শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

কাশ্মিরের মতো নৌকায় রাত কাটানো যাবে কাপ্তাই হ্রদে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সবুজ প্রকৃতি, উঁচু পাহাড়, নীলাভ জলের কৃত্রিম হ্রদের সঙ্গে সাদা মেঘের লুকোচুরি। এমন নয়ন ভরা রূপে মাতোয়ারা পর্যটকরা। তাই তো এমন চোখ জুড়ানো, মন ভোলানো রূপে বিমুগ্ধ হতে বার বার ফিরে আসেন তারা। বলছি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কথা। প্রকৃতি এ অঞ্চলকে আপন মহিমায় সাজিয়ে তুলেছে।

এমন রূপের কারণে আশির দশকে এ জেলাকে পর্যটন নগর হিসেবে ঘোষণা দেয় সরকার। এরপর থেকে এ জেলার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। তবে সময়ের তালে তালে এ জেলার পর্যটন শিল্পও এগিয়েছে কিছুটা।

এ জেলার বড় একটি সমস্যা হলো- অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাস। যেখানে উন্নয়ন সেখানে চাঁদা। যে কারণে ব্যবসা খাত থেকে শুরু করে পর্যটন খাত- বাইরের কোনো উদ্যোক্তা এখানে সহজে বিনোয়াগ করতে চায় না।

তবে বেশ কয়েক বছর ধরে এ এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা কিছুটা ভেঙে যায়। এ সুযাগে জেলায় কিছু উদীয়মান তরুণ পর্যটক উদ্যোক্তার আবির্ভাব ঘটে।

কাপ্তাই হ্রদ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তর মিঠা পানির কৃত্রিম হ্রদ। তৎকালীন সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কর্ণফুলী নদীর অববাহিকায় বাঁধ নির্মাণ করে। এ বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি আহরিত হচ্ছে মৎস্য সম্পদ। সরকার এ মৎস্য সম্পদ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। এ হ্রদ পুরো জেলার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। বাঁশ, কাঠ, কৃষি সব কিছু এ হ্রদকে ঘিরে গড়ে উঠেছে।

তরুণ উদ্যোক্তারা এইবার কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে এখানে নামিয়েছেন সুসজ্জিত প্রমোদতরি বা হাউস বোট।

ভারতের জম্মু কাশ্মিরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে অবস্থিত ডাল হ্রদে হাউস বোটের প্রচলন বহু বছর আগে থেকে। তরুণ উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয়ে ডাল হ্রদের মতো কাপ্তাই হ্রদে হাউস বোট চালু করেছে।
দেশীয় পর্যটকদের আর কাশ্মির যেতে হবে না। এবার নিজের দেশ রাঙামাটিতে কাশ্মির ভ্রমণের কিছুটা স্বাদ মিলবে কাপ্তাইয়ে।

জানা যায়, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নতুন উদ্যোক্তা দীপাঞ্জন চাকমার হাত ধরে প্রমোদিনী বোট লাইফ নাম দিয়ে কাপ্তাই হ্রদে একটি প্রমোদতরি নামে।

বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে বিশাল বিশাল নয়টি হাউস বোট বা প্রমোদতরি রয়েছে। এ বোটগুলোতে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা, টয়লেটসহ সব আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। প্রতিদিন পর্যটকরা এ বোটগুলো বুকিং দিয়ে রাত পার করছেন এবং কাপ্তাই হ্রদের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

প্রমোদিনী বোট লাইফের ম্যানেজার মো. মোবারক হোসেন বলেন, আমাদের অধীনে বর্তমানে চারটি হাউস বোট রয়েছে। প্রতিদিন বুকিং থাকে। আগে বুকিং না দিলে বোট পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, আমাদের বোটগুলো ১০ আসন বিশিষ্ট। ১০ জন পর্যটক আরামে-আয়েশে সময় কাটাতে পারবেন। সাপ্তাহিক বা অন্যান্য ছুটির দিনগুলোতে এক রাতের জন্য জনপ্রতি আমাদের পেমেন্ট করতে হবে সাড়ে সাত হাজার টাকা। তবে বন্ধের দিন ছাড়া থাকতে চাইলে জনপ্রতি সাত হাজার টাকা দিতে হবে। আমাদের বোটে সকালের নাস্তা, লাঞ্চ, বিকেলে নাস্তা এবং ডিনারের ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রমোদিনী বোট লাইফের মালিক দীপারঞ্জন চাকমা বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে বোটগুলো নামিয়েছি। বর্তমানে ভালো আয় হচ্ছে। পর্যটকরা যতেষ্ট সাড়া দিচ্ছেন। রাঙামাটির পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে আমরা প্রথমে কাপ্তাই হ্রদে সাহস করে নিজের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে হাউস বোট নামিয়েছি।

সূত্র : বাংলা নিউজ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com