মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৫ পূর্বাহ্ন

জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪

জেদ্দা কিং আব্দুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (King Abdulaziz International Airport – KAIA) সৌদি আরবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম বিমানবন্দর। মক্কা এবং মদিনার নিকটে অবস্থিত হওয়ায় এটি প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী, পর্যটক এবং ব্যবসায়ীদের আগমনের জন্য একটি প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে হজ এবং ওমরাহর সময় এই বিমানবন্দরটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসলিমদের স্বাগত জানায়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও পরিবহন

জেদ্দা শহরের উত্তরে অবস্থিত কিং আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি (KAIA) সৌদি আরবের প্রধান সমুদ্রবন্দর শহর জেদ্দার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বিমানবন্দরটি মক্কা থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে এবং এটি বিশেষভাবে হজযাত্রীদের সেবার জন্য উন্নত করা হয়েছে।

ইতিহাস ও প্রতিষ্ঠা

১৯৮১ সালে কিং আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি উদ্বোধন করা হয়। এটি বর্তমানে সৌদি আরবের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি। মূলত পবিত্র শহর মক্কা এবং মদিনায় তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের সুবিধার্থে এই বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে এটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে উন্নততর পরিষেবা দিতে সক্ষম হয়েছে।

হজ টার্মিনাল

জেদ্দা বিমানবন্দরের হজ টার্মিনালটি বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর টার্মিনালগুলোর একটি। প্রতি বছর প্রায় লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এই টার্মিনালের মাধ্যমে সৌদি আরবে আসেন। এটি প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এবং এতে একসঙ্গে লাখের বেশি তীর্থযাত্রীকে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে মসজিদ, হোটেল, এবং বিভিন্ন সুবিধাসহ একটি ছোট শহরের মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

টার্মিনাল ব্যবস্থা ও সুবিধাসমূহ

কিং আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি প্রধান টার্মিনাল রয়েছে:

  1. উত্তর টার্মিনাল: আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ওঠা-নামা করে।
  2. দক্ষিণ টার্মিনাল: এটি সৌদি আরবিয়ান এয়ারলাইনস এবং এর সহযোগী এয়ারলাইনগুলোর জন্য বিশেষভাবে নির্ধারিত।
  3. হজ টার্মিনাল: বিশেষ করে হজ এবং ওমরাহ যাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা হজ মৌসুমে অতিরিক্ত যাত্রীদের জন্য বিশাল পরিসরে সেবা প্রদান করে।

আধুনিক স্থাপত্য ও প্রযুক্তি

জেদ্দা এয়ারপোর্টে আধুনিক স্থাপত্য এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীদের সেবায় উচ্চমানের সেবা প্রদান করা হয়। টার্মিনালগুলোতে স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কিয়স্ক, লাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, এবং দ্রুত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা রয়েছে।

খাদ্য ও কেনাকাটা

বিমানবন্দরের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় খাবারের দোকান রয়েছে। এছাড়া, ডিউটি-ফ্রি শপিংয়ের জন্য এখানে রয়েছে বিশাল আকারের মার্কেট যেখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার সুযোগ রয়েছে।

পরিবহন ব্যবস্থা

বিমানবন্দর থেকে শহরের কেন্দ্রে এবং মক্কার দিকে যাওয়ার জন্য উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। ট্যাক্সি, বাস, এবং প্রাইভেট রাইড শেয়ারিং অপশন রয়েছে, যা তীর্থযাত্রী এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক।

ভবিষ্যতের উন্নয়ন পরিকল্পনা

‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার আওতায় জেদ্দা এয়ারপোর্টের আরো উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন অবকাঠামো ও প্রযুক্তির সংযোজন করার কাজ চলছে। সৌদি আরবের লক্ষ্য হচ্ছে এই বিমানবন্দরকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান বিমানবন্দরগুলোর একটিতে রূপান্তরিত করা।

উপসংহার

কিং আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সৌদি আরবের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, যা শুধু যাত্রী পরিবহনের জন্য নয় বরং দেশটির ঐতিহ্য, আধুনিকতা, এবং ধর্মীয় দায়িত্ব পালনেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আধুনিক প্রযুক্তি, বিশাল পরিসরের সুবিধা এবং আন্তরিক পরিষেবা নিয়ে এই বিমানবন্দরটি প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ মানুষের অভিজ্ঞতায় সৌদি আরবকে পরিচিত করাচ্ছে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com