সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নে কীর্তনখোলা পাড়ের বেড়িবাঁধ কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দর্শনীয় স্থান, হোটেল, রেস্তোরাঁ, অবকাশ কেন্দ্র। মুগ্ধ করা পরিবেশে বিকেল হলেই হাজারো দর্শনার্থীর ঢল নামে। স্থানীয়রা ভাঙারপাড়কে এখন কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে তুলনা করছেন। নাম দিয়েছেন— ‘মিনি কুয়াকাটা’।
জানা গেছে, চরবাড়িয়ার নদী ভাঙন ঠেকাতে ২০১৯ সালে তিন কিলোমিটার নদী তীর বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাত ধরে প্রথমে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু হলেও সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং প্রকল্প যুক্ত করে প্রায় ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ শেষ হয় ২০২৩ সালে। এরপরই বদলে যেতে শুরু করে গ্রামটি।
ভাঙারপাড় ঘুরে দেখা গেছে, গত ছয় মাসের ব্যবধানে সেখানে ৩০টিরও বেশি রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে। নদী তীরে বসানো আছে ট্যুরিস্ট বেঞ্চ। আছে স্পিড বোট ও ট্রলার। বসানো হয়েছে চরকি, নাগরদোলা। প্রতিদিন বিকেল হলেই সেখানে হাজারো দর্শনার্থীর ঢল নামে।
ট্রলার চালক সুমন বলেন, এখানে নদী দেখতে সুন্দর, শান্ত থাকে। তাই মানুষ ট্রলারে নদী ভ্রমণ করে। জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা করে নিয়ে নদীতে ভ্রমণে যাই। প্রতি ট্রিপে এক ঘণ্টার মতো থাকি।
আরিফ দম্পতি ঘুরতে এসেছেন ভাঙারপাড়ে বলেন, আমার কাছে কুয়াকাটার চেয়ে কীর্তনখোলা নদীরপাড় ভালো লাগে। নির্মল বাতাস, গ্রামীণ পরিবেশ, শান্ত নদী। এখানে পরিবার নিয়ে সময় কাটানো সেরা। সুযোগ পেলেই আমি এখানে আসি। বেড়িবাঁধে বসে নদীর জলে পা ভেজাই।
একটি রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক বলেন, বেড়িবাঁধ হওয়ার পর কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরতে এসে দেখলাম ব্যবসার জন্য জায়গাটা উপযোগী। এরপর আমরা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় নেমেছি। এখানে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ জমি ভাড়া নিয়ে করা হয়েছে।
আলফাজ কামাল নামে এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে পরিবেশটা সুন্দর। অধিকাংশ মানুষ নদীপাড়ে হাঁটতে আসেন কিন্তু বেপরোয়া মোটরাসাইকেল চলাচলের কারণে ভয়ও আছে। অনেক মোটরসাইকেলচালক ইচ্ছে করে দর্শনার্থীদের বিরক্ত করেন।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, চরবাড়িয়া ভাঙারপাড় এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যান। অবসর কাটাতে আসা মানুষেদের এবং সেখানকার ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় সবসময়েই সেখানে পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত রাখা হচ্ছে।