আমাদের সবারই কমবেশি স্বপ্ন থাকে উচ্চমাধ্যমিকের পর উন্নত দেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে বিদেশে উচ্চশিক্ষার এই স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। বিদেশে উচ্চশিক্ষার কথা শুনলে প্রথমেই যে প্রশ্নটি আমাদের মাথায় ঘুরপাক খায়, সেটি হলো কোন দেশে সাধ্যের ভেতর উচ্চশিক্ষা লাভ করা সম্ভব। অনেকের আগ্রহ থাকে নরওয়ে, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো দেশের প্রতি।
উচ্চশিক্ষার কেউ কেউ বৃত্তি পেয়ে পাড়ি জমান। কম খরচে দেশের বাইরে পড়তে যেতে চাইলে নানা বিষয়ের চিন্তা করেই এগোতে হয়। এশিয়া ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ বিদেশিদের কম খরচে পড়ার সুযোগ দেয়। যাঁরা বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চান, তাঁদের জন্য টিউশন ফি ছাড়াই বিশ্বের পাঁচ দেশে পড়তে যাওয়ার সুযোগ আছে।
জার্মানি
বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিবেচনায় সম্ভবত সবচেয়ে এগিয়ে জার্মানি। অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দেশ জার্মানি। যদিও দেশটি মন্দা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। দেশটির অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু প্রশাসনিক ফি নেয়, কিন্তু কোনো টিউশন ফি নেয় না।
সাধারণত জার্মানিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একজন বিদেশি শিক্ষার্থীর সেমিস্টার প্রতি ৩১৫ থেকে ৫৩০ ডলার খরচ হবে। প্রতি মাসে থাকা-খাওয়ার অর্থাৎ জীবনযাত্রার ব্যয় পড়বে ৯৫০ ডলারের মতো। স্নাতক করার পর ১৮ মাসের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ওয়র্ক ভিসা মেলে এখানে। এমনকি এখানে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফিই নেই।
চেক প্রজাতন্ত্র
ইউরোপের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ চেক প্রজাতন্ত্র। দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি ছাড়াই পড়াশোনা করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত মানতে হবে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। তাঁদের চেক ভাষায় কথা বলতে জানতে হবে বা চেক প্রজাতন্ত্রের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিগ্রির জন্য ভর্তি হতে হবে।
নরওয়ে
স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ নরওয়ে। নরওয়ে দিনে দিনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কারণ এখানকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি দিতে হবে না আপনাকে। তবে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত নয় এমন দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের থেকে টিউশন ফি নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। কোনো কোনো বিষয়ের খরচ সে ক্ষেত্রে ১৩ হাজার ডলারের মতো পড়তে পারে। এখানে মাসিক জীবনযাত্রার ব্যয় ৭৩৫ থেকে ৯৫০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
শিক্ষার্থীরা এখানে পড়ালেখার পাশাপাশি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পান। স্নাতক শেষের পর এক বছরের ওয়র্ক ভিসা বা কাজের ভিসা পান। নামমাত্র প্রশাসনিক ফি দিয়েই পড়াশোনা করতে পারবেন দেশটিতে।
সুইডেন
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এলাকায় মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কোনো টিউশন ফি দিতে হয় না। এ ছাড়া সুইডেনে বিদেশি সব শিক্ষার্থী বিনা ফিতে পিএইচডি করতে পারেন।
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার খরচ নেই। বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার। অপরদিকে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ ৩৫০ ডলারের আশপাশে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেন।