বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

ঢাকার কাছেই ঘুরে আসুন বাঁশ-কাঠের তৈরি রিসোর্টে

  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৪

প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে নির্মল সবুজের সমারোহ ও আকাশের আলিঙ্গন- সব যেন একাকার হয়ে মিশে গেছে সেখানে। বলছি, বাঁশ ও কাঠের তৈরি গ্রামীণ পরিবেশবান্ধব দৃষ্টিনন্দন রূপগাঁও নলেজ এক্সচেঞ্জ সেন্টারের কথা।

গাছপালা ঘেরা গাঢ় সবুজের ছোঁয়ায় মোড়ানো স্থানটি। এরই মধ্যেই মাথা তুলেছে বাঁশ-কাঠের তৈরি বিশাল আকৃতির লম্বা একটি দোতলা ঘর। সারি সারি বাঁশের খুঁটিতে বাঁশ-কাঠের যৌথ মেলবন্ধনে ১৭০ ফিট লম্বা ও ৩০ ফিট প্রশস্ত বিশাল দোতলা পরিবেশবান্ধব বাড়িটি বিনোদনপ্রেমিদের নজর কাড়ছে।

প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রাত্য আমিন ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রূপগাঁও রিসোর্টের যাত্রা শুরু করেন। বেশ কয়েক বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন এ প্রতিষ্ঠান। ২০ শতাংশ জায়গার ওপর ১৭০ ফিট লম্বা এই দ্বিতল বাড়ি। এটি বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরির কারণ হলো বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে আগামী প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।

চমৎকার এই রিসোর্টে প্রবেশ করতে টিকিট লাগে না। গাড়ি নিয়েও আপনি যেতে পারবেন। পার্কিংয়েও কোনো টাকা নেওয়া হয় না। প্রাকৃতিক চিরচেনা সবুজ মনোরম গ্রামীণ পরিবেশে গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ যাদের নেই, তারা চাইলে ঢাকা থেকে মাত্র ২০-৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়েই গ্রামীণ পরিবেশে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।

ইট-পাথরের নগরীকে পাশ কাটিয়ে ঢাকার খুব কাছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রের’ পার্শ্ববর্তী এলাকার দক্ষিণ দিকে জাঙ্গীর নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে রূপগাঁও রিসোর্টটি।

অবশ্য সেখানে এসির কোনো ব্যবস্থা নেই। ৮০ শতাংশ বাঁশ দিয়ে তৈরি এ দ্বিতল স্থাপনায় ছাদ, প্রতিটি রুমের দেওয়াল, দোতলার মেঝে এমনকি দোতলায় ওঠার সিঁড়িও তৈরি করা হয়েছে কাঠ-বাঁশ দিয়ে। এই রিসোর্টের বাইরে দেখবেন মনোমুগ্ধকর গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্য।

পরিবেশবান্ধব দৃষ্টিনন্দন এ স্থাপনায় আছে রাত কাটানোর ব্যবস্থাও। ডাবল বেডের ৭টি রুম, ৫০-৬০ জনের অংশগ্রহণে বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন, দিনব্যাপী অবস্থান কিংবা অনেকে মিলে রাতযাপনের জন্য একটি বড় হলরুম ও একটি খাবারের ঘর।

নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা গোসলখানা ও শৌচাগার। প্রাকৃতিক ও নিরাপদ দেশজ-ভেষজ খাদ্যপণ্য বিপণনের জন্য আছে একটি বিপণন কেন্দ্র। এছাড়া স্থাপনার আঙিনায় আছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা।

ঘরের মূল সিঁড়ি ধরে উপড়ে উঠতে গেলেই চোখে পড়বে বিভিন্ন জায়গায় ঝোলানো বাঁশের তৈরি কুলা। যেখানে লেখা ‘আলো হাওয়া বেঁধো না রোগে/ ভোগে মোরো না সহ অসংখ্য উক্তি’।

আবার পর্যটন স্পটের চার পাশে ধানের ক্ষেত। পুকুর, বিল ও ধানক্ষেতসহ বর্তমানে চারদিকে গ্রামীণ প্রাকৃতিক পরিবেশ বিরাজমান। স্থাপনাটির সামনের দিকে চারপাশে আমগাছের বেষ্টনী।

অসংখ্য গাছে থোকায় থোকায় ধরা আমগুলো বাতাসে দুলছে। পাশেই ফাঁকা বসতি সবুজ অরণ্য ফসলী ভূমি।

নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলী। মাটির তৈরি তৈজসপত্রে খাবার পরিবেশনসহ সব মিলিয়ে শান্ত নিরিবিলি গ্রামীণ পরিবেশে বাঁশ-কাঠে নির্মিত রিসোর্টটিকে প্রতিটি পরতে পরতে গ্রাম বাংলার পুরোনো সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করেই নির্মিত হয়েছে রূপগাঁও।

কীভাবে যাবেন?

ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ভুলতা গাউছিয়া চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসে কাঞ্চন ব্রিজের পশ্চিমপাড় নেমে ১ কিলোমিটার রাস্তা রিকশা বা অটোতে যেতে পারেন।

এছাড়া ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ডেমরা-কালিগঞ্জ সড়কের জাঙ্গির ঈদগাহ বাজারের পাশেই রূপগাঁও রিসোর্ট অবস্থিত। এ পথে স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রিকশা বা অটোতেও আসতে পারবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com