ইউরোপের দেশ ক্রোয়েশিয়াতে নিজেদের জীবনমান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের কর্মীরা। কর্মীদের ৯০ ভাগ ক্রোয়েশিয়াতে উপার্জনের মাধ্যেমে নিজ দেশে তাদের পরিবারকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে থাকেন।
৩৩ ভাগ কর্মী দেশটিতে অন্তত পাঁচ বছর থাকতে চান এবং ১৯ দশমিক ৫ ভাগ কর্মী স্থায়ীভাবে ক্রোয়েশিয়াতে থাকার পরিকল্পনা করছেন। ক্রোয়েশিয়ার গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অব মাইগ্রেশন রিসার্চের এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
কর্মী সংকটে থাকা ক্রোয়েশিয়া গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপের বাইরের, অথাৎ তৃতীয় দেশ থেকে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে এবং এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা কাজের ভিসা নিয়ে দেশটির বিভিন্ন শ্রমখাতে যোগদান করছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে দেশটি দেড় লাখের বেশি বিদেশিকে ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করেছে।
বিদেশি শ্রমিকদের এমন আগমনের মুখে তাদের জীবনযাত্রা এবং তাদের পরিকল্পনা নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করে ইনস্টিটিউট অব মাইগ্রেশন রিসার্চ। গত বছরের ২৩ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সময়ে পরিচালিত গবেষণাটিতে সেই দেশে বসবাসরত এশিয়া ও আফ্রিকার চারশ বিদেশি শ্রমিকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যা ছিল শতকরা পাঁচ ভাগ। সবচেয়ে বেশি ছিল ফিলিপিনো শ্রমিকেরা, ৩৮ ভাগ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নেপালের ৬ ভাগ, ভারতের ২০ ভাগ এবং আফ্রিকার দেশ মিসরেরও ৫ ভাগ ছিল। অন্যান্য দেশের মধ্যে ছিল সিরিয়া, ইরাক, শ্রীলঙ্কা, চীন এবং উগান্ডার কর্মীরা।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক পেরিচ কাসেলি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে আসা শ্রমিকদের বিষয়ে প্রথমবারের তথ্য প্রদান করছে গবেষণাটি। তিনি জানান, বিদেশি শ্রমিকদের ক্রোয়েশিয়ার সমাজে একীভূত করতে পরামর্শ প্রদান বিষয়ক আরও গবেষণা আগামী দিনগুলোতে করা হবে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪০ ভাগ শ্রমিক জানান, তারা ক্রোয়েশিয়াতে নিজেদের জীবন নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট। এর বিপরীতে, ২৬ দশমিক পাঁচভাগ শ্রমিক জানিয়েছেন তারা মারাত্বক অসন্তুষ্ট। ২৭ ভাগ অংশগ্রহণকারী জানান, তারা সন্তুষ্ট বা অসন্তুষ্ট কোনোটি নন। আর শতকরা ৬ ভাগ অংশগ্রহণকারী এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
এদিকে জীবনযাত্রার মানের বিষয়ে ৪৩ দশমিক ৫ ভাগ শ্রমিক যথেষ্ট সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এর বিপরীতে ২৪ ভাগ অত্যন্ত অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। বাকি অংশগ্রহণকারীরা সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টি কোনোটিই প্রকাশ করেননি।