ইসকনকাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশে শুরু হওয়া আলোচনা-সমালোচনা এখন প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রবাহিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা ও কলকাতার কিছু হাসপাতাল। পাশাপাশি, মেডিকেল ভিসা প্রক্রিয়া এখন কিছুটা জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, অনেক রোগী এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের বিকল্প হিসেবে অন্য দেশ খুঁজছেন।
চিকিৎসা খাতে বিদেশে যাওয়া লোকদের মধ্যে প্রায় ৮৫% মানুষ ভারতেই চিকিৎসা নিতে যান। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভারতের তামিলনাড়ুর মতো দূরত্বে অবস্থিত থাইল্যান্ডও একটি জনপ্রিয় বিকল্প হয়ে উঠছে। আজকের আলোচনায়, আমরা জানবো ভারতের বিকল্প হিসেবে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা সেবা কতটা উন্নত।
থাইল্যান্ডে চিকিৎসার খরচ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম, যা সাধারণত ২০-৫০ শতাংশ কম হতে পারে। সাশ্রয়ী চিকিৎসা খরচের কারণে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে আসা পর্যটকরা দেশটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আরো সময় ব্যয় করতে পারেন, এবং এইভাবেই তারা অর্থ সঞ্চয় করতে সক্ষম হন।
থাইল্যান্ডের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অবকাঠামো ক্রমশ উন্নত হচ্ছে, এবং বর্তমানে অনেক হাসপাতাল বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। এদেশের চিকিৎসকরা অত্যন্ত দক্ষ এবং অনেকেরই ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সনদ রয়েছে, যা তাদের পেশাদারিত্বের মান আরও বাড়ায়।
থাইল্যান্ড শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য নয়, বরং পর্যটকদের জন্যও একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্য। দেশের মনোমুগ্ধকর সৈকত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং উন্নত পর্যটন অবকাঠামো থাইল্যান্ডকে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অবকাশস্থল হিসেবে গড়ে তুলেছে। দেশের জনগণের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, সুস্বাদু খাবার এবং অতিথিপরায়ণতা, থাইল্যান্ডকে একটি চমৎকার ভ্রমণ এবং চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এছাড়া, থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নেওয়ার সময় রোগীরা একযোগে মেডিকেল ট্যুরিজমের সুবিধাও উপভোগ করতে পারেন। এতে তাদের স্বাস্থ্যসেবা, বিনোদন এবং পর্যটনের চমৎকার মিশ্রণ লাভ হয়, যা দেশের চিকিৎসা সেবাকে আন্তর্জাতিক মানে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এভাবে, ভারতীয় হাসপাতালগুলির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, থাইল্যান্ডকে চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করতে যাওয়ার কিছু সুবিধা- অসুবিধা
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করার বেশ কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক আলোচনা করা হলো:
সুবিধাসমূহ:
অসুবিধাসমূহ:
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে চিকিৎসা করাতে গেলে এটি একদিকে অত্যাধুনিক সেবা এবং সাশ্রয়ী খরচের সুযোগ প্রদান করে, তবে অন্যদিকে যাত্রার খরচ, ভাষা সমস্যা এবং সময়ের ব্যবধানের মতো কিছু অসুবিধাও রয়েছে। রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজন, আর্থিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।