নদীমাতৃক বাংলাদেশে বর্ষা সবার প্রিয় ঋতু। রিমঝিম বৃষ্টিতে বাংলার সবুজ প্রকৃতি যেনো যৌবন ফিরে পায়। বিশেষ করে এ সময় পানিতে টইটম্বুর হয়ে ওঠা খাল বিল হাওড় বাওর ভরে যায় জাতীয় ফুল শাপলায়। গ্রাম বাংলার এই রুপ যে দেখেনি সে যেনো বাংলাদেশকেই দেখেনি।
প্রতি বছর বর্ষায় টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার খাল-বিলের পানিতে ফুঁটে থাকে অজস্র লাল শাপলা। সে এক অভুতপূর্ব দৃশ্য। চোখ জুড়ানো সেই দৃশ্য দেখলে চারিদিকে সবুজ পাতার মাঝে লাল শাপলা ফুলকে মনে হবে আরেকটি বাংলাদেশ।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন বিল বর্ষায় ভরে ওঠে লাল শাপলায়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় লাল গালিচা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এ যেন বাবার বাড়িতে নায়র করতে আসা কোনো নববধূর গায়ে জড়ানো লাল শাড়ি।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার এসব বিল আসলে ফসলি জমি। বোরো মৌসুমে এখানে ধান চাষ করে কৃষকেরা। এরপর জমিতে বর্ষার পানি জমে গেলে সেখানেই প্রতিবছর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয় লাল শাপলা।
এই শাপলা একদিকে যেমন বিলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে, অন্যদিকে খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের জীবিকা নির্বাহের উপায় হয়ে ওঠে। হাটে বাজারে বেশ ভালো দামে বিক্রি হয় শাপলা ফুল ও এর ডাটা। শাপলা সবজি হিসেবে খুবই পরিচিত আর প্রিয় খাবার।
প্রাকৃতিক পরিবেশে লাল গালিচার মতো বিছিয়ে থাকা শাপলা ফুল দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ যায় সেখানে। চোখ জুড়ানো মন জুড়ানো এ দৃশ্য মিস করতে চাইবে কে? কাঠখোট্টা এই আধুনিক জীবনে এমন সুযোগ মিস করতে না চাইলে, আপনিও সময় করে ঘুরে আসুন গোপালগঞ্জের শাপলা বিল থেকে। বলা যায় না হয়তো এভাবেই আপনার সামনে উন্মোচিত হবে গ্রাম বাংলার নতুন পরিচয়।
যেভাবে যাবেন:
ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে নিয়মিত গোপালগঞ্জে বাস চলাচল করে। সায়েদাবাদ থেকে মুন্সীগঞ্জ-মাওয়া হয়ে টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস, মধুমতী পরিবহন, দোলা পরিবহন, বনফুল পরিবহন এবং গাবতলী থেকে পাটুরিয়া-ফরিদপুর হয়ে কমফোর্টলাইন, পলাশ পরিবহন ইত্যাদি বাস চলাচল করে। গোপালগঞ্জ সদরের সাথে সব উপজেলার বেশ ভালো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।