আমেরিকায় স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলছে। এরই মধ্যে জুলাই মাসে পশ্চিমাঞ্চলে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে। অন্যদিকে দেশের পূর্বাঞ্চল টর্নেডো ও জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কা সামলে এখন তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নয়টি পশ্চিমাঞ্চলীয় স্টেইটের ৬০ মিলিয়নেরও বেশি বাসিন্দার জন্য তাপ্রবাহজনিত সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, বুধবার লাস ভেগাস, ফিনিক্স ও সল্ট লেক সিটিসহ অন্তত সাতটি শহরে তাপমাত্রা সেখানকার সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে বা তা ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ে কয়েকটি শহরে সেখানকার প্রতিদিনের তাপমাত্রার নতুন মানদণ্ডও নির্ধারণ করতে হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান্টা ক্লারা কাউন্টির অফিস অফ দ্য মেডিকেল এক্সামিনার জানিয়েছে, সেখানে জুলাই মাসের প্রথম দশ দিনে তাপজনিত কারণে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুলাইয়ে সর্ববৃহৎ শহর সান হোসেসহ কাউন্টিটিতে টানা বেশ কয়েকদিন তাপমাত্রা ৯০ থেকে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে ছিল। বেশ কয়েকবার তাপমাত্রা বেড়ে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটও অতিক্রম করেছে।
আনহাউযড রেসপন্স গ্রুপ এর আইনজীবী শন কার্টরাইট জানিয়েছেন, মারা যাওয়া ১৮ জনের মধ্যে অন্তত ছয়জনের বয়স ৫০ বছরের বেশি ছিল।
ক্যালিফোর্নিয়ার অন্যান্য জায়গার মধ্যে ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের ভেতরে গত শনিবার অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন একজন মটরসাইকেল আরোহী। পার্ক রেঞ্জারসদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই সময় সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ১২৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটেআর কাছাকাছি।
স্যক্রামেন্টোতে শনিবার ৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোক করে মারা গেছেন। ওই সময় সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
পশ্চিমের অন্যান্য স্থানের মধ্যে অ্যারিযোনায় চার বছর বয়সী এক শিসুসহ মোট দুইজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। মোহাভে কাউন্টি শেরিফের কার্যালয় জানিয়েছে, সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
জুলাইয়ের ২ তারিখ অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ১০ বছর বয়সী এক বালকের মৃত্যু হয়েছে। ফিনিক্স পুলিশ ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ওই বালক তার পরিবারের সঙ্গে হাইকিংয়ে যাওয়ার পর তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়াও সপ্তাহান্তে গ্র্যান্ড ক্যানিয়নেও তাপজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও একজন হাইকারের।
জুলাইয়ের ৫ তারিখের পর থেকে এখন পর্যন্ত ওরেগনে তাপজনিত কারণে ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গভর্নর টিনা কোটেক পুরো স্টেইট জুড়ে তাপপ্রবাহজনিত কারণে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।