চীনের বেইজিং শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বিশ্ব স্বীকৃত এক স্থাপত্য। যা ইম্পেরিয়াল প্যালেস নামে পরিচিত। ১৬৪৪-১৯১২ সালের দিকে মিং রাজবংশ ও কিং রাজবংশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই প্যালেস।
বেইজিংয়ের একটি জেলা ডংচেং জেলায় অবস্থিত প্রাসাদটি ফরবিডেন সিটি বা নিষিদ্ধ শহর হিসেবেই বেশি পরিচিত বিশ্বজুড়ে। প্রাসাদ কমপ্লেক্সটি ১৭৮ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ও এটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
কেন এটি নিষিদ্ধ শহর বলা হয়?
এটি মূলত রাজকীয় এক প্রাসাদ কমপ্লেক্স, যেখানে এককালে চীনের সম্রাট বসবাস করতেন। ফলে সাম্রাজ্যকালীন সময়ে বাইরের কেউই এই নিষিদ্ধ নগরীতে প্রবেশাধিকার পায়নি।
এই কঠোর নিষেধাজ্ঞা শুধু প্রজাদের জন্য ছিল না, একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজপরিবারের সদস্যদেরও প্রাসাদ কমপ্লেক্সের সীমিত এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সম্রাটই একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রাসাদ কমপ্লেক্সের চারপাশে অবাধে ও যে কোনো সময়ে ঘুরে বেড়াতে পারতেন।
ইম্পেরিয়াল প্যালেসটি বিগত পাঁচ শতাব্দী ধরে ক্ষমতার কেন্দ্র হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ জন্যই স্থানটি আজ ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের তকমা পেয়েছে।
নিষিদ্ধ শহর ঐতিহ্যবাহী চীনা প্রাসাদ স্থাপত্যের একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ। এটি প্রায় ১০০০ বিল্ডিং নিয়ে গঠিত, যা এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম ইম্পেরিয়াল প্রাসাদ কমপ্লেক্সে পরিণত করেছে।
ভবনগুলো কাঠের বিম, জটিল খোদাই ও স্বতন্ত্র হলুদ-চকচকে ছাদের টাইলস দিয়ে নির্মিত। এছাড়া মজার বিষয় হলো, নিষিদ্ধ শহরের স্থাপত্য ফেং শুইয়ের ঐতিহ্যবাহী চীনা নীতিগুলিকে প্রতিফলিত করে।
বর্তমানে নিষিদ্ধ এই শহর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। কমপ্লেক্স পরিদর্শন করার সময়, পেইন্টিং, ক্যালিগ্রাফি, সিরামিকস ও ব্রোঞ্জ মূর্তিসহ চীনা শিল্প ও সাংস্কৃতিক প্রত্নবস্তু দেখে যে কারও চোখই হয়ে যাবে ছানাবড়া।
সম্রাটদের ব্যক্তিগত সংগ্রহও আছে সেখানে। প্রাসাদ কমপ্লেক্সটি চীনের বৃহত্তম জাদুঘরগুলোর মধ্যে একটি। চাইনিজ ইতিহাস, শিল্প ও সংস্কৃতিতে আগ্রহী যে কেউই এটি পরিদর্শন করতে পারেন।
সবচেয়ে মুগ্ধ হবেন, বেইজিংয়ের শহরের আলোর ঝলকানি দেখে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বিখ্যাত শহরগুলির মধ্যে একটি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া