সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসন মরিশাসকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। কিন্তু এই দ্বীপেই রয়েছে অবৈধ তামিল অভিবাসীদের একটি শিবির। দ্বীপের স্বায়ত্তশাসন ছেড়ে দেওয়ার ফলে সেখানে আটকে পড়া কয়েক ডজন তামিলকে রোমানিয়ায় অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার। রোমানিয়ায় ছয় মাস থাকার পর তাঁরা সম্ভবত যুক্তরাজ্যে চলে যেতে পারবেন।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, কয়েকটি দ্বীপ নিয়ে যুক্তরাজ্যের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে গার্সিয়ায় আটকে পড়া অভিবাসীদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে যুক্তরাজ্যকে। বিষয়টি আশ্রয়ের দাবিগুলোকে জটিল করে তুলেছে। ২০২১ সালে ওই অভিবাসীরা শ্রীলঙ্কা থেকে নৌকা নিয়ে কানাডায় পৌঁছানোর চেষ্টা করে বাধার সম্মুখীন হয়ে প্রথমবারের মতো দিয়েগো গার্সিয়াতে আশ্রয় দাবি করেছিল।
বিবিসি জানিয়েছে, ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলটির সার্বভৌমত্ব মরিশাসের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। দিয়েগো গার্সিয়ায় একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থেকে যাবে এমন শর্তে দ্বীপটিকে হস্তান্তরে রাজি হয়েছে যুক্তরাজ্য।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা গার্সিয়া দ্বীপে অবস্থান করা অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন বিকল্পের প্রস্তাব দিয়েছেন। এসব প্রস্তাব অনুযায়ী, অভিবাসীদের কেউ কেউ রোমানিয়ায় চলে যেতে পারেন। অন্যদের শ্রীলঙ্কায় ফিরে যেতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বর্তমানে গার্সিয়া দ্বীপে ৫৯ জন তামিল রয়ে গেছেন। এ ছাড়া আরও ৮ জনকে সম্প্রতি চিকিৎসা সেবার জন্য রুয়ান্ডায় স্থানান্তর করা হয়েছে। দ্বীপে তাঁদের বসবাসের শিবিরগুলো ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে বলেও বর্ণনা করেছে বিবিসি। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এসব শিবিরে রোগের সংক্রমণ এবং অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা সহ কঠোর জীবনযাপনের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিবাসীদের মধ্যে সুরক্ষার অনুমোদন পাওয়া ব্যক্তি ও পরিবারগুলো রোমানিয়ায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি কেন্দ্রে চলে যাবেন। আর যাদের সুরক্ষা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে তাঁদের প্রত্যেককে ৩ হাজার পাউন্ড করে অর্থ সহায়তা দিয়ে শ্রীলঙ্কায় পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কিছু অভিবাসী স্থানান্তরের এমন সম্ভাবনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে এই মুহূর্তে তাঁরা রোমানিয়ায় একটি দীর্ঘ যাত্রা কিংবা শ্রীলঙ্কায় একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতে ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। দ্বীপটির বিচ্ছিন্নতা এবং সেখানে কঠোর সামরিক উপস্থিতি অভিবাসীদের জীবনকে জটিল করে তুলেছে। মানবাধিকারের প্রশ্নে তাই তাঁদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে যুক্তরাজ্যকে।