বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন

ডাল লেক, কাশ্মীরের হৃদয়

  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৪
 প্রকৃতির এক অপরূপ বিস্ময়। শ্রীনগরের বুকে অবস্থিত এই হ্রদ শুধু কাশ্মীরের সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি কাশ্মীরি সংস্কৃতি ও জীবনের অপরিহার্য অংশ।
ডাল লেককে ঘিরে রয়েছে সবুজ পাহাড়, যেগুলো যেন হ্রদকে মমতায় ঘিরে রেখেছে। এই হ্রদের পানি এত স্বচ্ছ যে পাহাড় ও আকাশের প্রতিফলন স্পষ্টভাবে দেখা যায়। সকালে সূর্যের প্রথম আলো যখন হ্রদের পানিতে পড়ে, তখন চারপাশ এক মায়াবী আভায় মোড়ানো থাকে।
শিকারা নৌকায় ডাল লেকের বুকে ভেসে বেড়ানো একটি স্বপ্নময় অভিজ্ঞতা। নৌকার প্রতিটি ভাঁজে ভ্রমণকারী যেন প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে যায়। এই নৌকাগুলো রঙিন কারুকার্যময়, যা কাশ্মীরের ঐতিহ্যের পরিচায়ক। হ্রদের মাঝে হাউসবোটগুলো ভাসমান স্বর্গের মতো মনে হয়।
ডাল লেকের আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো ভাসমান বাজার। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বিক্রেতারা ফুল, ফল, শাকসবজি, আর হস্তশিল্প নিয়ে ভাসমান নৌকাগুলোতে কেনাবেচা শুরু করেন। এই বাজার যেন জীবনের আরেকটি চিত্র তুলে ধরে।
ডাল লেকের হাউসবোট হলো ভাসমান বাড়ি বা নৌকাবাড়ি, এগুলো কাঠ দিয়ে নির্মিত অত্যন্ত শৈল্পিক ও কারুকাজময় নৌকা, যা পর্যটকদের থাকার জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রাচীনকাল থেকে কাশ্মীরে হাউসবোটের প্রচলন শুরু হয়, যখন ব্রিটিশরা কাশ্মীরের জমি কেনার অনুমতি পায়নি। তাই তারা হ্রদের উপর এই হাউসবোট বানিয়ে বসবাস শুরু করে। সেই থেকেই হাউসবোট কাশ্মীরি সংস্কৃতির অংশ হয়ে ওঠে।
শীতকালে ডাল লেক বরফে জমে গেলে এর সৌন্দর্য এক নতুন রূপ নেয়। বরফে ঢাকা হ্রদ যেন এক নির্জন অথচ মহিমান্বিত চিত্রকর্ম।
ডাল লেক শুধু প্রকৃতির আশীর্বাদ নয়, এটি কাশ্মীরের সংস্কৃতি, জীবনধারা এবং ঐতিহ্যের একটি প্রতীক। এর নিস্তব্ধ সৌন্দর্য মানুষের হৃদয়ে গভীর শান্তি এনে দেয়। ডাল লেকের অপার্থিব রূপ দেখে সত্যিই মনে হয়, এটি স্বর্গের একটি অংশ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com