আই-এম-স্টারডাম (I-Am-sterdam) ইংরেজিতে অনেক সময় এভাবেই ভেঙে লেখা হয় আমস্টারডামের নাম। ফূর্তিবাজ, ভ্রমণপ্রিয়, ইতিহাসবোদ্ধা সবার জন্যই আমস্টারডাম এক কাঙ্ক্ষিত শহর। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী এই শহরে যেমন রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব তেমনি রয়েছে আধুনিক জীবনের সবকিছু। একই শহরে যেন দুই দুনিয়া। ভ্রমণপিপাসুদের আমস্টারডাম সবসময় হাতছানি দিয়ে ডাকে। ইউরোপের একটা আলাদা আবেদন তো রয়েছেই। তারপর শহরটা যদি হয় আমস্টারডাম তাহলে তো সেটা অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা।
১. ভাসমান শহর
যারা আমস্টারডাম কখনো যাননি তারাও আমস্টারডামের খালের কথা শুনে থাকবেন। এটা এতটাই বিখ্যাত। দেখলে আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে নিশ্চিত। পুরো শহরে রয়েছে ১৬৫টি খাল পথ। তাই আমস্টারডামকে ভাসমান শহর বলাই যায়। ৯০টি ছোটবড় দ্বীপ রয়েছে শহরে। আর এগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়েছে এক হাজার ২৮১টি সেতুর মাধ্যমে। সবচেয়ে ভালো হয় একটা প্যাডেল বোট বা ক্রুজ ভাড়া করে নিয়ে নিতে পারেন তাহলে আর আমস্টারডাম ঘুরতে পায়ে হাঁটার বা ট্রেন ধরার দরকার পড়বে না। মাত্র ১৫ ইউরোতে ঘোরার জন্য পাবেন প্যাডেল বোট।
২. ইউরোপের চিত্রকল্প
সিনেমা বা ছবিতে যারা ইউরোপ দেখেছেন তাদের কাছে ইউরোপের সৌন্দর্য মানে পাথরের তৈরি বিশাল সব প্রাচীন স্থাপনা আর ছোট গলির রাস্তা। ইউরোপের সৌন্দর্য যদি চোখে দেখতে চান অবশ্যই আমস্টারডাম একটি ভালো পছন্দ। প্রায় ছয় হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি রয়েছে শহরটিতে। এর মধ্যে ষোড়শ থেকে বিংশ শতাব্দীতে তৈরি বাড়িঘর যেমন রয়েছে তেমন রয়েছে এই সময়ের অত্যাধুনিক স্থাপনা। নতুন পুরনোর মিশেলে একাকার এক রাজধানী আমস্টারডাম। স্থাপত্যশিল্পই জানান দেয় হল্যান্ডের ঐতিহ্যের কথা।
৩. জাদুঘর
এটা শুনে কেউ উল্টো পথে হাঁটা শুরু করতে পারেন! ঘুরতে গিয়ে কি না জাদুঘর! তবে আমস্টারডামের জাদুঘরগুলোকে একঘেয়ে লাগার সুযোগ কম। ইতিহাস চাক্ষুষ করার অভাবনীয় এক সুযোগ এটি। রেইকস জাদুঘরে গেলে টের পাবেন একসময় বিশ্বের সবচেয়ে ধনী শহর আমস্টারডামের প্রাচুর্য। ছবি আঁকা নিয়ে আগ্রহ থাকলে যেতে পারেন ভ্যানগঘ জাদুঘরে। আবার রাজনীতি নিয়ে আগ্রহ থাকলে যেত পারে আনা ফ্র্যাঙ্ক জাদুঘরে। এ তো মাত্র তিনটি। কিন্তু এ রকম আরো অন্তত ৫০টা দেখার মতো জাদুঘর রয়েছে আমস্টারডামে।
৪. সাইকেল
সাইকেলের জন্য আমস্টারডাম বেশ বিখ্যাত। রাস্তায় নামলেই সেটা টের পাবেন। শহরের এমন কোনো বাসিন্দা নেই যার সাইকেল নেই। নিজেদের শহরটাকে যে তারা ভীষণ ভালোবাসে আর তাকে দূষণমুক্ত এবং পরিষ্কার রাখতে চায় সেটা বুঝতে পারবেন সাইকেলের বহর দেখে। শহরটা নিজের মতো করে ঘুরে দেখার জন্য সাইকেল ভাড়া করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর যদি সাইকেলে না-ও ঘোরেন অন্তত কয়েক চক্কর না দিলে আমস্টারডাম ভ্রমণ পূর্ণ হবে না।
৫. ডাচ খাবার
ডাচদের খাবারের সাথে ইন্দোনেশিয়ার খাবারের কিছুটা মিল আছে। একদা ডাচ উপনিবেশ ছিল ইন্দোনেশিয়া। সেই সূত্রে খাবার কিছুটা মিলমিশ হয়ে গেছে। আমস্টারডামে পাবেন দারুণ সব খাবারের দোকান। সেসব দোকানে গিয়ে অনায়াসে অর্ডার করতে পারেন হচপচ। ডাচদের প্রিয় এই খাবার তৈরি করা হয় আলু ভর্তা এবং সবজি মিলিয়ে। সাথে থাকে মাংস। ভুড়িভোজের পরে মনে করে অ্যাপল কেক চেখে নেবেন। একবার ঘুরে এলে আমস্টারডামকে কখনো ভুলতে পারবেন না।