সড়ক, অলিগলি, বিপণিবিতান কিংবা বাড়িঘর—যেদিকে তাকান মালয়েশিয়ার চারপাশ এখন লালে লাল! বছর ঘুরে আবারও এসেছে চায়নিজ নিউ ইয়ার। তাই মালয়েশিয়ার প্রতিটি শহর, বিপণিবিতান, অলিগলি ও বাড়িগুলো সেজেছে লাল রঙের চায়নিজ বিশেষ কাপড় ও লাল রঙিন বাতি দিয়ে।
চায়নিজদের নতুন বছর বারোটি প্রাণীর নাম ঘিরে আসে। ইঁদুর, ষাঁড়, বাঘ, খরগোশ, সাপ, ঘোড়া, ভেড়া, মোরগ, কুকুর, ছাগল, ড্রাগন ও শূকর—এগুলো ঘুরে ফিরে একেক বছর চায়নিজ বর্ষপঞ্জিতে স্থান পায়। এবারের বর্ষটি ‘সাপ বর্ষ’ হিসেবে এসেছে। তাই লাল কাপড় ও বাতির সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় সাপের প্রতিকৃতিও শোভা পাচ্ছে।
টিভি, বিলবোর্ড, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপনেও সাপের প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে। চায়নিজ নিউ ইয়ার উপলক্ষ্যে বিপণি-বিতানগুলোতে চলছে বড় অঙ্কের মূল্যহ্রাস। কোথাও ২৫ শতাংশ, আবার কোথাও ৭৫-৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
চন্দ্রবর্ষের প্রথম দিনটিকে চায়নিজরা নববর্ষ হিসেবে পালন করে, যাকে বলা হয় ‘চুন জি’। চীনারা তাদের নিজস্ব বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করায় নতুন বছর শুরু হওয়ার তারিখ প্রতিবছর পরিবর্তন হয়। এ বছর জানুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে চায়নিজ নতুন বছর শুরু হচ্ছে।
চায়নিজ নিউ ইয়ার উদ্যাপন মূলত ক্রিসমাস উৎসব থেকেই শুরু হয়ে যায়। এই উৎসবের ঢেউ শুধু চীনে নয়, ছড়িয়ে পড়ে বহির্বিশ্বে থাকা চায়নিজদের মাঝেও। মালয়েশিয়ায় এই উৎসবের আমেজ আরও বেশি, কারণ এটি মালয়, তামিল ও চায়নিজদের মিশ্র সংস্কৃতির দেশ।
চায়নিজ নিউ ইয়ারে মালয়েশিয়ায় দীর্ঘ ছুটি ও বোনাস দেওয়া হয়। সরকারিভাবে দু’দিন ছুটি থাকলেও চায়নিজ মালিকদের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় এক-দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয় বেতনের সমান বোনাসও।
এ সময়ে মালয়েশিয়া জুড়ে লক্ষ লক্ষ টন কমলা লেবু আমদানি করা হয়। চায়নিজ নিউ ইয়ার উপলক্ষ্যে মোড়ে মোড়ে বসে কমলার স্টল। চায়নিজ সংস্কৃতিতে কমলাকে শুভ লক্ষণের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। চায়নিজ মালিকরা তাদের অধীনে কর্মরত শ্রমিক ও গ্রাহকদের কমলা লেবু ও বিভিন্ন উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ মালয়েশিয়ার প্রতিটি শহর, বিপণিবিতান লাল কাপড় ও চায়নিজ বাতির সৌন্দর্যে সেজে ওঠে। দেখে মনে হয়, এটি যেন কোনো স্বপ্নপুরী। মালয়েশিয়ার চায়নিজদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘চায়নিজ নিউ ইয়ার’ (Gong xi fa cai) ঘিরে উৎসবের আমেজ থাকে চোখে পড়ার মতো।
বিডিপ্রতিদিন