বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ঢাকার আশেপাশের ভ্রমণ গন্তব্য

  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২২

ঢাকার মানুষগুলো সবাই খুব ব্যস্ত থাকি। তবে সময় পেলেই একটু ঘুরে আসার প্রবণতা রয়েছে এই শহরের মানুষগুলোরই। একদিনের মধ্যে ঢাকার আশেপাশে কোথায় ঘুরতে যেতে চায় অনেকেই। আজ আলোচনা করা যাক, ঢাকার আশেপাশে ঘুরতে যাওয়ার কিছু জায়গা নিয়ে।

নুহাশ পল্লী

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের যত্নে গড়া নুহাশ পল্লী। ঢাকার অদূরে প্রকৃতির একেবারে কাছাকাছি হুমায়ূন আহমেদ গড়ে তুলেছিলেন নিজের স্বপ্নের ঘর। এখানে তিনি পদ্ম দিঘি থেকে শুরু করে বানিয়েছিলেন লীলাবতী দিঘিও। সে দিঘির পাড় ঘেঁষে আপন হাতে বানিয়েছেন মসলার বাগান, সেখানে দারুচিনি-তেজপাতাসহ হরেক রকমের মসলাগাছ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নানা ধরনের ঔষধি গাছ। চমকে দেওয়ার জন্য আছে সিমেন্টের তৈরি বিশাল বিশাল কুমির, ডাইনোসর আর গাছের ওপর বানানো বাড়ি। এমন অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা আর দৃশ্য নিয়েই তৈরি হয়েছে নুহাশ পল্লী, যার এক কোনায় আজীবনের জন্য শুয়ে আছেন স্বয়ং হুমায়ূন আহমেদ, বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি। এক দিনে ঘুরে বেড়ানোর জন্য এটিও একটি সুন্দর জায়গা।
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের যত্নে গড়া নুহাশ পল্লী। ছবি : সংগৃহীত

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের যত্নে গড়া নুহাশ পল্লী। ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুর শালবন

প্রকৃতির সঙ্গে যারা থাকতে চায়, তাদের জন্য ঢাকার খুব কাছের বন-বনানীর জায়গা গাজীপুরের শালবন। সকালে রওনা দিয়ে বিকেলে ফিরো আসা যায়। মাত্র ৩০ বছর আগেও এই বনে বাঘ ঘুরে বেড়াত, কালক্রমে মানুষের বসতি স্থাপন এবং গাছ কাটার ফলে অনেক পশুপাখিই হারিয়ে ফেলেছে তাদের নিশ্চিন্তের জায়গাটুকু। এই বনে দেশের সবচেয়ে বেশি শালগাছ রয়েছে। বনের ভেতর রয়েছে কিছু বড় বড় দিঘি। এই বনে প্রচুর পাখি আছে। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের বাসে উঠে বললেই হবে শালবনের গেটে নামিয়ে দেবে। অথবা যেকোনো গাড়ি দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তায় নেমে সেখান থেকে আলাদা টেম্পোতে করে শালবনে চলে যাওয়া যাবে।

বন-বনানীর জায়গা গাজীপুরের শালবন।

বন-বনানীর জায়গা গাজীপুরের শালবন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্রদ

অতিথি পাখি দেখতে চাইলে ঢাকার কাছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হলো সবচেয়ে ভালো জায়গা। সারা দিন পাখির কলতানে মুখরিত এখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্রদ। সরালি, জলপিপি, কালিম, ডাহুক, হট্টিটি, রঙ্গিলা চ্যাগা, শামুক খোলসহ নানা ধরনের অতিথি পাখির মেলা বসে এখানে। ঢাকার গাবতলী থেকে অনেকগুলো বাসই সাভার হয়ে আরো উত্তর দিকে চলে যায়, পথিমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নামিয়ে দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা নামক জায়গায় দুপুরের খাবারের ভালো ব্যবস্থা আছে। মাছ, মাংস, ভর্তা দিয়ে খুব আরাম করে খাওয়া যাবে। জাহাঙ্গীরনগরের খুব কাছেই নবীনগরে আমাদের জাতীয় স্মৃতিসৌধ, হাতে একটু সময় নিয়ে সেখান থেকেও ঘুরে আসা যাবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা অতিথি পাখি। ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা অতিথি পাখি। ছবি : সংগৃহীত

বালিয়াটি জমিদারবাড়ি

যাদের ঐতিহাসিক স্থানের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তারা এক দিনেই ঘুরে আসতে পারেন বালিয়াটি জমিদারবাড়িতে। আঠারো শতকের মধ্যভাগে লবণ ব্যবসায়ী জমিদার গোবিন্দরাম শাহ বালিয়াটি জমিদারবাড়ি নির্মাণ করেন। এই বিশাল কমপ্লেক্সটি উঁচু দেয়ালে ঘেরা। মাঝে রয়েছে চারটি সুদৃশ্য ভবন। আর ভবনগুলোর সামনের প্রাচীর দেয়ালে রয়েছে চারটি প্রবেশপথ। চারটি প্রবেশপথের চূড়ায় রয়েছে পাথরের তৈরি চারটি সিংহমূর্তি। সিংহ দরজা পেরিয়ে বাইরে বেরোলেই দীর্ঘ পুকুর। প্রায় ২০ একরের বেশি জমির ওপরে নির্মিত এই জমিদারবাড়িতে রয়েছে ছোট-বড় দুই শর বেশি কক্ষ। পেছনের দিকে আছে বড় একটি পুকুর। শান বাঁধানো ছয়টি ঘাট আছে এই পুকুরের চারপাশে।

জমিদার গোবিন্দরাম শাহ এর বালিয়াটি জমিদারবাড়ি। ছবি : সংগৃহীত

জমিদার গোবিন্দরাম শাহ এর বালিয়াটি জমিদারবাড়ি। ছবি : সংগৃহীত

সোনারগাঁয়ে পানাম নগর

প্রাচীন বাংলার রাজধানী, সোনারগাঁয়ের অদূরে এক রাজাহীন রাজ্য পানাম নগর। পানাম নগরী জুড়ে রহস্য ছড়িয়ে আছে। প্রায় প্রত্যেকটা ধ্বংসস্তুপে জড়িয়ে আছে একেকটা কাহিনি।  তবে ধ্বংস্তূপে হলে এখনও ভবনগুলো দেখার মতো। প্রায় ৪৫০ বছর আগে এ নগরী কতটা সমৃদ্ধ ছিল, তা বারবার ভাবতে বাধ্য করে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনগুলো। পানাম নগরের পথে হাঁটতে হাঁটতে ঈশা খাঁর আমলের কথা মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ভিন্ন ভিন্ন কারুকাজে নির্মিত পানাম নগরের কোনো ভবন এক তলা, কোনোটি দুইতলা, কোনোটি আবার তিনতলাবিশিষ্ট। গুলিস্তান থেকে  সোনারগাঁয়ের বাসে উঠে মোগড়া পাড়া মোড়ে নামতে হবে। সেখান থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা বা ইজিবাইকে করে যাওয়া যাবে পানাম নগর।

সোনারগাঁয়ের অদূরে রাজাহীন রাজ্য পানাম নগর।

সোনারগাঁয়ের অদূরে রাজাহীন রাজ্য পানাম নগর।

বেলাই বিল, গাজীপুর

গাজীপুরের চিলাই নদী এবং সংলগ্ন বেলাই বিল হতে পারে একটি দিন কাটানোর আদর্শ জায়গা। বিশাল জলাভূমিতে নৌকায় সারাটা দিন পার করা যায়। জেলেদের মাছ ধরা দেখা যায়। সকালে ও বিকেলে তাজা মাছ পাওয়া যায়। কানাইয়া বাজারের পাশেই চিলাই নদী। এখানে একটা নৌকা ভাড়া করে নিন। ছোট নৌকা হলে সারাদিন নেবে পাঁচশ থেকে ছয়শ টাকা। আর বড় নৌকা দুই হাজার টাকা লাগতে পারে।

গাজীপুরের বেলাই বিল। ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুরের বেলাই বিল। ছবি : সংগৃহীত

মৈনট ঘাট

দোহারের মৈনট ঘাট গিয়ে দেখা পাবেন পদ্মা নদীর। পদ্মার বিস্তৃত প্রান্তর সময় কাটনোর জন্য এটি এক দারুন জায়গা। মৈনট ঘাটে যাওয়ার জন্য গুলিস্থান থেকে ‘যমুনা ডিলাক্স’ বাস পাবেন। ভাড়া ৯০ টাকা, যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টার মতো।

ডেইলি বাংলাদেশ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com