শপিং ফেষ্টিভাল, বিলাশবহুল হোটেল নিয়ে দুবাই শহর। এখারকার প্রাচুর্যের শহরের রন্দে রন্দে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঐতিহ্য আর আধুনিকতার ছোয়া। এ সিটি উইথ লাক্সারি। তবে বিলাসিতার সাথে আছে এ্যলিগ্যান্স আর ট্র্যাডিশনের ছাপ। মরুভূমির মধ্যে এত প্রান প্রাচুর্যে ভরা হতে পারে তা না দেখলে বুঝতে পারবেন না।
মনোরম সৌন্দর্যে দুবাই যেন আরব্য রজনীর পাতা থেকে উঠে আসা কোন এক রূপকথা। যার পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে মায়াবি সম্মোহনি। চোখ ধাধানো শপিং মল, বিলাসবহুল বাড়ী, গাড়ী, রেস্তোরা, ফ্যাশন হাউজ, বুর্জ আল খলিফা ছাড়াও দেখার আছে অনেক কিছু। ঘুরে আসতে পারেন দুবাই শপিং ফেষ্টিভাল, গেøাবাল ভিলেজ, ডেজার্ট সাফারি। দুবাই যেন সবার জন্য একটি ড্রিম ডেষ্টিনেশন। একরাশ উত্তেজনা নিয়ে বেরিয়ে পড়–ন।
দুবাই সিটি ট্যুর:
দুবাই ঘুরে দেখুন এখানকার ওপেন টপ বাসে, রোলার কোষ্টার রাইড, দুবাই মিউজিয়াম, তৈরী জিনিস আর হাতে বোনা হস্তশিল্প আপনাকে মুগ্ধ করবে।
দুবাইকে বলা হয় সিটি অব গোল্ড। গোল্ড স্যুকের দোকানগুলোতে থরে থরে সাজিয়ে রেখেছে সোনার গহনা। সব এক্সক্লুসিভ গয়না পাবেন এখানে। প্রায় ৩০০ জুয়েলারি সপ আছে এখানে। দুবাই গেলে একবার স্পাইস স্যুকে যেতে ভুলবেন না। সব ধরনের মশলা পাবেন এখানে।
মল অব এ্যমিরেইটসে পাবেন আধুনিকতা ও প্রাচুর্যের ছাপ। এই শপিং মলটির মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম স্কি রিসোর্ট। স্কি দুবাইয়ে রয়েছে ইনভোর পার্ক।
এছাড়া ওয়াফি মল হচ্ছে নামিদামী ব্রান্ডগুলোর জন্য বিখ্যাত। স্যুক অব মদিনাতে জ্যুমেইরা বিখ্যাত হিট পারফরমার্দের জন্য। আরব দেশের শিল্পীদের মিলনমেলা। শিল্পীদের নাচ গান উপভোগ করতে পারেন এখানে। একটু এগুলেই সবচেয়ে সুন্দর দি জুমাইরা মসজিদ চোখে পড়বে। জুমাইরা পাম আইল্যান্ড বেশ রোমান্টিক। এখানে আছে বেশ কিছু রোমান্টিক আইল্যান্ড। হানিমুনের জন্য পারফেক্ট ডেষ্টিনেশন।
এখানে আছে আটলান্টিসরিসোর্টের মতো বিলাশবহুল বিচ হোটেল, ভিলা, ওয়াটার পার্ক, শপিং মল আর স্পা।
বুর্জ আল খলিফা
বুর্জ আল খলিফা পৃথিবীর সবচেয়ে উচু ভবন। ২০০ তলা ভবনের সামনে রয়েছে একটি বিশাল পার্ক। আছে দুবাই লেক, লেসার ফরেস্ট গ্রোউন্ড, ওয়াটার ফিচার ও খোলা জায়গা আর সবুজ বাগান। গ্রাউন্ড ফ্লোরে দুবাই মল। কেনাকাটার স্বর্গরাজ্য।
দ্যা গেøাবাল ভিলেজ:
দ্যা গেøাবাল ভিলেজপর্যটকদের বিনোদন এবং শপিংয়ের স্বর্গরাজ্য। প্রতিটি দোকানেই ডিসকাইন্ট প্যাকেজ পাবেন। এখানে পাবেন ট্যাক্স ফ্রি শপিং এর সুযোগ। এখানে সারা বিশ^ যেন এক ছাদের তলে জড়ো হয়েছে।
অথেনটিক খাবার, নজর কাড়া হস্তশিল্প আর লাইভ পরফরমেন্স সব মিলে পর্যটকদের ভীড়ে সব সময় জম জমাট থাকে জায়গাটি। থ্রিল রইড, ফায়ার ওয়ার্ক, নানা রকম গেমসের ব্যবস্থা আছে এখানে।
বিভিন্ন দেশের রেষ্টুরেন্ট এবং খাবার পাবেন এখানে। আমেরিকান, কান্টিনেন্টাল, আরবি, ভারতীয়, চাইনিজ, থাই সবধরনের খাবার পাবেন এখানে। স্থানীয় শিল্পীদের ব্যালে,ক্যাবারে ডান্স ও নাচগানের মনোরম পারফরমেন্স এখানকার অন্যতম আকর্ষন।
আছে উন্নত লেজার টেকনোলোজির ড্যান্স ফাউন্টেইন। আফ্রিকার ফোক ড্যান্স থেকে আরবের ব্যালে ড্যান্স। চিনের লাইভ শো থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান শো। এখানে সারা বছর লেগে থাকে কোনো না কোনো দেশের ট্রেডফেয়ার লেগে থাকে। সবদেশের ফ্লেবার পাবেন এখানে।
ডেজার্ট সাফারি
কখনো কি আপনি ভেবেছেন মরুভূমির মধ্যে ধুলো উড়িয়ে গাড়ী চালানোর কথা। ডেজার্ট সাফারি এখানে খুবই জনপ্রিয়।
বাইক বা ক্যাসেল রাইড অ্যান্ড স্কিয়িং স্থানীয়দের খুবই প্রিয়। বিভিন্ন ক্যাম্পে আরব সুন্দরীদের লাস্যময়ী ড্যান্সে ড্যান্সের সাথে স্পেশাল আরব কফি। ক্যাম্প সাইটে মরুভূমিতে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে আপনার ভালই লাগবে। উপভোগ করতে পারবেন বারবিকিউ ডিনার। রাতের দুবাইকে ক্যামেরায় ধরে রাখতে ভুলবেন না। ট্রাই করতে পারেন হট ওয়াটার বেলুন এ্যাডভেঞ্চার।
আর যদি পানিতে রোমাঞ্চ অনুভব করতে চান তাহলে যেতে পারেন ওয়াদি ওয়াটার পার্কে।
একান্তে একটি রোমান্টিক সন্ধার জন্য ক্রজ ডিনারের কথা ভাবুন। সমুদ্রের নীল পানিতে ভাসমান রেস্তোরার খাওয়ার আনন্দই আলাদা। নিশি বিলাসে সূরা ও সুন্দরীদের পারফেক্ট কম্বিনেশন উপভোগ করতে পারেন। তবে পাচতারা হোটেলের বা নাইট ক্লাবের নিয়ম মেনে চলুন।
চওড়া পিচের রাস্তা ধরে যেতে পারেন আশ্চর্য পাম জুমেইরা বিচ। দুপাশে গগনচুম্বী সব অট্রালিকা।
সমুদ্রের নীচ দিয়ে সাবসি টানেল দেখতে ভুলবেন না। পাচতারা হোটেল আটলান্টিস খুবই সুন্দর। ঢুকতেই বিশাল এ্যাকুরিয়াম। রংবেরংএর মাছ আপনাকে অবাক করবে।
পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল সাততারা হোটেল বুর্জ আল আরব। হোটেলের উপরে নিজস্ব হ্যালিপ্যাড অবস্থিত। সমুদ্রের মাঝে কৃত্রিম দ্বীপে হোটেল, পানির নিচে আলমানজা রেস্তোরা।
গালফ সাগরে ভাসমান পৃথিবীর সাবচেয়ে উচ্চতম বুর্জ আল আরবকে দূর থেকে দেখে মনে হয় সমুদ্রে পাল তোলা নৌকা ভাসছে।
প্রতিবছর অক্টোবর মাসে গেøাবাল ভিলেজে বিশে^র অন্যতম মেলা হয়। এখানে পৃথিবীর সব দেশ থেকে তাদের পন্য নিয়ে স্টল নেয়। এই মেলা চলে ৬ মাস। এই সময় বেড়াতে গেলে সব দেশের পন্য কিনতে পারবেন। পর্যটকরা এখানে ভীড় করে এবং কেনাকাটায় মেতে উঠে। সঙ্গে চলে দেশ বিদেশের নাচ, গান, অনুষ্ঠান, সার্কাস, ম্যাজিক শো। খুবই উপভোগ্য।
এমিরেটস রোড়ের ধারে দুবাইল্যান্ডের সমুদ্রতীরে বিশাল প্রাঙ্গনে বসে মেলা। থাকে দেশ বিদেশের প্যাভেলিয়ন। এখানে মিলবে হরেক রকমের জামাকাপড়, শাড়ী, গয়না, কাসমেটিকস্ কম্পিউটার, মোবাইল, ল্যাপটপ সবকিছু। এখানে বেড়াতে যাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারী। এই সময় দুবাইয়ের অবহাওয়া থাকে চমৎকার। বিভিন্ন রকম শপিং ফেষ্টিভাল হয় এই সময়। নানা মানের অসংখ্য হোটেল আছে এখানে। আপনার পছন্দমতো হোটেলে থাকতে পারেন।
ঢাকা থেকে বাই এয়ার বিমান, এমিরেটস, ফ্লাই দুবাইতে যেতে পারেন দুবাই।