ইনস্টাগ্রামে কোপেনহেগেন দেখতে এ রকম লাগে? বাস্তবেও কি তাই? সেখানে গিয়ে নিজে পরখ করে দেখলেই হয়। ডেনমার্কের রাজধানী শহর স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটির সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও বটে।
কোপেনহেগেনের জনসংখ্যা সাড়ে ছয় লাখের মতো। শহরের তিনটি জনপ্রিয় জায়গা বেছে নিয়ে দেখা যাক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুন্দর ছবিগুলির সঙ্গে বাস্তবের সত্যি কতটা মিল রয়েছে। কোপেনহেগেন ভ্রমণ করলে ন্যুহাউনে ছবি তোলাতেই হয়। সুন্দর এই বন্দর এলাকা পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। তাই মানুষের ভিড় দেখে বিস্ময়ের কোনো কারণ নেই।
সেখানকার অসংখ্য রেস্তোরাঁর মধ্যে একটিতে ঢুঁ মারা বা রঙিন বাড়ির সামনে বসে থাকার আনন্দই আলাদা। ডেনমার্কের জাতীয় কবি হান্স ক্রিস্টিয়ান আন্ডাসনও প্রায় ২০০ বছর আগে সেখানে কয়েকটি বিখ্যাত রূপকথার কাহিনী লিখেছিলেন। ন্যুহাউনে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু এমন অপরূপ সুন্দর জায়গা থেকে কে আর দূরে থাকতে চায়!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আরেকটি আকর্ষণ হলো রোজেনবর্গ প্রাসাদ। সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুতে তৈরি এই প্রাসাদ কিন্তু রাজপরিবারের প্রধান বাসভবন নয়। সেটি তাদের গ্রীষ্মকালীন আবাস। প্রায় ২০০ বছর ধরে ছোট এই প্রাসাদটি মূলত মিউজিয়াম হিসেবেই বেশি পরিচিত। প্রাসাদের “নাইটস হল”-এ তিমির সিং দিয়ে তৈরি রাজার সিংহাসন সত্যি অনবদ্য। প্রাসাদের কোষাগারে মুকুট ও গয়নাগাটি দেখার সুযোগ রয়েছে। প্রাসাদটি বেশ ছোট হলেও শুধু ভবনের ছবি না তুলে প্রদর্শনীও ঘুরে দেখা সার্থক।
করোনাভাইরাস মহামারির আগের বছরে মিউজিয়ামের প্রধান টোমেস টুল্সট্রুপ চার লাখেরও বেশি অতিথিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “এই সংগ্রহের কোনো একটি বস্তুকে ফেভারিট হিসেবে বেছে নেওয়া অসম্ভব। কারণ ডেনমার্কের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও সুন্দর অনেক বস্তু এখানে রয়েছে। আমার ঠিক পেছনে রুপোর তৈরি তিনটি সিংহ দেখতে পাচ্ছেন। সেগুলো এই সংগ্রহে আমার প্রিয় বস্তুগুলোর অন্যতম। খুবই সুন্দর এই সিংহগুলো অতীতে রাজার অভিষেকের সময়ে কাজে লাগানো হতো।”
কোপেনহেগেনের টিভোলি পার্কও পর্যটকদের অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত। করোনাভাইরাস মহামারির আগের বছরে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সেখানে এসেছিলেন। সেখানকার অনেক রাইড দর্শকদের কাছে বড় আকর্ষণ। যেমন ১০০ বছরেরও বেশি পুরানো কাঠের তৈরি রোলার কোস্টার। ১৮৪৩ সালে তৈরি পার্কটির এক অনবদ্য পরিবেশও রয়েছে।
প্রবেশমূল্য প্রায় ২০ ইউরো, অর্থাৎ মোটেই সস্তা নয়। কিন্তু শুধু পরিবেশের খাতিরেই টিভোলিতে প্রবেশ করা উচিত। ইনস্টাগ্রামের ছবিতে যা দেখা যায়, কোপেনহেগেনের তিনটি জায়গা বাস্তবে ঠিক সে রকমই বটে।