বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে স্থবির হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব। মানুষের এমন করুণ মৃত্যুর দৃশ্য দেখে হাহাকার বিশ্বময়। দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। প্রায় প্রতিটি দেশেই এ ভাইরাসের ছোবলে একদিকে যেমন মানুষ মারা যাচ্ছে, তেমনি পৃথিবী থেকে ক্রমশ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে দেশগুলো। স্থবিরতা যেন গ্রাস করছে গোটা বিশ্বকে। নিজেকে বাঁচানোর সংগ্রামই যেন এখন একমাত্র কাজ। সর্বত্রই বিরাজ করছে এক অজানা আতঙ্ক। দীর্ঘ সময় ঘরে বন্দি কোটি কোটি মানুষ। সবার প্রার্থনা, দূর হোক এ মহামারি। শিগগিরই এ মহামারি পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে, এ প্রত্যাশা সবার।
কক্সবাজার সৈকতের পর পর্যটকদের মুখে উচ্চারিত হয় হিমছড়ির নাম। দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম ছিমছড়ি। পাহাড়, সমুদ্র ও ঝর্ণার অপূর্ব মিলনমেলা হিমছড়ি। এর সৈকত বেশ সুন্দর, কোনো কোলাহল নেই। ছিমছাম, শান্ত ও সুনসান পরিবেশের এ রকম সৈকত কোথাও নেই।
কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিমছড়ি জাতীয় উদ্যান। এখানে রয়েছে পাহাড়, সমুদ্র ও ঝর্ণার অপূর্ব মিলনমেলা। যা ভ্রমণপিপাসুদের বিমোহিত করে। একপাশে সুবিস্তৃত সৈকত আর অন্যপাশে রয়েছে সবুজ পাহাড়ের সারি।
বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকত কক্সবাজারের দিগন্ত বিস্তৃত সাগর দেখার জন্য এখানে রয়েছে ‘পিক’। পাহাড় থেকে সমুদ্র দেখার শখ যাদের, তাদের কাছে টেনে নেয় হিমছড়ি জাতীয় উদ্যানের ‘টপ হিল’ নামে পরিচিত এই পিক। এই পিকে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে উত্তাল সাগরের ঢেউ, তার তীর ঘেঁষে ঝাউবন, এরই পাশ ধরে পাহাড়ের ভাঁজ দেখে হৃদয় জুড়িয়ে যাবে। পার্কের গেটে ৩০ টাকা মূল্যের টিকেট কেটে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে একটু কষ্ট হয়। তবে ওপরে উঠে এমন শান্ত পরিবেশের দর্শনীয় স্থান আমদের দেশে হয়তো আর নেই।
পাহাড়চূড়ার মাঝখানে আছে হিলটপ রিসোর্ট। পাহাড় থেকে নেমে আরেক পাশে রয়েছে ঝর্ণা। হিমছড়ি পাহাড়ের শীতল পানির ঝর্ণাটি অসাধারণ। বর্ষাকালে এ ঝর্ণার প্রকৃত রূপ দেখা যায়।
এখানে বেশ কয়েকটি ছোট-বড় পাহাড়ি ঝর্ণা রয়েছে। এসব ঝর্ণার পানিপ্রবাহ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে বার্মিজ মার্কেট। সেখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় অনেক কিছু কেনাকাটা করতে পারবেন।
হিমছড়ি যত না সুন্দর, তার চেয়ে সুন্দর ও রোমাঞ্চকর কক্সবাজার থেকে এ সৈকতে যাওয়ার পথটি। এককথায় অসাধারণ, কাব্যিক, স্বপ্নের মতো সুন্দর। এক পাশে বিস্তীর্ণ সমুদ্রের বালুকাবেলা, আরেক পাশে সবুজ পাহাড়ের সারি। মাঝে পিচঢালা মেরিন ড্রাইভ। এমন দৃশ্য সম্ভবত দেশের আর কোথাও পাওয়া যাবে না। কেউ কক্সবাজার গেল অথচ এই পথ ধরে ছুটলে না, তার পুরো ভ্রমণই মাটি।
যেভাবে যাবেন : ঢাকা বা যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস বা ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম। এরপর বাসে কক্সবাজার। ঢাকা থেকে অনেক বাস সরাসরি কক্সবাজার যায়। এমন বেশকিছু এসি বা নন-এসি পরিবহন পাওয়া যাবে। শ্রেণিভেদে ভাড়া ৮০০ টাকা থেকে শুরু।
বিমানেও মাত্র ৪৫ মিনিটে কক্সবাজারে যাওয়া যায়। নিয়মিত কক্সবাজারে নভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ অন্যান্য বিমান আসা-যাওয়া করে। এ ক্ষেত্রে ভাড়া হবে ৬৫০০ থেকে ৮০০০ হাজার টাকা।
এরপর কলাতলীর ডলফিন মোড় থেকে সিএনজিযোগে ২৩-২৪ কিলোমিটার দূরের ইনানী সৈকত যাওয়া যাবে। লোকাল ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। রিজার্ভ করলে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
যেখানে থাকবেন : কক্সবাজারে রয়েছে পর্যটকের জন্য পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ। ঢাকা থেকে ফোন দিয়েই বুকিং দিতে পারেন। এখানে এক রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা দামের কক্ষ। যাঁরা থাকার জন্য এত খরচ করতে চাচ্ছেন না, তাঁদের জন্য কমমূল্যে থাকার হোটেলও রয়েছে। হোটের সিগালের পেছনে রোডে, অর্থাৎ কলাতলী রোডের কটেজগুলোতে মাত্র ৫০০ টাকায়ও থাকা যায়।