1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
কানাডায় কেন নিষিদ্ধ হলো বিদেশিদের বাড়ি কেনা
সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন

কানাডায় কেন নিষিদ্ধ হলো বিদেশিদের বাড়ি কেনা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৪

কানাডায় বসবাসরত বিদেশি নাগরিক এবং বিদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে কানাডায় বাড়ি কেনা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

দাবি করা হচ্ছে, বিদেশিদের কারনে কানাডায় হু হু করে বাড়ছে বাড়ির দাম। আর এ দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এ উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ফলপ্রসু হবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ আছে।

কানাডায় বিদেশিদের বাড়ি কেনার নিষেধাজ্ঞার নতুন আইন গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। যা আগামী দুই বছর বলবৎ থাকবে।

তবে যারা কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা এবং শরনার্থী তাদের বাড়ি কেনায় কোনো বাঁধা নেই। কিন্তু এ দুই শ্রেণি ছাড়া অন্য কারও কাছে বাড়ি বিক্রি করা হলে বাড়ির মালিককে মোটা অংকের অর্থ জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।

কেন আরোপ করা হলো নিষেধাজ্ঞা?

কানাডিয়ান সরকারের যুক্তি, বিদেশিদের বাড়ি কেনার বিষয়টি নিরর্থক। কানাডার আবাসনমন্ত্রী আহমেদ হোসেন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই বাড়িগুলো কানাডার নাগরিকদের মালিকানায় থাকবে। যা সবার জন্য লাভজনক হবে।’

কানাডায় বড় শহরগুলোতে বাড়ির দাম আকাশচুম্বী হওয়ার পর ২০২২ সালের জুনে নিষেধাজ্ঞার আইন পাস করেন দেশটির আইনপ্রণেতারা।

উত্তর আমেরিকার দেশটিতে গত কয়েক বছর অব্যাহতভাবে বেড়েছে বাড়ির দাম। করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে এটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। এ সময় কম সুদ হার এবং বাড়তি আয়ের কারণে বাড়ি বেঁচা-কেনা বেড়ে যায়। এ কারণে শহুরে এলাকায় বাড়ি ভাড়াও বেড়ে যায়। এতে বেড়ে যায় মানুষের খরচও।

ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন এবং শহুরে অর্থনীতি কেন্দ্রের পরিচালক থমাস ডেভিডঅফ বলেছেন, ‘বড় দুই শহর ভ্যানকুভার এবং টরেন্টোতে নতুন আইনের প্রভাব খুব কমই পড়বে। এ দুটি স্থানেই আবাসন সবচেয়ে ব্যয়বহুল। আবাসন শিল্পের ওপর অত্যাধিক কর আরোপ করায় এখানে আগেই বিদেশিদের বাড়ি কেনার বিষয়টি কঠিন হয়ে গেছে।’

তবে এ কর্মকর্তা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে চাহিদা কমবে। যা বাড়ির দাম কমিয়ে দেবে। আর বিদেশিদের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞার প্রভাব অন্যান্য শহরগুলোতে পড়বে। যেখানে উচ্চ কর আরোপ করা হয়নি।

তবে তিনি সঙ্গে এও জানিয়েছেন, কানাডিয়ান সরকারের এ সিদ্ধান্তটা ভুল। কোনো বিদেশি যদি বাড়ি কিনে সেটি ভাড়া দিয়ে রাখেন এতে কোনো সমস্যা নেই।

কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রতি ছিল বিদেশিদের বাড়ি কেনার সংখ্যা কমানো হবে। এছাড়া ১০ বছর মেয়াদী কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি প্রজেক্টও হাতে নিয়েছেন তিনি। তার উদ্দেশ্য নতুন বাড়ি তৈরি করা এবং যেসব কানাডিয়ানের আয় কম তারা যেন বাড়ি কিনতে পারেন সে ব্যবস্থা করা।

গত বছর দেশটিতে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল কানাডিয়ান নাগরিক এবং আদিবাসীরা যেন বাড়ি কিনতে পারেন এবং বাড়ির ভাড়া যেন কম থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে।

২০২১ সালের মার্চে কানাডিয়ান রিয়েল এস্টেট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছিল, একটি বাড়ি কিনতে গড়ে রেকর্ড ৫ লাখ ২৪ হাজার ৩২৪ ডলার খরচ করতে হয়েছে ক্রেতাদের। ২০২০ সাল থেকে যা ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি ছিল। এর এক মাস পর রয়্যাল ব্যাংক অব কানাডা একটি জরিপ চালিয়ে জানিয়েছিল, ৪০ বছর বয়সী কম কানাডিয়ানের ৩৬ শতাংশ মনে করেন তারা কখনো নিজস্ব একটি বাড়ি কিনতে পারবেন না।

ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাউজিং রিসার্চ কোলাবোরেটিভের পরিচালক প্যানি গ্রুসতেন বলেছেন, ‘যারা বাড়ি কিনতে পারছেন না তারা ভাড়া নিচ্ছেন। কিন্তু আয়ের বড় একটি অংশ ভাড়ার পেছনে ঢালতে হচ্ছে তাদের। আমাদের এ বিষয়টির দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। আমাদের কম আয়ের মানুষদের বাড়ি কেনার বিষয়টির দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।’

তবে বিদেশিদের বাড়ি কেনার নিষেধাজ্ঞা এ ক্ষেত্রে কতটুকু প্রভাব ফেলবে এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

এদিকে কানাডায় বিদেশিরা প্রচুর বাড়ি কিনেছেন বিষয়টি এমনও না। কানাডার সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে অন্টারিওর মাত্র ২.২শতাংশ, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ৩.১ শতাংশ, টরেন্টোর ২.৭ শতাংশ এবং ভ্যানকুভারের ৪.২ শতাংশ বাড়ির মালিক ছিলেন বিদেশিরা।

বলা হচ্ছে, বাড়ির দাম বৃদ্ধির বিষয়টির জন্য বিদেশিরা দায়ী এমন একটি চিত্র উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র: আল জাজিরা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com