কানাডায় আন্তর্জাতিক ছাত্র ভিসায় অধ্যয়নরতদের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামকালিন ৩ বছরের ওয়ার্ক পারমিটের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার ইমিগ্রেশন বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১ নভেম্বরের পর যারা আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে ভিসার আবেদন করবেন তাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে যে, গ্র্যাজুয়েশনের পর অবশ্যই কানাডার শ্রম-সেক্টরের পরিপূরক ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
একই ঘোষণায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, কানাডায় আসা বিদেশি ছাত্র তথা ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ইতিপূর্বেকার ৯৬৬ একাডেমিক প্রোগ্রাম কমিয়ে মাত্র ৫টিতে আনা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কৃষি এবং কৃষিজাত খাদ্য, স্বাস্থ্য-সেবা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং অংক, এবং ব্যবসা ও পরিবহন। এসব সেক্টরে শ্রম-শক্তির প্রচুর চাহিদা মেটাতেই নতুন এই ওয়ার্ক পারমিটের প্রথা চালু করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কৃতিত্বের সাথে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনকারি বিদেশি শিক্ষার্থীদেরকে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে। আর পোস্ট-সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রোগ্রামকে ‘ক্লাসিফিকেশন অব ইন্সট্রাকশনাল প্রোগ্রাম’ (সিআইপি)’র আওতায় পরিচালনা করা হচ্ছে।
কানাডা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ১ নভেম্বর কার্যকর হতে যাওয়া নতুন এ বিধি অনুযায়ী কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় উভয়ের সকল পোস্ট-গ্র্যাজুয়েশন ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনকারিকে অবশ্যই ভাষা পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। কলেজ গ্রেডের জন্য লেভেল-৫ এবং ইউনিভার্সিটি গ্রেডের জন্য লেভেল-৭ উত্তীর্ণ হতে হবে কানাডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী।
এদিকে, কানাডার অভিবাসন সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণের পর ‘এপ্লাই বোর্ড’ নামক একটি বেসরকারী সংস্থা জানায়, চলদি বছরের প্রথম ৬ মাস অর্থাৎ জুন পর্যন্ত বিদেশি ছাত্রদের মধ্যে এক লাখ ৫ হাজার ৩০টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হয়েছে। এর ৬৪% হচ্ছে কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশনকারি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট।
একইসময়ে ব্যবসা-প্রশাসনে গ্র্যাজুয়েশনকারির ৪২% পেয়েছেন সেই ওয়ার্ক পারমিট। ৩৭% স্টেম এবং কম্পিউটিং আইটি সেক্টরে পেয়েছে ১৬% বিদেশি ছাত্র। এভাবেই মেধাবি বিদেশি শিক্ষার্থীদের কানাডায় সামগ্রিক উন্নয়ন আর কল্যাণে আত্মনিয়োগের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
যদিও চাহিদা থাকা সত্বেও ফাইন্যান্স এবং একাউন্টিং বিষয়কে উপরোক্ত প্রোগ্রাম থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। স্মরণ করা যেতে পারে, বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট প্রদানের প্রথা আগে থেকেই চালু থাকলেও এখন কানাডার ভাষা শেখার ওপরেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
অর্থাৎ যারা উচ্চ শিক্ষা থেকে স্থায়ীভাবে বসতি গড়বেন তারা যেন কানাডার সাথে একাকার হয়ে বাকিটা জীবন আরো স্বাচ্ছন্দে অতিবাহিত করতে পারেন-এমন অভিপ্রায় থেকেই ভাষা শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলো বলে মনে করা হচ্ছে। আর এসব কারণেই বিদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে উঠেছে কানাডা।