দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামে জার্মান ভাষা শেখার আগ্রহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে৷ বিশেষ করে করোনা মহামারির বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর, এই ভাষাটি শেখার প্রবণতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে৷ এ কথা জানিয়েছেন দেশটির হো চি মিন শহরের গ্যোটে ইনস্টিটিউটের ভাষা বিভাগের প্রধান আরিক ইয়ান৷
২০১৯ সারে পর থেকে গ্যোটে ইনস্টিটিউটের ভাষা পরীক্ষার সংখ্যা দেড়শ ভাগ বেড়েছে৷ শিগগিরই এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানালেন তিনি৷
শুধু ভিয়েতনাম নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই বাড়ছে জার্মান ভাষার কদর৷ অনেকেই রপ্ত করার চেষ্টা করছেন ভাষাটি৷ এর মূল কারণ হলো, জার্মানিতে অভিবাসনের সুযোগ পাওয়া৷
এক পরিসংখ্যান বলছে, জার্মানির স্বাস্থ্যখাতে এই মুহূর্তে দেড় লাখ নার্স প্রয়োজন৷ এই ঘাটতি পূরণে সরকার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনসের দিকে নজর দিচ্ছে৷ এই প্রক্ষাপটেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর নাগরিকদের মধ্যে যারা অভিবাসনে ইচ্ছুক তাদের মধ্যে জার্মান ভাষা শেখার আগ্রহ বাড়ছে৷
জার্মান সরকারের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মালয়েশিয়াতে ১৫ হাজার এবং ভিয়েতনামে এই মুহূর্তে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ জার্মান ভাষাটি রপ্ত করার চেষ্টা করছেন৷
সরকারের ফেডারেল ফরেন অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, ভাষা শেখার মাধ্যমে মানুষ জার্মানি সম্পর্কে, দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারে৷ তাছাড়া, আমরা তাদেরকে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যেখানে রয়েছে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ছড়াছড়ি সেখানেও প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছি৷
শ্রম ঘাটতি পূরণ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের লোকেদের এভাবে জার্মানি ভাষা শেখার মুল কারণ হচ্ছে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে চাকরির সুযোগ নেয়া৷
গত বছরের নভেম্বরে জার্মান সরকার ইমিগ্রেশন আইনে পরিবর্তন আনে, যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা দক্ষকর্মীদের জার্মানিতে আসা সহজ করা হয়েছে৷
তার আগে জার্মান শ্রমমন্ত্রী হুব্যার্টুস হেইল বলেন, ‘‘আমরা যদি অভিবাসন বাড়ানোর চেষ্টা না করি তাহলে ২০৩৫ সালের মধ্যে জার্মানিতে ৭০ লাখ কর্মীর ঘাটতি তৈরি হবে৷’’
আছে পড়াশোনার সুযোগও
জার্মান ভাষা শেখা মানে শুধুই চাকরির জন্য প্রার্থী হতে পারা বিষয়টি এমন নয়৷
মালয়েশিয়ার পেনংয়ের মালয়েশিয়া-জার্মান সোসাইটির রুডি হ্যারমান বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে চায়৷’’
জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস (ডিএএডি) জানায়, গত বছর শীতকালীন সেমিস্টারে বিভিন্ন দেশ থেকে তিন লাখ ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী জার্মানির বিশ্বিবিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে৷
তাছাড়া অনেকেই আছেন যারা জার্মান সরকারের ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশ নিতে চান৷ এর মাধ্যমে তারা একই সাথে পড়াশোনা এবং দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ পায়৷
আবার সবাই যে চাকরি বা পড়াশোনার জন্য জার্মান ভাষা শিখছে বিষয়টি এমন নয়৷ হ্যারমান বলে, ‘‘কিছু কিছু শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত আগ্রহ থেকে জার্মান ভাষা শিখছেন৷’’