বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন

গ্রিনল্যান্ডে গুপ্তচরবৃত্তি: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করলো ডেনমার্ক

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার গুপ্তচরবৃত্তির খবর প্রকাশের পর ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লকে রাসমুসেন জানিয়েছেন, তিনি এই বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করবেন।

“আমরা বন্ধুদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করি না—এটা আমাকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে,” বলেন রাসমুসেন।

দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের হুমকির পর মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে দ্বীপটির স্বাধীনতা আন্দোলন ও খনিজ সম্পদের ওপর নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড প্রতিবেদনটি সরাসরি অস্বীকার না করলেও বলেছেন, এটি একটি “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গোপন তথ্য ফাঁস করে ট্রাম্পকে দুর্বল করার চেষ্টা”।

তিনি আরও বলেন, “এই রিপোর্ট জাতীয় নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং আইনের লঙ্ঘন।”

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সম্মেলনে যোগ দিতে ওয়ারশতে অবস্থান করা রাসমুসেন বলেন, “এটি কিছুটা উদ্বেগজনক।” তিনি জানান, “আমরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করছি, যাতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়।”

ডেনিশ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা PET বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানালেও ডেনিশ মিডিয়াকে জানায়, “গ্রিনল্যান্ড নিয়ে মার্কিন আগ্রহ আমরা স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য করেছি।”

তারা আরও জানায়, আন্তর্জাতিক মহলে গ্রিনল্যান্ডকে ঘিরে আগ্রহের কারণে এখন অঞ্চলটিতে গুপ্তচরবৃত্তির হুমকি বেড়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে NBC News-কে বলেন, “আমি বলছি না এটা করবই, কিন্তু আমি কিছুই অস্বীকার করছি না। আমাদের গ্রিনল্যান্ড খুবই দরকার।” তিনি আরও বলেন, “ওখানে খুব কম মানুষ আছে। আমরা তাদের যত্ন নেব, ভালোবাসব, কিন্তু এই দ্বীপ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য জরুরি।”

চলতি বছরের মার্চে কংগ্রেসে এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “একটা না একটা উপায়ে আমরা এটা (গ্রিনল্যান্ড) পেয়ে যাব।”

মার্চেই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের গ্রিনল্যান্ড সফরকে “গ্রিনল্যান্ডের জনগণ ও রাজনীতিবিদদের ওপর পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য চাপ” বলে মন্তব্য করেন ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেত্তে ফ্রেডরিকসেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ট্রাম্পের মন্তব্যের সমালোচনা করেন। BBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, “ট্রাম্প যেমন গ্রিনল্যান্ড কিনতে চায়, পানামা খাল ফেরত নিতে চায়, এমনকি কানাডাকে আমেরিকার ৫১তম রাজ্য বানাতে চায়—এসব শুনে আমি হতবাক।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও সুযোগের পক্ষে। দখলের পক্ষে নই।”

গ্রিনল্যান্ড পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ, যা গত ৩০০ বছর ধরে ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দ্বীপটি নিজের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চালালেও পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি নির্ধারণ করে কপেনহেগেন।

দ্বীপটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং ট্রাম্প সেখানে বিরল খনিজ উত্তোলন নিয়েও আগ্রহী বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে জরিপ বলছে, গ্রিনল্যান্ডের অধিকাংশ বাসিন্দা ডেনমার্ক থেকে স্বাধীনতা চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে চান না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com