পিকনিক কিংবা কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন অনেকেই। সপ্তাহান্তে আপনার ডেস্টিনেশন হতেই পারে রাজবাড়ির শহর বর্ধমান। এই শহরের অলিগলিতে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস। রয়েছে প্রখ্যাত সব মন্দির মসজিদ। তার সঙ্গে রয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ।
এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে বর্ধমান রাজবাড়ি মহাতাব মঞ্জিল। এখন সেখানে রয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন। রাজবাড়ির ভিতর মিউজিয়াম নানান পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ। বর্ধমানের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে সুদৃশ্য কার্জনগেট।
পাশাপাশি এই এলাকাতেই রয়েছে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দির। ১৭০২ সালে মহারাজা কীর্তিচাঁদ সর্বমঙ্গলা মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। মা সর্বমঙ্গলার মূর্তিটি প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো, বলে লোকমুখে প্রচলিত। এটি অবিভক্ত বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দির।বর্ধমানে রয়েছে শের আফগানের সমাধি। রাজবাড়ির কাছে পীর বাহারমের পাশে অবস্থিত। ১৬১০ সালে যুদ্ধে কুতুবউদ্দিন খান এবং শের আফগান নিহত হয়েছিলেন। সমাধিগুলি বর্ধমান রাজার তত্বাবধানে তৈরি হয়েছিল। এখন এটি এএসআই দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
সিউড়ি রোডে নবাবহাট বাস স্ট্যান্ডের কাছে রয়েছে একশো আট শিব মন্দির। ১৭৮৮ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন মহারাজা তিলোকচাঁদের স্ত্রী মহারাণী বিষ্ণু কুমারী। ১০৮টি মন্দিরের একটি আয়তক্ষেত্রাকার মালা হিসাবে সুরক্ষিত রয়েছে।
ঘুরে দেখতে পারেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসের কাছে রমনাবাগান অভয়ারণ্য। এই জুলজিক্যাল পার্কে প্রচুর হরিণ রয়েছে। রয়েছে চিতাবাঘ, ভাল্লুক, কুমির ছাড়াও কিছু ধরণের পাখি। বনবিভাগ এই মিনি জু রক্ষণাবেক্ষণ করে।
বর্ধমানে রয়েছে বিশাল কৃষ্ণসায়র পার্ক। ১৬৯১ সালে তৎকালীন বর্ধমান রাজা কৃষ্ণসায়রে প্রায় ৩৩ একর জমিতে একটি বিশাল কৃত্রিম হ্রদ নির্মাণ করেছিলেন। এটি সেরা প্রাকৃতিক দৃশ্য সহ একটি জনপ্রিয় উদ্যান। পার্কের কেন্দ্রে একটি বিশাল হ্রদ রয়েছে।
বর্ধমানের গোলাপব্যাগ বা গোলাপের বাগান একটি প্রিয় পর্যটন স্থান। এটি ১৮৮৩ সালে রাজা বিজয় চাঁদ মাহাতাব প্রতিষ্ঠিত বোটানিকাল গার্ডেন এবং প্রাণিবিদ্যা সম্পর্কিত উদ্যান।
বিখ্যাত উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডালটন হুকার এখানে এসে ১২৮ ধরণের গাছ তালিকাভুক্ত করেছেন। কঙ্কালেশ্বরী কালী মন্দির থেকে শুরু করে সোনার কালী, শের শাহ প্রতিষ্ঠিত মসজিদ সহ দর্শনীয় অনেক কিছুই রয়েছে এই শহরে।
নিউজ১৮ বাংলা