে পিএইচডির জন্য আবেদন করতে পারবেন, তবে মেডিকেল ছাত্রদের বেলায় ৯০% মার্ক থাকা লাগবে। সাধারণত তার্কিশ স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য IELTS/TOFEL এর দরকার হয় না, তবে আপনি যে সকল ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করবেন, যদি ঐ সকল ইউনিভার্সিটির রিকোয়ারমেন্টে IELTS/TOFEL চেয়ে থাকে তাহলে IELTS/TOFEL স্কোর লাগবে। তবে আপনার যদি ইতিমধ্যে IELTS/TOFEL, GRE, GMAT ইত্যাদি করা থাকে তাহলে তা অবশ্যই আবেদনের সময় তার স্কোর ও সার্টিফিকেট সাবমিট করবেন।
*বয়স-
-স্নাতকের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ২১ বছরের নিচে।
-স্নাতকোত্তর জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৩০ বছরের নিচে।
-পিএইচডির জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৩৫ বছরের নিচে।
-রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৪৫ বছরের নিচে।
আবেদনের সময়
প্রতি বছর জানুয়ারিতে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়। ২০১৯ সালে জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
-জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট বা জন্ম সনদের ইংরেজি কপি।
– প্রাতিষ্ঠানিক সকল পরীক্ষার সনদপত্র।
-প্রাতিষ্ঠানিক সকল পরীক্ষার ট্রান্সক্রিপ্ট।
-সদ্যতোলা এক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
-IELTS/TOFEL, GRE, GMAT ইত্যাদির সার্টিফিকেট। (যদি আপনার আবেদনকৃত বিশ্ববিদ্যালয় সেগুলো চেয়ে থাকে)
-দুইটি রেফারেন্স লেটার।
উপরোক্ত সকল ডকুমেন্ট স্ক্যান করে পিডিএফ ফাইল বানিয়ে আপলোড করতে হবে।
– এবং Statement of Purpose (SOP) এবং কিছু প্রশ্নের উত্তরের উপর ভিত্তি করে Letter of Intent. (এগুলো আবেদনের সময় সরাসরি লিখতে হবে, আলাদা কাগজে লিখে আপলোড করতে হবে না)
আবেদন পদ্ধতি
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া খুবই সহজ, তবে একটু দীর্ঘ সময়ের কাজ। তুর্কিয়ে বুরসলারির ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার সচল একটি ইমেইল দিয়ে একাউন্ট খুলে একে একে সকল তথ্যাবলি দিয়ে পূরণ করতে থাকুন। এক স্টেপ শেষ করে সেভ দিয়ে আরেক স্টেপে চলে যাবেন। খুবই সহজ পদ্ধতি।
আর হ্যাঁ, আপনাকে কিন্তু একবারেই সমস্তটা পূরণ করতে হবে না। যখনই সময় হবে, ঠান্ডা মাথায় একাউন্টে লগ ইন করে একে একে সমস্ত তথ্য পূরণ করতে পারেন। যত খুশি ততবার লগ ইন করতে পারবেন। সুতরাং খুব জলদি করতে হবে, একদিনেই করতে হবে এমন কিন্তু না। সকল সার্টিফিকেট, মার্কশিট, রেফারেন্স লেটার, অন্যান্য সার্টিফিকেট পিডিএফ করে আপলোড করবেন।
হাতে সময় নিয়ে করুন, আবেদনের শেষ সময়ে করবেন না। ওখানে Statement of Purpose এবং Letter Intent লেখার অপশন থাকবে, ধীরে ধীরে এগুলো পূরণ করবেন। আপনার Extra-Curricular Activities, Social Works, Award কিংবা Volunteering কার্যক্রমের সার্টিফিকেট থাকলে তা আপলোড করার অপশন থাকবে এবং সেগুলোর ছোট বর্ণনাও লিখতে হবে।
সকল ডকুমেন্ট আপলোড করার পর আপনার আপলোডকৃত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আপনাকে সাবজেক্ট ও ইউনিভার্সিটির লিস্ট দেয়া হবে। আপনি সেখান থেকে সর্বোচ্চ ১২টি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করতে পারবেন। অবশ্যই আপনি গুগল করে সরবাহকৃত ইউনিভার্সিটিগুলোর র্যাঙ্কিংসহ বিস্তারিত জেনে নিবেন। মনে রাখবেন আপনি প্রথম পছন্দ যে ইউনিভার্সিটি দিবেন, সেটাকেই অথোরিটি বেশি প্রায়োরিটি দিবে। তবে ব্যতিক্রমও হয়। সম্পূর্ণ পূরণ করার পর আপনি ফাইনাল চেক করার সুযোগ পাবেন এবং প্রয়োজনীয় এডিট করে সাবমিট করবেন।