জন্মহার বাড়াতে নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও চীনে ২০২৪ সালে বিয়ের সংখ্যা এক-পঞ্চমাংশ কমে গেছে। এটিকে দেশটির চলমান জনসংখ্যাগত সংকটের সর্বশেষ ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৬১ লাখ দম্পতি বিয়ে নিবন্ধন করেছেন, যা ২০২৩ সালের ৭৭ লাখের তুলনায় ২০.৫ শতাংশ কম।
বয়স্ক জনগোষ্ঠীর চাপ বাড়ছে
এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন চীনা কর্তৃপক্ষের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। কেননা দেশটি দীর্ঘদিন ধরে বিশাল কর্মশক্তির ওপর নির্ভর করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে।
বিয়ে কমার কারণ ও প্রভাব
বেইজিং পরিবার গঠনে উৎসাহিত করতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা ধরনের প্রচারণা চালিয়েছে, যার মধ্যে বিভিন্ন ভর্তুকি এবং সন্তান নিতে উৎসাহিত করা সম্পর্কিত বার্তা রয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উচ্চ ব্যয় – বিশেষ করে শিক্ষা ও শিশুর দেখভালের খরচ এবং নতুন গ্র্যাজুয়েটদের জন্য কঠিন কর্মসংস্থান বাজার বিয়ে ও সন্তান নেওয়ার ইচ্ছাকে নিরুৎসাহিত করছে।
চীনের জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট ওয়েইবোতে এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘যদি আমি বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর না করি, তাহলে বাড়ি কেনার সামর্থ্য হবে না। আর বিয়েও অনেক বড় খরচ।’
আরেকজন লিখেছেন, ‘এই বছর হঠাৎ বুঝতে পারলাম, একা থাকাও মন্দ নয়। চাপ কম, নিজের উপার্জন নিজেই ব্যয় করতে পারি।’
এক সন্তান নীতি থেকে তিন সন্তান নীতি
১৯৮০-এর দশকে চীন অতিরিক্ত জনসংখ্যার আশঙ্কায় কঠোর ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করেছিল, যা ২০১৬ সালে বাতিল করা হয়। ২০২১ সালে সরকার দম্পতিদের তিনটি সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। তবে এর আগেই দেশটির জনসংখ্যা সংকটের লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।
অর্থনীতিতে প্রভাব
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে বিয়ের হার কমে যাওয়ার ফলে আগামী বছরগুলোতে পেনশন ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্য খাতের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে।
এ পরিস্থিতির মোকাবিলায় চীন গত সেপ্টেম্বরে বহুল প্রতীক্ষিত এক ঘোষণা দেয়। যেখানে জানানো হয়, দেশটি পর্যায়ক্রমে অবসরের বয়সসীমা বাড়াবে। বর্তমানে দেশটির অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর, যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম।