চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি থেকে অনিয়মিতভাবে থাকা বাংলাদেশিদের নিয়মিত হতে আবেদন করার সুযোগ দেয় গ্রিস। ৩০ অক্টোবর শেষ হচ্ছে সেই আবেদনের সময়সীমা। এথেন্সে বাংলাদেশের দূতাবাস রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রিসে বসবাসরত অনিয়মিত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াকে দ্রুত করা এবং নিয়মিত অভিবাসনের দরজা খুলে দিতে ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে ঢাকা ও এথেন্স।
সাবেক গ্রিক অভিবাসন ও আশ্রয়প্রার্থী বিষয়ক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি ঢাকা সফরে গিয়ে ওই সমঝোতা করেছিলেন। দুই দেশের এই সমঝোতা স্মারক বিলটি ওই বছরের ২১ জুলাই গ্রিক সংসদ অনুমোদন দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বাংলাদেশিদের নিয়মিতকরণ প্রক্রিয়া। শর্ত হিসেবে আবেদনকারীকে ন্যূনতম দুই বছর মেয়াদি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে গ্রিসে বসবাসের প্রমাণ এবং নিয়মিত হলে চাকরির নিশ্চয়তার প্রমাণ জমা দিতে হবে।
এই প্রক্রিয়ার বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমত, অনিয়মিত অভিবাসীদের এথেন্সে বাংলাদেশি দূতাবাসে প্রাথমিক নিবন্ধন করতে হবে।
রোববার (১ অক্টোবর) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, অনিয়মিত বাংলাদেশিরা নিয়মিত হতে দূতাবাসে প্রাথমিক নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
যারা প্রথম প্রক্রিয়া শেষ করেছেন অথবা করবেন তারা প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ গ্রিক সরকারের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন চলতি মাসের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত।
১০ হাজারেও বেশি বাংলাদেশির আবেদন
বাংলাদেশ দূতাবাস গ্রিসের মিনিস্টার মোহাম্মদ খালেদ ২ অক্টোবর ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, গ্রিস-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক চুক্তির আওতায় এ পর্যন্ত দূতাবাসের মধ্যে প্রাথমিক নিবন্ধিত হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি অভিবাসী।
তিনি আরও বলেন, এসব অভিবাসীর মধ্যে অন্তত ছয় হাজার বাংলাদেশি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ শেষে গ্রিক কর্তৃপক্ষ থেকে বৈধতার সত্যয়ন পেয়ে রেসিডেন্স পারমিট বা স্মার্ট কার্ডের অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আরও জানান, চলমান প্রক্রিয়া ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নির্ধারিত থাকলেও এই সময়সীমা বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করার সুযোগ দিতে গ্রিক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ।
অনিয়মিত অভিবাসীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই কঠোর অবস্থানে রয়েছে গ্রিক সরকার। অভিবাসীদের সঙ্গে প্রশাসনের আচরণ নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন অধিকারকর্মীরাও।
গত বছরের জুলাইয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দেশটি আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী নোতিস মিতারাচি বলেন, ‘এই চুক্তির দুইটি দিক আছে। প্রথমত, অনিয়মিত অভিবাসনকে মোকাবিলা করা। আমি পরিষ্কার বলতে চাই, গ্রিস অনিয়মিত অভিবাসন মেনে নেবে না। আমরা আমাদের সীমান্ত রক্ষা করব। কারা ইউরোপে আসবে সেটা আমরা পাচারকারীদের হাতে ছেড়ে দেব না। আমি বৈধ অভিবাসনের পক্ষে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘অভিবাসীরা একটি সম্মানজনক উপায়ে গ্রিসে আসবে এজন্য পাচারকারীদের টাকা দিতে হবে না তাদের। তারা এখানে একটা সময়ের জন্য কাজ করবে, তাদের পরিবারকে সহায়তা করবে। এরপর আবার ক্রমন্বয়ে তাদের নিজেদের দেশে ফেরত যাবেন।’