শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

ক্লাস ১০ ফেল,রাস্তায় গেঞ্জি বিক্রি করতেন,পরিশ্রম ও দুর্দান্ত আইডিয়াতে ১০০ কোটির কোম্পানি

  • আপডেট সময় শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

মানুষের জীবন এতটাই আনপ্রেডিক্টেবল যে আপনি কোথা থেকে জীবন শুরু করেছেন আর সেটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটা আগে থেকে বোঝা রীতিমত অসম্ভব একটি ব্যাপার। ভারতবর্ষের পরিস্থিতি ঠিক এতটাই বিচিত্রময় যে একজন গরীব ঘরের ছেলেও দশ বছর পর গিয়ে একটা আম্বানি, আদানি হতে পারে। আপনি কোথা থেকে এসেছেন তার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আপনি কোথায় গিয়ে শেষ করতে চাইছেন, আর এই রকমের একজন মানুষের কথায় আপনাদেরকে আজকে জানাবো যার জীবন যেন এক ‘রোলার কোস্টার’, যেখানে উত্থান-পতন সর্বদা বিদ্যমান।

আমাদের রোজকার জীবন থেকে শুরু করে বিভিন্নজনের চলার পথে নানান বাঁধার সৃষ্টি হয়। এগুলোকে পেরিয়ে অনেকেই সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছে যায়। এরূপ নানান ঘটনার নিদর্শন আমরা পেয়ে থাকি নেটমাধ্যমে। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালোরের রাজা নায়কের এমনই এক কাহিনীর নিদর্শন পাওয়া গেল।খুবই গরীব ফ্যামিলির ছেলে রাজা, আরো চারটি ভাই বোনের সাথে পাঁচ সন্তান তার বাবা-মায়ের, সে খুব ভালোভাবেই জানতো যে আমাদের সবাইকে পড়াশোনা করানো বাবা মায়ের পক্ষে সহজ কাজ হবে না। দশম শ্রেণী ফেল রাজা ছিল একটি গরীব দলিত পরিবারের ছেলে। জীবনে কিছু করার তাগিদে বেঙ্গালুরুর এই গরিব ছেলেটি পৌঁছে যায় মুম্বাই, কিন্তু সেখানে গিয়ে কোন কিছু করে উঠতে না পেরে সে খালি হাতে ফিরে আসে নিজের বাড়ি, কিন্তু তার মন থেকে জীবনে কিছু করার ইচ্ছে কোনোভাবেই দূর হয়নি, সে মনের মধ্যে গেঁথে নিয়েছিল যে জীবনে বড় একটা কিছু করতে হবে এবং স্বপ্ন পূরণ করতে হবে।

সেই সময় থেকেই তার নতুন কিছু করার চাহিদা ছিল মনে মনে।তিনি জানিয়েছেন, “তিনি অমিতাভ বচ্চনের অনেক বড় ফ্যান”! অমিতাভ বচ্চনের ‘ত্রিশূল’ সিনেমা থেকে সে জীবনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা পেয়েছে। এই সিনেমাটিতে দেখানো হয় যে কিভাবে একজন গরিব ছেলে রিয়েল এস্টেট এর ব্যবসাতে গিয়ে কত তাড়াতাড়ি কোটিপতি হয়ে যাচ্ছে আর এই বিষয়টি মস্তিষ্কের মধ্যে গেঁথে যায় যে সেও করতে পারে।পড়াশোনা না হওয়ার জন্য, এক সময় রপ্তানি না হওয়া শার্ট বিক্রি করতেন তিনি ও তার বন্ধু। এরপর সে নিজেও রিয়েল এস্টেট এর কাজ শুরু করে। শুধু তাই নয় একের পর এক ব্যবসাতে সে এগিয়ে যায়। প্রথমে নিজের ব্যবসা শুরু করে মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে।

এখনকার দিনে সফল ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য লোকে বড় বড় ইনস্টিটিউশনে বা কলেজে, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়াশোনা করতে যায়। সেখানে দশম শ্রেণীতে ফেল করা রাজা একাধারে ৪-৫টি ব্যবসায় সাফল্য লাভ করে, নজির গড়েছে। বর্তমানে তার একটি নিউট্রিশন প্রোডাক্টের কোম্পানি রয়েছে, যার নাম ‘নিউট্রাল প্ল্যানেট ফুড’। যার বিভিন্ন দ্রব্যাদি নিয়ে CSIR ও CFTRI তে রিসার্চ হয়। এছাড়া কুরিয়ারের বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি এবং জাহাজে সেইগুলি আদান-প্রদানের ব্যবসা রয়েছে রাজার, নাম অক্ষয় এন্টারপ্রাইজ। স্ত্রী অনিতার ইচ্ছা পূরণের জন্য ছেলে-মেয়ে উভয়ের পরিষেবাতে একটি সেলুন খুলে দিয়েছেন তিনি, যার নাম পার্পেল হ্যাজ।

এর পাশাপাশি পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের জন্য একটি স্কুল এবং নার্সিং কলেজ এবং বিএড কলেজও খুলেছে রাজা। তার নিজের একটি জলের বোতলের ব্র্যান্ড রয়েছে, যেখানে বিশুদ্ধ জল প্যাকিং করে বিক্রি করা হয়।ফুটপাত থেকে শুরু করে আজ নানান ব্যবসাতে সফলতা এনে কোটিপতি হয়েছে রাজা, যা প্রমাণ করে মানুষ চাইলে উন্নতির চরম শিখর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com