কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানবসভ্যতাকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ওপেনএআই ও গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধানসহ অন্তত এক ডজন এআই বিশেষজ্ঞ এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
এআই সেফটি সেন্টারের ওয়েবপেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওই ঝুঁকির বিষয়ে সমর্থন প্রকাশ করেছেন তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মহামারি ও পারমাণবিক যুদ্ধের মতো অন্যান্য সামাজিক ঝুঁকির মতো এআই থেকে বিলুপ্তির ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়টিকে বিশ্বজুড়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।’
তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা এআই নিয়ে এই ধরনের সতর্কবার্তাকে অতিরঞ্জন বলেছেন।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ও ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান, গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ডেমিস হাসাবিস ও অ্যানথ্রোপিকের ডারিও অ্যামোডাইও এই বিবৃতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
সেন্টার ফর এআই সেফটির ওয়েবসাইটে এআইয়ের বেপরোয়া বিকাশে কয়েকটি দুর্যোগের সম্ভাব্য দৃশ্যের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
• কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অস্ত্র বানানো যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে এআইয়ের ওষুধ-আবিষ্কার টুলসকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহারের ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে।
• এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা ভুল তথ্য সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। যা সম্মিলিত সিদ্ধান্তগ্রহণকে দুর্বল করে ফেলে।
• এআইয়ের সক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে কমসংখ্যক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হতে পারে। যা সর্বাধিক নজরদারি এবং নিপীড়নমূলক সেন্সরশিপের মাধ্যমে সংকীর্ণ মূল্যবোধ প্রয়োগে সক্ষম।
এর আগে, অত্যধিক ক্ষমতাসম্পন্ন এআইয়ের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিলেন ডা. জিওফ্রে হিন্টন। তিনিও এআইয়ের ঝুঁকির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তায় সমর্থন জানিয়েছেন।
কানাডার মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইয়োশুয়া বেঙ্গিও ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন। ডা. হিন্টন, অধ্যাপক ইয়োশুয়া বেঙ্গিও এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়ান লেকুনকে প্রায়ই তাদের যুগান্তকারী কাজের জন্য এআইয়ের ‘গডফাদার’ হিসাবে অভিহিত করা হয়।
কম্পিউটার বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিতে ২০১৮ সালে তারা যৌথভাবে ‘টিউরিং অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। অধ্যাপক ইয়ান লেকুন বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটাতে কাজ করছেন।
তিনি এআইয়ের ঝুঁকির বিষয়ে এই ধরনের সব সতর্ক বার্তাকে অতিরঞ্জন বলে মন্তব্য করেছেন।
সূত্র: বিবিসি, এনবিসি