জর্ডানের একটি পোশাক কারখানায় অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ছাঁটাই হওয়া ৪৫৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক তাদের পাওনা বুঝে পেয়েছেন, প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশে ফেরার।
মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে ‘আছিল গার্মেন্টস’ নামে একটি কারখানায় কাজ করতেন তারা। করোনাভাইরাস মহামারী পরবর্তী কয়েক বছর ধরে ব্যবসায় লোকসান ও নানা রকম অনিয়ম-দুর্নীতির মাঝে গত বছর ডিসেম্বরে কর্মী ছাঁটাই ঘোষণা করে পোশাক কারখানাটি।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার আম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তায় ছাঁটাই হওয়া বাংলাদেশিসহ সব শ্রমিককে বকেয়া বেতন ও অর্জিত ছুটি বাবদ প্রায় ২.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সামাজিক নিরাপত্তার পুরো অর্থ পরিশোধ করে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার দূতাবাসের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়, সপ্তাহখানেকের মধ্যেই তাদের বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হবে।
দূতাবাসের প্রথম শ্রম সচিব উম্মে সালমা বলেন, “দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কয়েক ধাপে আলোচনায় বসেছে দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। প্রতি মাসেই একাধিকবার আছিল গার্মেন্টস পরিদর্শন ও নিয়মিত খোঁজ নিয়েছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দাওয়া আদায়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে শুরু থেকেই জানানো হয়েছে।
“অবশেষে আমরা সফল হয়েছি। জর্ডান শ্রম মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ট্রেড ইউনিয়নসহ যেসব সংস্থা ও কোম্পানি এই সমস্যা সমাধানে দূতাবাসকে সহযোগিতা করেছে তাদের সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
আছিল গার্মেন্টসের মেশিন অপারেটর মো. মোতাহার বলেন, “আমি ৬ মাসের বকেয়া বেতনসহ ৫ বছরের লিভের টাকা পেয়েছি। গতকাল সোশ্যাল সিকিউরিটির টাকাও পেয়েছি। আমাদের সব দাবি-দাওয়া পূরণ হয়েছে। এজন্য আমি বাংলাদেশ দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানাই।”
আরেক বাংলাদেশি পোশাক কর্মী কারিমা আকতার বলেন, “আমাদের অনেকের পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল না। কারো কারো পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছিল। দূতাবাস একদিনেই আমাদের দেশে ফেরার জন্য দরকারি কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।”
আগামী শনিবার থেকে শ্রমিকদের বাংলাদেশে পাঠানো শুরু হবে এবং তাদের বিমান টিকিট জর্ডানের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহ করা হবে বলে জানান শ্রম সচিব উম্মে সালমা।