সাধারণ মানুষের কাছে সুইজারল্যান্ড হলো স্বপ্নের ডেস্টিনেশন। তাই মন চাইলেই এখানে যাওয়া যায় না। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের অর্থনৈতিক সংগতি না থাকলে এত এক্সপেন্সিভ জায়গায় বেড়াতে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবুও সুইজারল্যান্ড মানেই এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের ছবি। ঈশ্বর যেন নিজের হাতে তৈরি করেছেন সুইজারল্যান্ডকে। এত মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য পৃথিবীর আর কোনো অংশে দেখা যায় না। তাই ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে সুইজারল্যান্ড অতীব লোভনীয় জায়গা। তবে যে সমস্ত মানুষ সুইজারল্যান্ড যেতে পারে না তাদের দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর এক ব্যবস্থা রয়েছে। কলকাতার কাছেই রয়েছে এক মিনি সুইজারল্যান্ড। যেখানে কম সময়ে কম খরচে যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন।
হাতে একদিনের ছুটি থাকলেই এই মিনি সুইজারল্যান্ডে চট করে ঘুরে আসা সম্ভব। যেখানে গেলে আর মন ফিরে আসতে চাইবে না। কলকাতার ইট সিমেন্টের জঙ্গলের বাইরে ঘন সবুজ পাহাড় এবং নীল হ্রদের জলের এক অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখানে দেখা যাবে। জায়গাটির নাম ডিমনা লেক। কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টার রাস্তা। তবে এই অপরূপ জায়গাটির খবরাখবর এখনো অনেকেই জানেন না। তাই পর্যটকদের খুব একটা ভিড় হয় না এখানে। শীতের দুপুরে অনেকেই আসেন এখানে পিকনিক করতে।
প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডে অবস্থিত হয়েছে এই লেক। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত লাগোয়া জামশেদপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই ডিমনা লেক। মূলত টাটার জল কষ্ট মেটানোর জন্য এই লেকটি তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে এটি টুরিস্ট ডেস্টিনেশনে পরিণত হয়েছে। অত্যন্ত মনোরম এই জায়গা রেল এবং সড়ক পথ উভয়ই যাওয়া সম্ভব। বাংলা থেকে ডিমনা লেক যেতে ট্রেনে তিন থেকে চার ঘন্টা লাগে এবং সড়কপথে যেতে সময় লাগে ৬ থেকে ৭ঘন্টা। তবে এই কৃত্রিম জলাধার দেখতে গেলে ট্রেনে আসাই সুবিধাজনক।
সামনে দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ আর নীল রঙের প্রতিচ্ছবি দেখা যায় লেকের জলে। সবুজ ঘন পাহাড়ের মধ্যে নীল মেঘের খেলা এতটাই সুন্দর যে এই লেকের সামনে থেকে উঠে যেতে মন চাইবে না। আর এই লেকের পাশেই রয়েছে এলিফ্যান্ট করিডর জঙ্গল। হ্রদ আর জঙ্গলের সমাহার রয়েছে এখানে। এই জঙ্গলে হাতির পাশাপাশি চিতাবাঘ, হরিণও থাকে। তাই সকাল সকাল বেরোলে জঙ্গল সাফারিও করা সম্ভব হতে পারে। তবে এখানে কাছে পিঠে বেশ কিছু দেখার জায়গা রয়েছে যেমন টাটা স্টিল জুলজিক্যাল পার্ক, জুবিলি পার্ক, জুবিলি লেক, সেন্ট মেরিস চার্চ, ভুবনেশ্বরী মন্দির ইত্যাদি।