ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর বিশ্বের লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করেন এই দ্বীপে। সেখানে মানুষের এতো বেশি ভিড় হয় যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
বালি ভ্রমণে যাওয়া অনেকের কাছেই হয়তো স্বপ্নের মতো। এর কারণ হলো বালি ভ্রমণ বেশ ব্যয়বহুল। তবে জানলে অবাক হবেন, বালি ভ্রমণে বাংলাদেশীদের লাগে না কোনো ভিসা। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সময়ের ব্যবধান ঘণ্টা দুয়েক।
অনায়াসেই ৩০ দিনের জন্য এক্সেমশন ভিসা পাওয়া যায় বালির। হোটেল বুকিং আর রিটার্ন এয়ার টিকেটের আইটিনারির প্রিন্ট কপি ইমিগ্রেশনে দেখালেই ভিসা ফি বা ছবি ইত্যাদি কোনো কিছুরই প্রয়োজন হয় না। তাই মাত্র ৫০ হাজার টাকা খরচ করেই বালি থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। জেনে নিন কীভাবে-
বিমান ও পরিবহনে কত খরচ হবে?
কম খরচে বালি বেড়াতে যেতে চাইলে অনেক আগেই বালি যাওয়ার আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানের টিকিট কেটে রাখতে হবে।
অন্তত এক মাস আগে টিকিট কাটলে খরচ হতে পারে ২৫ হাজার টাকা। আপনি যদি আরও আগে থেকে টিকিট কেটে রাখেন তাহলে ১৫-১৭ হাজারের মধ্যেই ফ্লাইটের টিকিট বুক করতে পারবেন।
বালি পৌঁছে বিমানবন্দর থেকে সহজেই উবার বা ওলাতে চড়ে এদিক-ওদিক যেতে পারবেন। ইন্দোনেশিয়ার গোজেক নামে নিজস্ব ট্যাক্সি পরিসেবা আছে। এটি বুক করার জন্য কোনো সিম কার্ড লাগে না।
বালিতে ভ্রমণের জন্য নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি স্কুটার বা সাইকেল ভাড়া নেওয়া যায়। একটি স্কুটারের গড় খরচ দিন প্রায় ৪০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন ও কত খরচ?
বালিতে বিভিন্ন বাজেটের মধ্যে থাকার জায়গা পেয়ে যাবেন। একা ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যাকপ্যাকার্স হোস্টেলে থাকতে পারেন। আবার বন্ধুরা মিলেও সেখানে থাকতে পারবেন। সেখানে আধুনিক যাবতীয় সুবিধা পাবেন।
বালিতে একটি ডরমেটরি বেডের দাম ১৫০-২০০০ টাকার মধ্যে। সস্তায় থাকতে চাইলে চলে যান নিউ উবড হোস্টেলে। সেখানে খুব কম দামে ব্রেকফাস্ট ও লকারসহ একটি এসি রুম পেয়ে যাবেন।
কোন কোন স্পট ঘুরবেন?
বালির সৌন্দর্য দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা ছুটে যান সেখানে। সেখানে অনেক সুন্দর কিছু অফবিট দ্বীপ আছে।
সেগুলোতে ভিড় কম হয়। যার মধ্যে গিলি ও নুসা দ্বীপ খুবই জনপ্রিয়। প্রিয়জনের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাতে এসব দ্বীপে ঢুঁ মারেন।
বালিতে বোটিং করার ক্ষেত্রে গুনতে হয় ৭০০-১৫০০ টাকা নেওয়া হয়। তবে নৌকার ভাড়া নির্ভর করে যে আপনি কোন দ্বীপে যেতে চান তার উপর।
বালিতে রাতের জাকজমকতা সবাইকে মুগ্ধ করে। আবার খরচও কম। সন্ধার পর সেমিন্যকের লা ফেম্ভেলা, সেনিন্যাকের পটেটো হেড ও লা প্লাঞ্চা, সনডাউনর্সের কাংগুর ওল্ড মেন্সের মতো বিচ ক্লাবে বিনামূল্যে প্রবেশ করা যায়।
নুসা লেম্বোঙ্গানে স্নরকেলিং ও স্কুবা ডাইভিং সেরা। যারা স্কুবা ডাইভিং করতে চান তারা ১৫০০-২৫০০ টাকার মধ্যেই তা সম্পন্ন করতে পারবেন।
খাবারের খরচ কত পড়বে?
বালির খাবারগুলোও বেশ মুখোরোচক। সেখানে নিরামিষ বা আমিষ সব ধরনের খাবারই পাওয়া যায়। সেখানে আছে নানা বাজেটের রেস্তোরা। দুপুরের খাবারের মধ্যে পাবেন ভাত, চিকেনসহ নানা পদের তরকারি।
দাম ১০০-২৫০ টাকার মধ্যেই পেট পুরে খেতে পারবেন। বাজেট কম হলে স্থানীয় খাবার খান। আরও কম খরচ হবে। স্থানীয় খাবারের স্বাদও বেশ ভালো।
বালিতে কেনাকাটার সময় যা খেয়াল রাখবেন
আপনি যদি বালি গিয়ে শপিং করতে চান সেক্ষেত্রে দামাদামিতে দক্ষ হতে হবে। তাহলে ঠকবেন না।
দোকানিরা কোনো জিনিসের দাম যেটা বলবেন আপনি সেটি ওই দামের অর্ধেক মূল্যে কিনতে পারবেন, যদি দামাদামি করতে পারেন।
সেখানকার উবড আর্ট মার্কেট বালির সেরা কেনাকাটার স্থান। সেখানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না।