বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ অপরাহ্ন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা: আশীর্বাদ, না অভিশাপ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ আগস্ট, ২০২৩

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানবজাতির জন্য যেভাবে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে, তেমনি তার অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে ভয়ংকর হুমকি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বহু আগেই এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। সাম্প্রতিক সময়ে সেটিই যেন আবার নতুন করে শোনালেন টেক জায়ান্ট গুগলের সাবেক প্রধান নির্বাহী এরিক স্মিড

গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান আলফাবেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণার শুরু থেকেই খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করেছেন এরিক। তাঁর দৃষ্টিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করার শ্রেষ্ঠ সময় এখনই। মানুষের পরিশ্রম কমিয়ে জীবনকে আরও সহজ ও সাবলীল করলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা হয়ে উঠতে পারে মানবসভ্যতা ধ্বংসের কারণ। মানুষের পুরো জীবনব্যবস্থাই পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা আছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জ্ঞানে। সুতরাং ভবিষ্যৎ পৃথিবীর ক্ষমতা যাদের হাতে থাকবে, তারা এ পরিবর্তনের জন্য কতটা প্রস্তুত, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সংশয় আছে।

গ্যারি মার্কাসের ভবিষ্যদ্বাণী: যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী গ্যারি মার্কাস কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তিনি একে একটি কাচের ঘরে ষাঁড় ঢুকে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। মার্কাস মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসময় আর মানুষের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। সমস্যাটি হবে ঠিক তখনই। পৃথিবী ইতোমধ্যে তার দু-একটি নমুনা প্রত্যক্ষ করেছে। ২০২৩ সালের মার্চে বেলজিয়ামে ‘এলিজা’ নামে এআই চ্যাটবটের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা বলতেন, এমন এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যাকারী ব্যক্তির পরিবারের দাবি, চ্যাটবটের সঙ্গে যোগাযোগের কারণেই সে আত্মহত্যা করেছে। বেলজিয়াম সরকার বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তদন্ত করছে।

জেমস ক্লেটন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপরে একটি যৌক্তিক নিয়ন্ত্রণ চান স্বয়ং চ্যাটজিপিটির প্রধান নির্বাহী জেমস ক্লেটন। সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ন্ত্রণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি বহু ক্ষেত্রেই মানুষের চাকরির জায়গা দখলে নেবে। ফলে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে জনবল ছাঁটাই হতে পারে এমন আশঙ্কার কথাও তিনি বলেছেন। মার্কিন সিনেটে বহু আইনপ্রণেতাই মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নতুন আইন প্রণয়নের প্রয়োজন এখন সময়ের দাবি।

চ্যাটবট মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে বিখ্যাত জেফ্রি হিন্টন বলেছেন, চ্যাটবটরা হয়তো একদিন মানুষের চেয়েও বুদ্ধিমান হয়ে যাবে। ৭৫ বছর বয়সী এ ব্রিটিশ-কানাডিয়ান কম্পিউটার বিজ্ঞানী সাম্প্রতিক সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে গুগল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাঁর গবেষণার জন্য তিনি এখন অনুতাপে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের চেয়ে কম বুদ্ধিমান হলেও অচিরেই এটি মানুষকে ছাড়িয়ে যাবে। কঠিন বিপদ হতে পারে তখনই।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনই পক্ষপাত, গোপনীয়তা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকারের উদ্বেগকে বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং মানুষের উদ্বেগ বেড়েছে সমানুপাতিক হারে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি মূল্যায়ন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভারসাম্য বজায় রেখে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। আর তা নিয়ে ভাবতে হবে এখনই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com