বহু বছর আগে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না হলেও অনেক কাজ বা চাকরি করা যেত। এখন কলেজ ডিগ্রি ছাড়া যেন কোনো কাজই পাওয়া যায় না বলে মনে করেন অনেকেই। করোনা–পরবর্তী সময় ও বর্তমান যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক প্রযুক্তিগত কাজ আছে যেখানে তেমন একটা সনদ বা ডিগ্রির প্রয়োজন হয় না। একটু জানাশোনা ও কাজ পারলেই অনেক কোম্পানি থেকে চাকরির ডাক পড়ে। কোনো ডিগ্রির প্রয়োজন হচ্ছে না। আবার অনেকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের পড়াশোনার জন্য চার বছর সময়ের প্রয়োজন হয়। এতটা সময় যাঁরা ধৈর্য ধরতে চান না, তাঁরা বিকল্প পথে চাকরির পথে পা রাখতে পারেন। দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা, চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ বা ইন্টার্নশিপ ও অনলাইন কোর্স এ ক্ষেত্রে আপনাকে ডাক পেতে সহায়তা করবে।
ফ্রিল্যান্সিং দিয়ে এখন অনেকেই ডিগ্রি ছাড়াই কাজ শুরু করছেন। বিভিন্ন অনলাইনে কাজ দেওয়া–নেওয়ার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে (মার্কেটপ্লেস) নানা প্রয়োজন বুঝে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সারদের অনেক কাজের সুযোগ থাকে। একটু একটু করে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করা বড় বড় কাজ এসব মার্কেটপ্লেস থেকে পাওয়া যায়। বিভিন্ন ক্লায়েন্ট বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা আপনার দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে। আর ফ্রিল্যান্স ধরনের কাজ পেতে তেমন একটা শিক্ষাগত সনদের প্রয়োজন নেই। সাধারণ অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার মাধ্যমেই আপনি কাজ জোগাড় করতে পারবেন। শুধু লেগে থাকতে হবে।
শিক্ষানবিশি ধরনের কাজ
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেকোনো শ্রেণিরই শিক্ষানবিশি ধরনের কাজ আছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানে এমন কাজের খোঁজ থাকে। শিক্ষানবিশরা একই সঙ্গে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ পান আবার কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। অনেক অফিসে বেশ ভালো ভাতা পাওয়ার সুযোগ থাকে। শিক্ষানবিশি হিসেবে কাজের সময় নির্দিষ্ট দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি অর্থ আয়ের সুযোগ আছে। আগের চেয়ে এখন বেশি অফিসে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগ রয়েছে। সফটওয়্যার প্রকৌশল, ডেটা সায়েন্স, ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে শুরু করে নানা কিছু শেখার জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষানবিশ প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। বিভিন্ন শিক্ষানবিশ কাজের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সনদের প্রয়োজন হয় না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে মানবসম্পদ বিভাগের ই–মেইল ঠিকানা খোঁজ করে এ ধরনের কাজ জোগাড় করতে পারেন।
ডিগ্রি ছাড়াও কাজের ক্ষেত্র
কোনো ধরনের ডিগ্রি বা সনদ প্রয়োজন হয় না এমন অনেক প্রযুক্তিগত চাকরি আছে। ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক সাফল্যের জন্য কাজ করতে হবে। ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করতে চাইলে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংসহ গণিতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে বছরে ১ লাখ ২৪ হাজার ডলার বেতন পেতে পারেন।
অন্যদিকে ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করলে গড় বেতন ১ লাখ ২৭ হাজার ডলার পেতে পারেন। ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠানের ডেটা ব্যবস্থাপনা ও বিশ্লেষণমাত্রিক কাজ করতে হয়।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে এখন কাজের অনেক সুযোগ আছে। বিজনেস অ্যানালিস্ট হিসেবে বছরে গড়ে ৮৪ হাজার ডলার বেতন পাওয়ার সুযোগ আছে। সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে বার্ষিক ১ লাখ ৫ হাজার, ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার হিসেবে ১ লাখ ৩১ হাজার ডলার, টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ৯৫ হাজার ডলার পাওয়ার সুযোগ আছে। সাইবার নিরাপত্তা প্রকৌশলী হিসেবে বার্ষিক ১ লাখ ৪৫ হাজার ডলার, টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে ১ লাখ ২১ হাজার ডলার, ইউআই/ইউএক্স আর্কিটেক্ট হিসেবে ১ লাখ ২৩ হাজার ডলার, ইউএক্স ডিজাইনার হিসেবে ১ লাখ ২৬ হাজার ডলার আয়ের সুযোগ আছে। যারা ওয়েব ডেভলপার হতে চান, তাঁরা বছরে ৮০ হাজার ডলার, মোবাইল ডেভেলপার হিসেবে ১ লাখ ২৭ হাজার ডলার পেতে পারেন।
সূত্র: মাল্টিভার্স