হাতে একটু সময় পেলে অনেকেই পাশের দেশ ভারতে ঘুরতে যান। ভারতে গিয়ে কলকাতা শহরে ঢুঁ মারেন না, এমন মানুষ কমই আছে। তবে পুরো শহর ঘুরে দেখাও কষ্টকর। তার ওপর যদি হাতে থাকে অল্প সময়। কিন্তু কলকাতা শহরে এমন কিছু দর্শনীয় স্থান আছে, যেখানে না গেলে ঘুরতে যাওয়াই বৃথা। এসব দর্শনীয় স্থান খরচ ছাড়াই ঘুরে দেখা যায়। আসুন জেনে নিই সে দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে
কুমারটুলি: কুমারটুলি কলকাতার উত্তরে অবস্থিত। গঙ্গা ঘেঁষা অঞ্চলটি দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিমা তৈরির স্থান হিসেবে পরিচিত। প্রতিমা গড়ার জন্যই এ জায়গা তৈরি করা হয়েছে। পূজোর সময় কুমারটুলিতে ব্যস্ততার অন্ত থাকে না। পূজো ছাড়াও অন্য সময়ও যেতে পারেন।
দেখতে পারেন শিল্পীদের শৈল্পিক কাজকর্ম। ছবি তোলার জন্য জায়গাটি বেশ। শিল্পীদের শিল্পকলা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে অনেক আলোকচিত্রী ছুটে আসেন। ফ্রেমবন্দি করেন সে মুহূর্তগুলোকে। ঘুরতে গিয়ে আপনিও বিশেষ কোনো মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করতে পারেন।
ময়দান বা গড়ের মাঠ: কলকাতা শহরে জনসাধারণের জন্য অনেক পার্ক আছে। এর মধ্যে গড়ের মাঠ অন্যতম। এখানে রয়েছে সবুজ গাছপালা। তরুণ, বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পছন্দের একটি জায়গা। ক্রিকেট স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেনস, কলকাতা রেসকোর্স, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামসহ আরো বেশ কয়েকটি ফুটবল স্টেডিয়াম এ মাঠের অংশ।
খেলার মাঠ ছাড়াও ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়াল হল, বাংলা একাডেমির প্রধান কার্যালয়, নিউমার্কেট, ফোর্ট উইলিয়ামসহ আরো বেশকিছু দর্শনীয় স্থান এ মাঠের সঙ্গে যুক্ত। ফলে গড়ের মাঠে ঘুরতে যাওয়া অনেকটা ‘রথ দেখা আর কলা বেচা’ প্রবাদের মতো।
মার্বেল প্যালেস: কলকাতা শহরের একটি দর্শনীয় ভবন ‘মার্বেল প্যালেস’। প্রাসাদের চেয়ে চিত্রভাস্কর্যাদির জন্যই বেশি পরিচিত। ভবনের ভেতরে রয়েছে অসংখ্য ভাস্কর্য। গ্রিক ও রোমান পুরাণের দেব-দেবী জিউস, মার্কারি, অ্যাপোলো, হেরা, ভেনাস যেন শ্বেতপাথরের দেহে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য চিত্রকর্ম।
রয়েছে জার্মান শিল্পী রুবেনসের আঁকা দুটি ছবি ‘দ্য ম্যারেজ অব সেন্ট ক্যাথেরিন’ ও ‘দ্য মার্টারডম অব সেন্ট সেবাস্টিয়ান’। ইংরেজ শিল্পী স্যার জোশুয়া রেনল্ডের দুটি মূল চিত্রকর্মও আছে। চিত্রকর্ম দুটি হলো হারকিউলিস আর ভেনাস ও কিউপিডের।
মল্লিক ঘাট: বেড়াতে গিয়ে ছবি তোলেন না, এমন মানুষ মেলা ভার। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির জন্য কলকাতা শহরের বড় মার্কেটগুলো ভালো জায়গা। বাজারে প্রবেশের জন্য কোনো টিকিটের প্রয়োজন হয় না। ফলে সারাদিন ধরে আপনি ছবি তুলতে পারেন। সকালে ছবি তুলতে এবং ঘুরতে যেতে পারেন মল্লিক ঘাটের ফুলের বাজারে। শহরের উত্তর দিকে, হাওড়া ব্রিজের শেষ ভাগে এ বাজার। শুভ্র সকালে এ বাজারে গিয়ে নিতে পারেন হরেক রকম ফুলের গন্ধ।
হুগলি রিভারব্যাংক: এই রিভারব্যাংকে ঘুরতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো ভোর ও সন্ধ্যা। এখান থেকে আপনি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের ছবি তুলতে পারবেন। সারাদিন নদীর তীর ধরে হেঁটে বেড়াতে পারেন। শুনতে পাবেন নদীর পানির কলকল ধ্বনি।
সূত্র: লোনলি প্লানেট