ছুটির দিনে বেড়া প্রেস ক্লাবের বার্ষিক বনভোজনের আয়োজনে ছুটে গিয়েছিলাম নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রিন ভ্যাল পার্কে। অন্যান্য পার্ক থেকে এটি অনেকটাই ভিন্ন ও একটি চমৎকার বিনোদন কেন্দ্র। ভেতরে ঢোকার পরেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
গরমের তীব্র খরতাপে যখন সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা, তখন এই পার্কের ভেতরে ঢুকেই প্রচুর চেনা-অচেনা গাছপালায় ঘেরা নয়নাভিরাম পরিবেশে মুগ্ধ হলাম। প্রায় ১২৩ বিঘা জায়গার উপর নির্মিত এই পার্ক। সব বয়সী দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় রাইড আছে সেখানে।
আছে মিনি ট্রেন, বুলেট ট্রেন, নাগরদোলা, ম্যারিগো রাউন্ড, পাইরেট শিপ, হানি সুইং, স্পিডবোট, প্যাডেল বোট প্রভৃতি। এছাড়া এই পার্কের প্রায় ৩০ একর জায়গাজুড়ে একটি নয়নাভিরাম লেকও আছে। সেখানে সব সময়ই দর্শনার্থীরা হৈ-চৈ করে পার্কটি মাতিয়ে রাখছে। স্পিডবোটে ঘুরছে।
এই পার্কে আরও আছে ফ্লাওয়ার ভ্যালি অর্থাৎ ফুলের বাগান। নাম না জানা কত দেশি-বিদেশি ফুল ফুটে আছে। এছাড়া পার্কটির চারদিকেও অসংখ্য ফুল গাছ আছে।
দু’পাশে আছে জারুল ফুল। ফুলের ভারে নত হয়ে পর্যটকদের অভিবাদন জানাচ্ছে গাছগুলো। আছে হরেক রকমের পাখি, উট পাখি, হরিণ, সাদা মহিষ,ইমু পাখি, ময়ূরসহ আরও নানা ধরনের প্রাণী ও পাখি, যা দেখে শিশু-কিশোরদের বিনোদন পূর্ণ হতে বাধ্য।
এছাড়া গ্রিন ভ্যালি পার্কের অন্যান্য সুযোগ সুবিধার মধ্যে আছে শ্যুটিং স্পট, পিকনিক স্পট, এ্যাডভেঞ্চার রাইডস, কনসার্ট এন্ড প্লে গ্রাউন্ড, সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, নামাজের স্থান, ডেকোরেটর, কার পার্কিং, ক্যাফেটেরিয়া, শপ, সভা-সেমিনারের স্থান ও আবাসিক ব্যবস্থা।
জনপ্রতি ৫০ টাকার টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয়। পার্কটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ফেরার সময় সুযোগ থাকলে নামতে পারেন দেশের গর্ব পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
একই সঙ্গে পাকশী রেল সেতু ও লালন শাহ সেতুও দেখতে পারেন। সময় থাকলে পদ্মায় গোসল পর্বও সেরে নিতে পারেন। অর্থাৎ এক ঢিলে তিন পাখি। কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক সব মিলিয়ে ছুটির দিনটি ভালোই কাটবে।