কানাডার অন্যতম একটি বিশ্ববিদ্যালয় সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশটির কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২৪ সালে কানাডাসহ সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে বৃত্তির ঘোষণা দিয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন অনলাইনে। এ আবেদন জানুয়ারি ২০২৪-এ শুরু হতে যাওয়া উইন্টার ইনটেকের জন্য।
আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষাজীবন শেষে সহজেই পছন্দনীয় পেশায় যোগদান ও নাগরিক সুবিধার কারণে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের শিক্ষার্থীদের পড়ার জন্য প্রথম পছন্দ কানাডা। আপনিও যদি তাদের মতো পড়ার জন্য কানাডায় যেতে চান, তবে আজকের লেখাটি আপনার জন্য।
বিদেশি শিক্ষার্থীরা এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর কানাডার নাগরিকেরা এ বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে আবেদনের সব কাজ নিজেকেই করতে হবে। সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃত প্রতিনিধির মাধ্যমে করা যাবে আবেদন।
ইংরেজি ভাষাভাষী দেশের প্রার্থীদের আইইএলটিএস, টোফেল বা অন্যান্য স্কোর না থাকলেও হবে। কিন্তু ইংরেজি ভাষাভাষীর বাইরের দেশের নাগরিকদের আইইএলটিএসএ ৬ দশমিক ৫ অথবা টোয়েফেল ৮৬ অথবা পিটিইতে ৬৩ অথবা ডুয়োলিঙ্গে ১১০ পেতে হবে।
বৃত্তি-সম্পর্কিত আরও তথ্য জানতে ঢুঁ মারতে পারেন লিংকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন এই ঠিকানায়।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চাইলে
আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষাজীবন শেষে সহজেই পছন্দনীয় পেশায় যোগদান ও নাগরিক সুবিধার কারণে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশের শিক্ষার্থীদের পড়ার জন্য প্রথম পছন্দ কানাডা। আপনিও যদি তাদের মতো পড়ার জন্য কানাডায় যেতে চান, তবে আজকের লেখাটি আপনার জন্য।
আপনি যদি এখনো কানাডার কোথায় পড়বেন তা ঠিক করতে না পারেন, তবে প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন, কোথায় পড়বেন। কেননা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার ছাড়া আপনি স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
আপনার যদি নির্দিষ্ট একটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধে হয়, তবে নীচের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
১. ইউনিভার্সিটি অব আলবারটা অ্যাডমনটন।
২. ইউনিভার্সিটি অব মনট্রিয়েল।
৩. ডালহাউজ ইউনিভার্সিটি, হেলিফ্যাক্স।
৪. ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া ভ্যাকুভর।
৫. ইউরক ইউনিভার্সিটি, টরেন্টো।
৬. ইউনিভার্সিটি অব স্যাসকেচুয়ান, স্যাসকেটন।
উপরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে ধারণা নেবার পর একটি নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মনস্থির করুন। তারপর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবে প্রদত্ত আবেদন করার নিয়ম অনুসারে আবেদন করে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করুন।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা নামে কোনো ভিসা দেওয়া হয় না। মূলত, স্টাডি পারমিট দেওয়া হয়, যেটাকে স্টুডেন্ট ভিসা বলা হয়। এই স্টাডি পারমিট দিয়ে আপনি কানাডায় বসবাস করতে পারবেন না। কানাডায় ভ্রমণ ও বসবাসের জন্য আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা অথবা ইলেকট্রনিক ট্র্যাভেল অথোরাইজেশন (ইটিএ) নামক ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
স্টাডি পারমিট মূলত আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোর্সের মেয়াদের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ কোর্সের মেয়াদ যদি চার বছর হয় তাহলে আপনার স্টাডি পারমিটের মেয়াদও চার বছর হবে। সাথে অতিরিক্ত ৯০ দিন দেয়া হবে, যাতে আপনি ধীরেসুস্থে কানাডা ত্যাগ করতে পারেন।
আপনার স্টাডি প্রোগ্রাম যদি ৬ মাস কিংবা তারচেয়ে কম সময়ের হয়, তাহলে আপনাকে কোনো ধরনের স্টাডি পারমিট নিতে হবে না। যদি আপনার পরিবারের কেউ কানাডা থেকে থাকেন, তাহলেও আপনাকে স্টাডি পারমিট নিতে হবে না। একইভাবে আপনার কিংবা আপনার পরিবারের কারো যদি রেজিস্টার্ড ইন্ডিয়ান স্ট্যাটাস থেকে থাকে, তাহলেও আপনাকে স্টাডি পারমিট নিতে হবে না।
কানাডার স্টাডি পার্মিটের জন্য সর্বপ্রথম সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন কানাডার (CIC) ওয়েবে অনলাইনে আবেদন করুন। অথবা, নিকটস্থ কানাডিয়ান এম্বাসিতে যোগাযোগ করে অফলাইনে আবেদন করুন।
১. কানাডার সরকার কর্তৃক অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার।
২. কানাডায় থাকাকালীন আপনার থাকা, খাওয়া ও পড়ার খরচ বহন করার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক যোগান রয়েছে, তার প্রমাণপত্র।
৩. আপনি কোনো প্রকার সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডে যুক্ত নেই তার প্রমাণপত্র।
৪. আপনি পুরোপুরি সুস্থ তার প্রমাণ হিসেবে মেডিকেল রিপোর্ট।
৫. কানাডায় থাকাকালীন আপনি কোনো প্রকার সন্ত্রাসমূলক কর্মকান্ডে যুক্ত হবেন না, তার অঙ্গীকারনামা।
৬. আইইএলটিএস (IELTS) স্কোর / ইংরেজি ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার স্কোর।
১. কানাডার ব্যাংকে আপনার নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট।
২. ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
৩. ব্যাংক ড্রাফট।
৪. এক বছরের থাকা ও পড়ার খরচ পরিশোধ হয়েছে, তার প্রমাণপত্র।
৫. যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনার ফান্ডিং দিবে, সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত চিঠি।
৬. আপনি যদি কোন স্কলারশিপ পেয়ে থাকেন, তবে তার প্রমানপত্র।
এসব কিছু সংযুক্ত করে স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করতে আপনার খরচ হবে, ১৫০ কানাডিয়ান ডলার বা ৮৬১০ টাকা।
এছাড়া, স্টাডি পারমিটের জন্য আবেদন করার পর নিকটস্থ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকে বায়োমেট্রিক ইনফরমেশন অর্থাৎ ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি তুলে পাঠাতে হবে। এজন্য ১৪০০০ থেকে ১৭০০০ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
স্টাডি পারমিটের আবেদন করার ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে চিঠি অথবা মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে যে, আপনার জন্য বায়োমেট্রিক ইনফরমেশনের দরকার পড়বে কিনা। যদি দরকার পড়ে, তবে উপরে বর্ণিত নির্দেশনার মাধ্যমে বায়োমট্রিক ইনফরমেশন পাঠিয়ে দেবেন।
তারপর আপনার আবেদন ফর্ম যাচাইবাছাই করে দেখা হবে। যদি অসম্পূর্ণ তথ্য কিংবা কোন অতিরিক্ত ডকুমেন্টে সমস্যা থাকে, তবে তারা আপনাকে তা জানিয়ে দেবেন। বিশেষ কোনো ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন অফিস থেকে আপনাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হতে পারে কিংবা আরো কিছু তথ্য পাঠানোর জন্য বলা হতে পারে।
যদি তারা আপনার আবেদন ফর্ম গ্রহণ করেন, তবে তারা আপনাকে একটি কনফার্মেশন লেটার পাঠাবেন। এই কনফার্মেশন লেটার কানাডা পৌঁছানোর পর ইমিগ্রেশন অফিসে দেখাতে হবে।
আর যদি তারা আপনার আবেদন ফর্ম গ্রহণ না করেন, তবে তারা আপনাকে এর কারণ জানিয়ে মেইল পাঠাবেন।
স্টাডি পারমিট পাওয়ার পর আপনাকে টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এই ভিসার জন্য আবেদন করতে আপনার যা যা লাগবে-
১. নির্ভুলভাবে পূরণকৃত আবেদন পত্র।
২. ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত অফার লেটারের মূল কপি।
৩. চারটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৪. আপনার কোর্সের সময়সীমার চেয়ে একমাস বেশি মেয়াদের পাসপোর্ট।
৫. আপনার সকল জাতীয় কাগজপত্র, যেমন: জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা পরিচয়পত্র ইত্যাদি।
৬. আপনার সব ধরনের একাডেমিক কাগজপত্র।
৭. আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমান।
৮. স্পন্সরের প্রমানসহ বিস্তারিত তথ্য।
৯. স্টাডি পারমিট ফি দেওয়া হয়েছে- তার প্রমাণপত্র।
১০. ভিসা এনরোলমেন্টের ইলেকট্রনিক কনফার্মেশনের স্ক্যান কপি।
উপরের কাগজপত্রসহ কানাডিয়ান টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে কানাডিয়ান এম্বাসিতে। সবকিছু ঠিক থাকলে একমাসের মধ্যে আপনি হাতে পেয়ে যাবেন আপনার স্বপ্নের দেশের ভিসা।