গর নাকি পাহাড়? এই নিয়ে ভ্রমণপিপাসুদের মধ্যে অনেক তর্ক-বিতর্ক দেখা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে, হ্রদও কিন্তু পিছিয়ে নেই। অনেকেই পাহাড়, হ্রদ এক সাথে পছন্দ করেন। এবার ঈদের ছুটিতে অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাড়ি জমাবে। চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে। এখানকার হ্রদগুলো শহরের ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এদের সাথে জড়িয়ে আছে সংস্কৃতিও।
শিলংয়ের ওয়ার্ডস লেক একটি মনুষ্যসৃষ্ট হ্রদ। যা ১৮৯৪ সালে আসামের তৎকালীন প্রধান কমিশনার স্যার উইলিয়াম ওয়ার্ড দ্বারা নকশা করা হয়েছিল। হ্রদটি কর্নেল হপকিন্স দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এই হ্রদ নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের জন্য বিনোদনমূলক স্থান তৈরি করা। ওয়ার্ডস লেকের অবস্থানের কারণে, এই হ্রদের নির্মাতারা নিশ্চিত ছিলেন যে, একদিন হ্রদটি শিলংয়ের ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে ওঠবে।
আশ্চর্যের ব্যাপার, তখন থেকে এখন পর্যন্ত হ্রদটির তেমন কিছুই বদলায়নি। হ্রদটি আজও, ফুল, পাথরযুক্ত পথ এবং কাঠের সেতু দিয়ে সাজানো রয়েছে। পরে কিছু চেরি গাছ লাগিয়ে হ্রদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলা হয়েছে।
হ্রদটিতে প্রাকৃতিক ঝর্ণা রয়েছে। বর্ষার সময় পানিতে ভরে যায়। এর ফলে এই হ্রদ সব সময় তাজা পানিতে টইটুম্বুর করে। দর্শনার্থীরা এই হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চারপাশে হেঁটে থাকেন। এ ছাড়াও, প্যাডেল নৌকা ভাড়া করে ঘুরে থাকেন। এই হ্রদে মাছও রয়েছে। যা পর্যটকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
ওয়ার্ডস লেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনীর স্থান হিসেবেও পরিচিত। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসব হল চেরি ব্লসম। এ সময় হ্রদের চারপাশ গোলাপী এবং সাদা রঙ- এ ছেয়ে যায়। হ্রদের বাগানগুলো পিকনিকের পটভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
শিলং-এর ওয়ার্ডস লেক ব্রিটিশ যুগের স্থাপত্য ও নান্দনিক শৈলীর সাক্ষ্য হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। এত বছর পরেও, এটি কেবল তার ঐতিহাসিক আকর্ষণই ধরে রাখেনি। বরং এটি শিলংয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রদর্শন করে এমন একটি গন্তব্যেও পরিণত হয়েছে।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া