1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
ট্রেনে ঢাকা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় খুলনা, ভাড়া ৫৫০ টাকা
শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ০৪:৩৪ অপরাহ্ন

ট্রেনে ঢাকা থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় খুলনা, ভাড়া ৫৫০ টাকা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪

পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রথমাংশে সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলছে। আসছে জুলাইয়ে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু করবে।

ফলে এ রুটের দূরত্ব ৩৬৭ কিলোমিটার থেকে কমছে ১৯৫ কিলোমিটার। নতুন দূরত্ব কমে দাঁড়াবে ১৭২ কিলোমিটারে।

এর আগে এ রুটের যাতায়াতে ট্রেনগুলোর সময় লাগতো কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা।

আর এখন পরিবর্তিত সময়ে ঢাকা থেকে যশোর যেতে লাগবে সোয়া ২ ঘণ্টা এবং ঢাকা থেকে খুলনা ও ঢাকা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত যেতে লাগবে তিন ঘণ্টা সময়।

একইসঙ্গে বর্তমানে ঢাকা-খুলনা রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস, বেনাপোলগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে নতুন রুটে চলাচল করবে। একইসঙ্গে আরও একটি নতুন রেক( ট্রেন বডি) এ রুটে যুক্ত হবে।

এই চারটি রেক (ট্রেন বডি) দিয়ে মোট ৮ জোড়া ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এর মধ্যে ঢাকা-যশোর-খুলনা রুটে চারটি, ঢাকা-ফরিদপুর-দর্শনা রুটে দুইটি, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-গোবরা রুটে একটি এবং ঢাকা-বেনাপোল রুটে একটি ট্রেন চলাচল করবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সদরদপ্তরে পাঠানো রেলওয়ে (পশ্চিমাঞ্চল) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, খুলনা-ঢাকা রুটে প্রথম ট্রেনটি খুলনা থেকে ৬টায় ছেড়ে ঢাকায় আসবে সকাল ৯ টায় এবং ট্রেনটি সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়ে পৌঁছাবে দুপুর সাড়ে ১২টায়।

অন্যদিকে ঢাকা-খুলনা রুটে প্রথম ট্রেনটি ঢাকা থেকে ৬টায় ছেড়ে খুলনায় আসবে সকাল ৯টায় এবং ট্রেনটি সকাল সাড়ে ৯ টায় খুলনা থেকে ছেড়ে গিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে দুপুর সাড়ে ১২টায়।

খুলনা-ঢাকা রুটে তৃতীয় ট্রেনটি ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়ে পৌঁছাবে বিকাল ৪টায়। আর ফিরতি ট্রেনটি রাত সাড়ে ৭টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়ে পৌঁছাবে সকালে সাড়ে দশটায়।

চতুর্থ ট্রেনটি খুলনা থেকে ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে বিকাল ৩ টা ৩০ মিনিটে।  ঢাকা থেকে দুপুর একটায় ছেড়ে গিয়ে খুলনায় পৌঁছাবে বিকাল ৪ টায়।

আর ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস সকাল ১০ টায় ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গিয়ে পৌঁছাবে দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে এবং বেনাপোল থেকে দুপুর ৩ টায় ছেড়ে গিয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।

ঢাকা-খুলনা রুটের মতো ঢাকা-দর্শনা রুটে ট্রেন থাকছে দুইটি।

ঢাকা-দর্শনা রুটে প্রথম ট্রেনটি দর্শনা থেকে সকাল সাতটায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে ১২টায় এবং ঢাকা থেকে দুপুর ১টায় ছেড়ে দিয়ে দর্শনায় পৌঁছাবে বিকাল ৪টায়।

দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টায় ছেড়ে গিয়ে দর্শনায় পৌঁছাবে ৯টা ৪০ মিনিটে এবং দর্শনা থেকে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে পরদিন সকাল ৫ টায়।

আর ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের গোবরা রুটের ট্রেনটি সকাল ৬টায় ছেড়ে এসে ঢাকায় পৌঁছাবে সকাল সাড়ে আটটায়। আর ঢাকা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় ছেড়ে গিয়ে রাত সাড়ে ৮টায় গোপালগঞ্জে পৌঁছাবে।

এই ট্রেনগুলোর জন্যে যশোরের পদ্মবিলা স্টেশন থেকে কোটচাঁদপুর, কোটচাঁদপুর-যশোর, পদ্মবিলা-খুলনা রুটে শাটল ট্রেনের মাধ্যমে অন্য এলাকার যাত্রীদের সুবিধা দিবে রেলওয়ে।

যা ভাড়া নির্ধারণ করছে রেলওয়ে

ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন পর্যন্ত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। এ রেলপথের জন্য ভাড়া নির্ধারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে।

প্রস্তাবনায় ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে মেইল ট্রেনে ১২০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ১৪৫ টাকা, আন্তঃনগর ট্রেনের শোভন চেয়ারে ৩৫০ টাকা, এসি চেয়ার ৬৬৭ টাকা, এসি সিট ৮০৫ টাকা ও এসি বার্থ ১২০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

রেল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, ট্রেনের ভাড়া বাড়ার পেছনে প্রধান দুটি বিষয় উঠে এসেছে। একটি পদ্মা সেতু অপরটি গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথ।

এই পথের জন্য অতিরিক্ত পথ যোগ করে ভাড়া বেশি ধরা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতুকে ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

অন্যদিকে গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। প্রায় ২৩ কিলোমিটার উড়ালপথকে ১১৫ কিলোমিটার রেলপথ ধরা হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালসেতুর জন্যে দূরত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫৩ কিলোমিটার।

অন্যদিকে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলওয়ের দূরত্ব ৯৪ কিলোমিটার। কিন্তু মধুমতী সেতু থাকায় সেখানে ২৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত দূরত্ব ধরা হবে।

এজন্য প্রকৃত দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ের হিসেবে ঢাকা-যশোর রুটের দূরত্ব ৪৩৫ কিলোমিটার। সে অনুযায়ী ভাড়া হতে যাচ্ছে ৫০০ টাকা।

একইসঙ্গে যশোর থেকে খুলনার দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার বেশি হওয়ায় ঢাকা-খুলনা ভাড়া হবে ৫৫০ টাকা।

বর্তমানে দেশে লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তঃনগর— এই চার ধরনের ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ট্রেনের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩৯ পয়সা আর আন্তঃনগর ট্রেনের ভাড়া নন-এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ১৭ পয়সা। আর কিলোমিটার প্রতি এসি শ্রেণির ভিত্তি ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা।

ভাড়ার বিষয়ে রেল সচিব হুমায়ুন কবীর বলেন, এই রুটে পদ্মা সেতু আছে। অনেকগুলো ভায়াডাক্ট আছে। পদ্মা সেতুর জন্য আলাদা করে কিলোমিটার হিসেব করে ভাড়া ধরা হয়। তাই সবমিলিয়ে ভাড়া ঠিক করা হচ্ছে। যাত্রীরা স্বল্প খরচে যেতে পারবে। সময় কম লাগবে।

প্রসঙ্গত, নতুন এ রেলপথ গত বছরের ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর ২০ দিন পরে ১ নভেম্বর থেকে এ রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মিত হচ্ছে।

এরমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা-মাওয়া ৪০ কি.মি. ও  মাওয়া-ভাঙ্গা ৪২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধন করা হবে। এদিকে প্রকল্পের তৃতীয় অংশ ভাঙ্গা-যশোর ৮৭ কি.মি. রেললাইন নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে। এ অংশের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮ ভাগ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com