ঢাকায় গালফ এয়ারের পাইলট ক্যাপ্টেন মোহান্নাদ ইউসুফ হাসান আল হিন্দির মৃত্যুর ঘটনায় ফৌজদারি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তবে পিবিআই তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহ।
শনিবার প্রয়াত পাইলটের বোন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তালা এলহেনডি জোসেফানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগ করেছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ইউনাইটেড হাসপাতাল ও গালফ এয়ারের অবহেলার কারণে পাইলট মোহান্নাদ ইউসুফের মৃত্যু হয়। এ প্রেক্ষিতে ফৌজদারি মামলা (সিআর কেস নং ১০১১/২০২৩) হলে আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
তবে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী গালফ এয়ারের কান্ট্রি ম্যানেজার ইশা শাহের পক্ষ হতে কোনোরূপ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি, যা পিবিআই তদন্তের অগ্রগতিতে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন তালা এলহেনডি। তাঁর মতে, মোহান্নাদ আল হিন্দির অবহেলাজনিত হত্যার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ আটকে রেখে এবং গালফ এয়ার একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে তার বক্তব্য দানে বাধা সৃষ্টির ফলে ন্যায়বিচারে বিলম্ব ঘটেছে।
তালা বলেন, ইশা শাহ এই মামলার একজন প্রধান সাক্ষী। আমি জানতে পেরেছি, ইশা শাহ গত ২৫ জুন একটি কোম্পানির ইভেন্টের জন্য ঢাকায় উপস্থিত ছিলেন। তবে কেন তিনি পিবিআইয়ের সঙ্গে দেখা করে তার বক্তব্য প্রদান করতে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের হাজির করতে অক্ষম ছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলস্বরূপ আমাদের পরিবার ন্যায়বিচারে বাধা দেওয়ার জন্য ইশা শাহ এবং গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে নিজ দেশ জর্ডান ও আন্তর্জাতিক আদালতে জুরিসডিকসনে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এটা স্পষ্ট যে গালফ এয়ার কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের পিবিআইয়ের তদন্তে সহযোগিতা করা থেকে বিরত রাখছে। এই ইচ্ছাকৃত অসহযোগিতা ছাড়াও তারা গণমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতিও দিয়েছে। তালা বলেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় ফ্লাইট চালুর জন্য ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফএএ) চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে গালফ এয়ার।
এছাড়া তারা ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইসিএও) অডিট সদ্য শেষ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, এমন পরিস্থিতিতে গালফ এয়ার আমার ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না।
তালা এলহেনডি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করেছেন, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এবং ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) কাছে গালফ এয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি। এই বিশেষ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলের মান এবং কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো এফএএ এবং আইএটিএকে গালফ এয়ারের কথিত অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবহিত করা, যা আমার পাইলট ভাইয়ের মৃত্যুর প্রধান কারণ। আমি বিশ্বাস করি, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই গুরুতর অভিযোগগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে।