বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন

গ্রিক শ্রমবাজারে ঘাটতি মেটাতে প্রয়োজন তিন লাখ অভিবাসী কর্মী

  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

পর্যটন ও নির্মাণ খাতসহ গ্রিক শ্রমবাজারে শ্রমঘাটতি মেটাতে মোট তিন লাখ বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা৷ তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে নিয়োগকর্তারা বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিয়োগকারী সংস্থাগুলো৷

গ্রিসে কর্মী সংকট তীব্র হয়েছে এমন খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম পর্যটন৷ এ খাতে ডিশওয়াশার, ওয়েটার, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, পাচক বা শেফ, স্পা থেরাপিস্ট এবং ফ্রন্ট অফিসে কাজ করতে ইচ্ছুক এমন বিপুল সংখ্যক কর্মী দরকার৷

অপরদিকে, নির্মাণ খাতে বিশেষ কারিগর, যেমন ওয়েল্ডার, কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, স্টিমফিটার, গাড়ি চালক, সাইট ইঞ্জিনিয়ার এবং বিশেষায়িত ভারী যন্ত্রপাতি চালাতে পারে এমন অপারেটরসহ প্রচুর কর্মীর প্রয়োজন রয়েছে৷

এছাড়া গ্রিক ব্যবসায়ীরা শিল্প উৎপাদন, স্টোরেজ সুবিধা, প্যাকেজিং, যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ, সিএনসি (কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল) মেশিনারি টেকনিশিয়ান এবং অটোক্যাড ডিজাইনারদের মতো পেশাদার কর্মীদের খুঁজছে৷

এসব খাত ছাড়াও আইটি খাতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার এবং সিস্টেম সুরক্ষা বিশেষজ্ঞসহ বিশেষায়িত প্রোগ্রামারদের চাহিদা রয়েছে৷

তবে কর্মী সংকটে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী গ্রিসের কৃষিখাত৷ খামার শ্রমিকদের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই মোকাবিলা করছে কৃষি মালিকেরা৷

শ্রমিক ঘাটতি থাকলেও ইউরোপের বাইরের দেশগুলো থেকে গ্রিসে বিদেশি কর্মীদের আনার প্রক্রিয়া ছয় থেকে নয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে৷ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে পর্যাপ্ত মৌসুমী কর্মী পাওয়া কঠিন করে তোলে৷

সরকার হাজার হাজার অভিবাসীদের আনতে অনুমোদন দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত অল্পসংখ্যক ব্যক্তিরা গ্রিসে আসতে সক্ষম হন৷

গ্রিসে আন্তর্জাতিক শ্রমিকের চাহিদা ও যোগান নিয়ে কাজ করা প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়ার্কগ্রিস ডটআইও-এর সিইও বেঙালিস কানেল্লোপৌলস গ্রিক দৈনিক কাথিমেরিনিকে বলেন, প্রায় দুই হাজার ছোট ও বৃহৎ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান গ্রিসে বিদেশি কর্মী নিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে৷

ওয়ার্কগ্রিস ডটআইও প্লাটফর্মের মাধ্যমে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, মিশর, জর্জিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মলডোভা, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন্স এবং ভিয়েতনাম সহ ১১টি দেশের ৩৫ হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য অভিবাসী কর্মী গ্রিসে আসতে আগ্রহ দেখিয়ে নিবন্ধন করেছেন৷

বেঙালিস কানেল্লোপৌলস ব্যাখ্যা করে, একজন বিদেশি কর্মীর সফল নিয়োগ অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে৷ একটি মন্ত্রণালয়ের ডিক্রি থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা এবং বিশেষীকরণ নিয়ে স্থানীয় এবং আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দিতে হয়৷ বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে৷’’

এছাড়া বিদেশে অবস্থিত গ্রিক দূতাবাসগুলো থেকে ভিসা অনুমোদন এবং ইস্যুর বিষয়টিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ৷ পরবর্তীতে তারা গ্রিসে আসার পর ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, একটি সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর এবং বেস কিছু প্রশাসনিক কাজ সম্পন্ন করতে হয়৷

বেঙালিস কানেল্লোপৌলস বলেন, ভিসা প্রদানে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের আবেদনের সিদ্ধান্ত, দূতাবাস থেকে অনুমোদন এবং বিশেষায়িত পারমিটের সংখ্যা কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সেটি নিয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে৷ বিদেশি কর্মীরা গ্রিসে আসার পর সামাজিক নিরাপত্তা কার্ড ও অন্যান্য প্রশাসনি, নথি ইস্যুতে এক মাস পর্যন্ত সময় লাগে৷ আইন অনুসারে এই সময়কালে কর্মীরা কাজ করতে পারেন না৷

নিয়োগকর্তাদের মতে, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শ্রমিকদের অবশ্যই তাদের নিজ দেশে রাষ্ট্রস্বীকৃত সংস্থাগুলোর মাধ্যমে আসতে হবে, যাতে করে অবিশ্বাস না থাকে৷ এমন সম্পৃক্ততা কর্মচারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করে৷

কানেল্লোপৌলস একটি সমন্বিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরির আহ্বান জানিয়েছে৷ যাতে অনুমোদনের প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করতে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তিদের এক জায়গায় আনা যায়৷

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com