সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

কি কি উপায়ে পর্তুগালে বৈধ হবেন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩

ইউরোপ জিনিসটা আসলেই একটা নেশার মত! যে নেশা ধর্ম বর্ণ, নবীন প্রবীন, শিক্ষিত অশিক্ষিত এমনকি দেশ থেকে মহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছে। এখন এটি একটি সার্বজনীন বৈশ্বিক নেশায় পরিণত হয়েছে তাই আমরা দেখি সারা বিশ্ব থেকে জন স্রোত ইউরোপ মুখি হতে চাচ্ছে। আমি এটাকে নেশার সাথে তুলনা করলাম কারন মানুষের যখন কোন কিছুর প্রতি নেশা পেয়ে যায় তখন তার হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ঠিক ইউরোপের প্রতি আকর্ষনেও অনেক মানুষ জীবন বাজি রেখে স্বপ্নের দুঃসাহসিক ও বিপদজনক পথে পা বাড়ায়। ভূমধ্যসাগরে প্রতিনিয়ত লাশের মিছিল দেখে অনন্ত তাই মনে হয়।

তাছাড়াও নানা কায়দায় মানুষ ইউরোপ আসছে যেমন স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসা, ওয়াক পারমিট ভিসা সহ নানান ধরনের ভিসা নিয়ে। এসব ভিসা সমূহ নিদিষ্ট সময়ের জন্য প্রদান করে সল্প মেয়াদী এবং কিছুদিন পরে এসমস্ত লোক অবৈধ হয়ে পড়ে। তাই পূনরায় কোন না কোন দেশে বৈধ হতে হয়। বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার বিবেচনায় ইউরোপের সবচেয়ে সহজ ইমিগ্রেশন হল পর্তুগালের। যদিও নানা সময়ে নানান জটিলতার মধ্য দিয়ে মানুষকে পাড় হতে হয়েছে তবুও পর্তুগাল ই এখনো হাজারো বাংলাদেশী সহ লাখো মানুষের আস্থার স্থান।

আজ আমি সংক্ষিপ্ত আলোচনার চেস্টা করবো কোন কোন উপায়ে পর্তুগালে বৈধ হতে পারবেন? শুরুতে জানাতে চাই সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম ৮৮.২ ধারা যা প্রফেশনাল কাজের পারমিট হিসাবে পরিচিত। সময়ে সময়ে এটি বন্ধ থাকলেও এখন যাদের বৈধ ভিসা সহ ইউরোপে প্রবেশের প্রমাণ দাখিল সাপেক্ষে সহজে ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে পর্তুগালের বৈধ কাগজ পাওয়া সম্ভব। এখানে মূল বিষয় হলো যেকোন ভিসা থাকতে হবে এবং মেয়াদ থাকা অবস্থায় পর্তুগালে প্রবেশের প্রমাণ দেখাতে হবে। তারপরে কন্টিবিউট নাম্বার, কাজের কন্টাক্ট, সোস্যাল সিকিউরিটি নাম্বার এবং আরো কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আবেদন করলে ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে বৈধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বর্তমানে অন্যতম আরেকটি জনপ্রিয় ধারা হল ১২২ এবং এই ধারার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষ বৈধ হচ্ছেন। ১২২ মূল বিষয় হলো আপনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ এবং আপনাকে তা মেডিকেলি প্রমাণ করতে হবে। তাহলে সহজে পেয়ে যাবেন কাঙ্খিত সে কাগজ নামক সোনার হরিণ। আপনার শরীরে সত্যি যদি কোন সমস্যা থাকে এবং তা এখানকার ডাক্তার থেকে লিখিত আকারে নিয়ে আবেদন করতে পারেন তবে ৮/১০ মাসে বৈধ কাগজপত্র পাওয়া সম্ভাবনা থাকে। যারা বৈধ ভাবে ইউরোপ তথা পর্তুগালে প্রবেশ করেননি তাদের জন্য এটি একটি বিশেষ সুযোগ হিসাবে বিবেচ্য।

বর্তমানে এদেশের সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে ১২৩ নামক আর্টিকেলের মাধ্যমে ও কাগজ দিচ্ছে। মানে যারা কোন ধরনেরই ভিসা বা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া পর্তুগালে আসছে এবং দীর্ঘ দিন পর্তুগালের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে সোস্যাল সিকিউরিটি দিয়ে, ১ বছর বা তার বেশি সময় ধরে তাদেরকে ও বৈধ কাগজপত্র দেওয়ার জন্য সম্প্রতি সময়ে বিল উপস্থাপিত হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে সময় একটু বেশী লাগছে সাধারণের তুলনায়। কিন্তু যারা ভিসা বা বৈধ কোন কাগজপত্র ছাড়া পর্তুগালে আসছে তাদের জন্য একটু সময় নিলেও এই ধারাটি খুবই ভাল। কারন অন্য কোন ভাবে তাদের বৈধ হওয়ার সুযোগ কম বা নাই বললে চলে।

যারা বৈধ ভাবে ইউরোপ তথা পর্তুগাল প্রবেশ করেছে তারা চাইলে পর্তুগালের যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রমাণাদি দিয়ে স্টুডেন্ট হিসাবে কাগজ করতে পারবে। স্টুডেন্টরা পর্তুগালে চাইলে ফুল টাইম কাজ করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে প্রমাণ করতে হবে ক্লাসের সময় ও কাজের সময়ের মধ্যে কোন সাংঘর্ষিকতা নেই। আরো মজার ব্যাপার হলো পর্তুগালে আপনি যে কোন একটি ধারাতে ৫ বছর বৈধ ভাবে থাকলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সুতরাং স্টুডেন্ট হিসাবে ৫ বছর পার করলেই পর্তুগাল তথা ইউরোপের নাগরিক হয়ে যাবেন। যা বিশ্বের আর কোন দেশে আমার জানা মতে সম্ভব নয়।

এছাড়াও আরো কিছু উপায়ে বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায় যেমন ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভুক্ত যে কোন দেশের নাগরিককে পর্তুগালে নিয়ে এসে বিয়ে করার মাধ্যমে বৈধ হতে পারেন। এখানেও পর্তুগাল সরকারের উদার নীতি লক্ষ করা যায়। কারন ইউরোপের অন্য কোন দেশে অবৈধ অভিবাসী সংশ্লিষ্ট সেদেশে বিয়ে করতে পারে না এবং তা শুধু পর্তুগালেই সম্ভব। তাছাড়া আরো কিছু উপায় আছে বৈধ হওয়ার ভবিষ্যতে আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

মো রাসেল আহম্মেদ
শিক্ষার্থী : নোভা বিশ্ববিদ্যালয়
লিসবন, পর্তুগাল

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com