ছুটিতে গাড়ি নিয়ে ঘোরার অভিজ্ঞতা হতে পারে দারুণ আনন্দের—আবার কখনো কখনো সেটাই হয়ে উঠতে পারে চরম বিভীষিকা। গন্তব্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সড়কের মান, প্রাকৃতিক দৃশ্য, নিরাপত্তা, এমনকি রাস্তার পাশে খাবারের সুযোগ—সবই হয়ে দাঁড়ায় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য।
সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক জরিপে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে একটি তালিকা। ১০টি মানদণ্ডে (যেমন রাস্তার নিরাপত্তা, জ্বালানি সুবিধা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ট্রাফিক ইত্যাদি) স্কোর করে প্রকাশিত হয়েছে গাড়ি চালানোর জন্য সেরা ১০টি গন্তব্য—সাথে রয়েছে তিনটি সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতার দেশ।
গাড়ি চালানোর জন্য সেরা ১০ দেশ
আইসল্যান্ড: আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে থাকা এই দ্বীপরাষ্ট্রে রয়েছে ‘রিং রোড’ নামে পরিচিত এক আশ্চর্য সড়কপথ—পুরো দ্বীপটিকে ঘিরে ৮২৮ মাইল দীর্ঘ এ মহাসড়ক। রাজধানী রেইক্যাভিক থেকে যাত্রা শুরু করে ৩-৪ দিনের মধ্যে দেখা যায় গল্ফস ঝর্ণা, স্ট্রোকুর গেইসার, বরফচ্ছদিত পাহাড় এবং বিখ্যাত ব্লু ল্যাগুন। আইসল্যান্ডে দুর্ঘটনার হার অত্যন্ত কম, রাস্তা ফাঁকা, তবে গাড়ি ভাড়া বেশ ব্যয়বহুল।
স্পেন: মোটরওয়েগুলো হয়তো একঘেয়ে, কিন্তু আন্দালুসিয়া কিংবা এক্সত্রেমাদুরার পাহাড়ি আঁকাবাঁকা গ্রামীণ সড়কে রয়েছে অপার সৌন্দর্য। ঐতিহাসিক বাণিজ্যপথ, ধর্মীয় তীর্থযাত্রার সড়ক—‘কামিনো দে সান্তিয়াগো’, ‘ভিয়া দে লা প্লাতা’—সবই আবিষ্কার করা যায় নিজ গাড়িতে।
স্কটল্যান্ড: যুক্তরাজ্যের উত্তরাঞ্চলীয় এই দেশটিতে গাড়ি চালানো যেন এক রোমাঞ্চকর অভিযান। জনপ্রিয় ‘এনসি৫০০’ রোড ট্রিপ থেকে শুরু করে কম পরিচিত ‘এনই২৫০’ রুট—প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নির্জন গ্রামগুলো সবার নজর কাড়ে। ইভি চার্জিং সুবিধাও রয়েছে পর্যাপ্ত।
জর্ডান: মরুভূমি আর পাহাড়ঘেরা রাজ্যে গাড়ি ভ্রমণ মানে ইতিহাসের পথে হাঁটা। কিংস হাইওয়ে ধরে চালালে দেখা যাবে মাদাবা, কারাক, শোবাক দুর্গ, পেট্রা এবং ওয়াদি রাম মরুভূমি।
নিউজিল্যান্ড: প্রাকৃতিক দৃশ্য আর পরিষ্কার রাস্তা—নিউজিল্যান্ডে গাড়ি চালানো মানেই স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা। ফিওর্ডল্যান্ড আর করোমান্ডেল উপদ্বীপ মনকাড়া হলেও দুর্ঘটনায় মদ বা মাদক জড়িত থাকার হার উদ্বেগজনক।
কোস্টারিকা: রেইনফরেস্ট, নদী, কফি বাগান আর পাহাড়ে ঘেরা এই দেশটির রাস্তা অনেক জায়গায় খারাপ হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সেই ঘাটতি পূরণ করে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র: বিশাল হাইওয়ে, ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট, সিনেমার মতো দৃশ্য—প্যাসিফিক কোস্ট হাইওয়ে কিংবা মনুমেন্ট ভ্যালির মতো রুটগুলো ড্রাইভিংকে করে তোলে স্বপ্নের মতো।
যুক্তরাজ্য: যদিও ব্রিটেনের মোটরওয়ে অনেকটাই পুরোনো ও যানজটে ভরা, তবে শহরের বাইরের ছোট রাস্তা আর ঐতিহ্যবাহী গ্রামগুলো রোমান্টিক অভিজ্ঞতা দেয়।
আর্জেন্টিনা: রুটা ৯, ৪০, ও ৩—এই তিনটি মহাসড়ক গঠন করে দেশের এক বিশাল ত্রিভুজ। আন্দিজ পাহাড়, প্যাটাগোনিয়ার হিমবাহ ও প্রাগৈতিহাসিক গুহাচিত্র—সবই রয়েছে এই রুটে। তবে শহরের মধ্যে গাড়ি চালানো কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ।×
নামিবিয়া: আফ্রিকার অন্য দেশের তুলনায় নামিবিয়ার রাস্তা তুলনামূলক ভালো। নামিব মরুভূমি কিংবা ক্যাপ্রিভি স্ট্রিপের প্রাকৃতিক দৃশ্য অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য স্বপ্নের মতো।