শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ছোট্ট সুন্দর দেশ ভ্যাটিকান সিটি

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩০ জুলাই, ২০২১

আমাদের এই পৃথিবীতে কতই না অজানা তথ্য আছে। ছোট বড়ো দেশের নানা ঘটনা আমাদের চোখে পরে প্রতিনিয়ত। সাধারণত বড় সব কিছুই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সহজে। তাই বলে কি ছোট সব কিছুই চাপা পড়ে থাকবে? তা কিন্তু নয়।

পৃথিবীর সব চেয়ে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটি। যা ইতালির রোম শহরের মধ্যে আরেকটি দেশ। এই দেশের আয়তন হচ্ছে ১১০ একর। আর ছোট্ট এই দেশটিতে জনসংখা হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ এর মতো। এই দেশে মূলত স্থানীয় জনসংখ্যার চেয়ে পর্যটকই বেশি। ভ্রমণপিপাসুদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত এই ভ্যাটিকান সিটি। জনসংখ্যার তুলনায় এখানে টুরিস্ট বেশি আসে। প্রতি বছর এ শহরে ভ্রমণ করতে আসে সাড়ে পাঁচ মিলিয়ন মানুষ। কারণ ধর্মীয়, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক দিক থেকে ভ্যাটিক্যান সিটি বেশ সমৃদ্ধিশালী। দেশটির মূল আয় আসে এই পর্যটকদের মধ্যে থেকেই।

ভ্যাটিকান সিটি সবসময় থাকে শান্ত; এর চারপাশে বিরাজ করে সুনসান নীরবতা, দেশটিতে কোনো রমণী বসবাস করে না বলেই ধরে নেয়া হয়। যারা ভ্যাটিকান সিটিতে বসবাস করে সবাই ক্যাথলিক পোপ। তারা সারা পৃথিবীতে খ্রিস্টধর্মের শান্তির বার্তা প্রচার করেন। প্রথম শতাব্দী থেকেই ভ্যাটিকান সিটিতে খ্রিস্টধর্মের সাধু বা পোপরা বসবাস শুরু করেন। তখন ভ্যাটিকান সিটি স্বাধীন-সার্বভৌম কোনো রাষ্ট্র ছিল না। শুধু ইতালির অধীনে ছোট শহর বলে পরিচিত ছিল। ১৯২৯ সালে ভ্যাটিকান সিটি স্বাধীনতা লাভ করেছিল। সাধারণ জনগণ ইতালি ও ল্যাটিন উভয় ভাষাই ব্যবহার করে। দেশটির সাক্ষরতার হার ৯৯.২%। বার্ষিক গড় আয় ১৬০০ মার্কিন ডলার। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, ভ্যাটিকান সিটির যেসব নাগরিক বৃদ্ধ হয়ে যায় তাদের ইতালিতে প্রেরণ করা হয় বাকি জীবন অতিবাহিত করার জন্য। আর এতে বৃদ্ধদের পরিবর্তে আনা হয় তরুণ সাধু-সন্ন্যাসীদের। প্রথম শতক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ পোপ এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন। তবে অন্যান্য দেশের মতো এখানেও রয়েছে সরকার পদ্ধতি মন্ত্রী-এমপি, যারা সুন্দর ও সুচারুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ভ্যাটিকান সিটির চতুর্দিকে শুধু সবুজ আর সবুজ, নানা গাছ-গাছালিতে এই ছোট্ট রাষ্ট্রটি পরিবেষ্টিত।

বিশ্বের নানা প্রান্তের শতকোটি ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিক নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখে ছোট্ট এই ভূখণ্ডটিকে। কেনোই বা রাখবেন না এখানেই তো বাস করেন তাদের ধর্মের জীবিত সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি পোপ। যার বাণী বিশ্বাসীদের কাছে তাদের ঈশ্বরের বাণীর মতোই পবিত্র।

তাছাড়া ভ্যাটিকান সিটি ব্যাঙ্কে দুনিয়ার তাবৎ গির্জার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে বলেই শোনা যায়। শুধুই কি তাই, পৃথিবীর সবচেয়ে সংরক্ষিত আর্কাইভটিও তো এখানেই।

হাজার বছরের পুরোনো দলিল, বই, ছাপা না হওয়া বাইবেল, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির হাতে লেখা ডায়েরি, গ্যালিলিও এর বই – কি নেই এই সংগ্রহশালায়!

তবে সেখানে ঢোকার জন্য অবশ্য অনুমতির প্রয়োজন হয়। সর্বসাধারণের জন্য এটি নয়। কি ক্ষমতাধর ছোট্ট একটি দেশ!

সারা বিশ্বের অন্যতম পবিত্র স্থান বলে ঘোষিত ভ্যাটিকান সিটিকে ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান’ হিসেবে ঘোষণা করে। বর্তমানে রাষ্ট্রটি খ্রিস্টান ধর্মের অন্যতম প্রধান স্থান হিসেবে বিবেচিত। সেই সাথে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট্ট সুন্দর দেখার খেতাবও অর্জন করেছে ভ্যাটিকান সিটি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com