আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘ট্রাইব্যুনাল ইজ রেডি, এবার আসো খেলা হবে!’
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ নিয়ে একটি পোস্ট দেন মাসুদ সাঈদী। এতে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের ছবিও শেয়ার করেন।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘খুনি হাসিনার বানানো আইনে আর তারই বানানো ট্রাইব্যুনালে হাসিনা আর তার দোসরদের বিচার হবে- ইনশাআল্লাহ। এই দিনটি দেখার জন্য মহান রবের দরবারে অজস্রবার চোখের পানি ফেলেছি। এখন স্বপ্ন পূরণে এই তো- আর মাত্র কিছুদিনের অপেক্ষা।’
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ট্রাইব্যুনালে বাকি দুজন সদস্য হলেন: বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদার ও শফিউল আলম মাহমুদকে ছয় দিন আগে হাইকোর্টের বিচারক করা হয়। আইন মন্ত্রণালয় সেদিন ২৩ জনকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরদিন তারা শপথ নেন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে এ আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালেও পরিবর্তন এসেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এ ট্রাইব্যুনালে বিচারে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু দণ্ডাদেশ পেয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। গত বছরের ১৪ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার চার ছেলে। বড় ছেলে রাফিক বিন সাঈদী মারা গেছেন। আরেক ছেলে শামীম সাঈদী আমেরিকায় আছেন। ছোট ছেলে নাসিম সাঈদী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী। সাঈদীর ছেলেদের মধ্যে শুধু মাসুদ সাঈদী বর্তমানে দেশে আছেন।
Like this:
Like Loading...