বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২০ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

কালাই রুটির কদর বাড়ছে রাজধানীতে

  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

রাজধানীতে কিছু তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে গড়ে উঠেছে কালাই রুটির বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। ঢাকায় বসেই কালাই রুটির স্বাদ নিতে পারছেন নগরবাসী। মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, মিরপুরসহ ঢাকার অনেক এলাকায় চোখে পড়ে এ রুটির দোকান।

রাজধানীতেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে উত্তরাঞ্চলের বিখ্যাত খাবার ‌‘কালাই রুটি’। ঢাকার বিভিন্ন অংশে অল্প সময়ে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু কালাই রুটির দোকান।

মাসকলাই আর চালের আটার মিশেলে হাতে বানানো এই রুটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট ও মিনারেল।

উত্তরের জেলাগুলোতে, বিশেষ করে চরাঞ্চলে মাসকলাইয়ের ডালের আবাদ বেশি হয়। এই মাসকলাইয়ের আধিক্যের কারণে এসব এলাকায় কালাই রুটির উদ্ভব, তবে ঠিক কবে থেকে এই রুটির প্রচলন, তা জানা সম্ভব হয়নি।

কথিত আছে, উত্তরের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিয়াড় এলাকায় প্রথম কালাই রুটি তৈরি শুরু হয়। পরে তা রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, ঠাকুরগাঁসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

কালাই রুটি মূলত কৃষিকাজে নিয়োজিত দিনমজুরদের খাবার। চরাঞ্চলের আবহাওয়ার কারণে মরিচ-ঝাল দিয়ে খাওয়া এই রুটি কায়িক পরিশ্রমের জন্য উপকারী।

ফসলের মাঠ থেকে উঠে আসা কালাই রুটি এখন রেস্তোরাঁয় জায়গা করে নিয়েছে। রাজধানীতে কিছু তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে গড়ে উঠেছে কালাই রুটির বেশ কিছু দোকান।

ঢাকায় বসেই এখন এ রুটির স্বাদ নিতে পারছেন নগরবাসী। মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, মিরপুরসহ ঢাকার অনেক এলাকায় চোখে পড়ে রুটির দোকান।

সাংবাদিকতা ছেড়ে ২০২০ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে ‘কালাই রুটির আড্ডা’ নামের একটি রেস্তোরাঁ চালু করেন জামিলুর রহমান।

‘ঐতিহ্য রক্ষায় সচেষ্ট’ স্লোগানে শুরু করা এই ব্যবসায় তার সঙ্গে ছিলেন আরও দুজন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কারিগর এনে স্থানীয় স্বাদে পরিবেশন করা এই বিশেষায়িত রেস্তোরাঁ অল্প দিনেই জনপ্রিয়তা পায়।

কালাই রুটির কদর বাড়ছে রাজধানীতে

কী বলছেন রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তারা

নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যকে ঢাকায় ছড়িয়ে দিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসায় নামেন জামিলুর রহমান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল শুধু উত্তরাঞ্চলের মানুষ কালাই রুটি খেত, কিন্তু সময়টা এখন বদলে গেছে। এখন সবাই কালাই রুটি পছন্দ করে। আমরা কখনও ভাবতে পারিনি ঢাকা শহরের মানুষ কালাই রুটি গ্রহণ করতে পারবে।’

মোহাম্মদপুরের পর খিলগাঁওয়েও এ রেস্তোরাঁর একটি শাখা চালু হয়েছে। ‘কালাই রুটির আড্ডা’য় রুটির সঙ্গে বেগুন ভর্তা, লবণ-ঝাল ভর্তা, ধনে পাতা ভর্তা, রসুন ভর্তা, টকঝাল ভর্তা, আচার, শুঁটকি ভর্তা ও আলু ভর্তা পরিবেশন করা হয়। এ ছাড়া হাঁসের মাংস, গরুর ভুনা, বট (গরুর ভুঁড়ির ভুনা), চিকেন ভুনাও পাওয়া যায় রেস্তোরাঁটিতে।

 

‘কালাই রুটির আড্ডা’র মতোই মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডে আছে আরও একটি রেস্তোরাঁ। নাম ‘কালাই কুঠির’। নাটোরে গিয়ে কালাই রুটি মনে ধরে যায় এই প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম অংশীদার ফরহাদ আহমেদের। রুটির পুষ্টিগুণে অভিভূত হয়ে প্রায় দুই বছর আগে রেস্তোরাঁটি চালু করেন ফরহাদ।

ভালো সাড়া পাওয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে ‘কালাই কুঠির’-এর তিনটি শাখা চালু করেছেন তারা। এগুলো মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোড, রিং রোড ও কৃষি মার্কেট এলাকায়।

ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের এখানকার শেফ, ওয়েটারসহ রুটি বানানোর পুরো সেটটাই উত্তরবঙ্গ থেকে নিয়ে আসা। তারা সবাই অভিজ্ঞ। রুটির আসল স্বাদ ধরে রাখতে এই আয়োজন।’

কালাই কুঠিরে লবণ-ঝাল ভর্তার পাশাপাশি কবুতরের মাংস, গরুর মেজবান, হাঁসের মাংসও পাওয়া যায়।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com