বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৩ অপরাহ্ন

কক্সবাজার ভ্রমণে ঘুরে আসুন ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪

কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক। কক্সবাজার শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার উত্তরে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের অবস্থান। শতবর্ষী গর্জন বনের ভেতরে লোহার বেষ্টনীতে বাস প্রাণীকূল। প্রাণী হলেও পরিচর্যাকারীরা যে নামে ডাকেন তা উচ্চারণ করলেই সাড়া দেয় বাঘ-সিংহ।

বেষ্টনীতে খেলাধুলা আর হুংকার ছেড়েই সময় পার করা এসব প্রাণী যা দেখে আনন্দ পান দর্শণার্থীরা। এর আগে ১৯৮০ সালে এটি ছিল হরিণ প্রজননকেন্দ্র। ভেতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) আছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ।

কক্সবাজার ভ্রমণে ঘুরে আসুন ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে

শুরু থেকেই সবুজের আবরণে দৃষ্টিনন্দন পার্কটি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের বিনোদনের অনুষঙ্গ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই পার্ক থেকে প্রকৃতিবিষয়ক জ্ঞান আহরণ করতে পারে। সপ্তাহের মঙ্গলবার ছাড়া বাকি ছয় দিন দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাসে, প্রাণীকূলের কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো পার্ক।

প্রাপ্তবয়স্করা ৫০ টাকা আর ৫ বছরের বড় শিশু-কিশোররা ৩০ টাকায় ও শিক্ষার্থী (শর্তসাপেক্ষে) ১০০ জনে ৫০০ টাকা ও ২০০ জন ৮০০ টাকার টিকিটে পার্ক দর্শন করতে পারছেন। হাঁটতে অক্ষম দর্শণার্থী চাইলে নির্ধারিত ফি দিয়ে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব মিনিবাসে পার্ক ঘুরে দেখতে পারেন।

তথ্যমতে, পার্কে দেড় ডজন বেষ্টনীতে সংরক্ষিত প্রাণীকূলে কঠোর নিরাপত্তায় পালিত হচ্ছে হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তি, গয়াল, আফ্রিকান জেব্রা, ওয়াইল্ডবিস্ট, ভাল্লুক, বন্য শূকর, হনুমান, ময়ূর, স্বাদু ও নোনা পানির কুমির, সাপ, বনগরুসহ দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির প্রাণী।

কক্সবাজার ভ্রমণে ঘুরে আসুন ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে

পার্কজুড়ে আরও আছে চিত্রা, মায়া, সম্বর ও প্যারা হরিণ। আছে জানা-অজানা বিচিত্র ধরনের কয়েকশ’ ধরনের পাখি। ৫২ প্রজাতির ৩৫০ প্রাণী পার্কে দেখা মেলে। উন্মুক্তভাবে আছে ১২৩ প্রজাতির এক হাজার ৬৫ প্রাণী। এর মধ্যে গুইসাপ, শজারু, বাগডাশ, মার্বেল ক্যাট, গোল্ডেন ক্যাট, ফিশিং ক্যাট, খেঁকশিয়াল, বনরুই উল্লেখযোগ্য।

হেঁটে পার্ক ভ্রমণের সময় অসংখ্য বানর, শিয়াল, খরগোশ, হরিণসহ বন্যপ্রাণীর দৌড়ঝাঁপ দেখা যায়। দেখা মেলে কালের সাক্ষী বিশালাকার দুর্লভ ও মূল্যবান বৃক্ষরাজির। সেসব গাছ ও দেয়ালে দেয়ালে বানরের লাফালাফি নজর কাড়ে সবার। এসব দৃশ্য মোবাইল ফোন ক্যামেরায় বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দর্শনার্থীরা।

পার্কের প্রাণীকূলের চিকিত্সার জন্য আছে হাসপাতাল। যেখানে সার্বক্ষণিক আছে প্রাণী চিকিৎসক। প্রতিদিন সাফারি পার্ক ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীদের মূল আকর্ষণ থাকে বাঘের বেষ্টনী। বাঘের দৌড়ঝাঁপ দেখে সবাই আনন্দে মাতেন।

পার্কের বাঘ-সিংহ ও তৃণভোজী প্রাণীদের জন্য তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে সাফারি। বাঘ-সিংহের জন্য শত একর জমির আলাদা সাফারি ও জেব্রা, গয়াল, হরিণসহ অন্যপ্রাণীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে কয়েকশ’ একর এলাকা।

কক্সবাজার ভ্রমণে ঘুরে আসুন ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে

বেষ্টনী অনুসারে সাফারির চারপাশে তৈরি হয়েছে নিরাপদ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ পথ। গড়া হয়েছে প্রবেশ-বাহিরের জন্য স্বয়ংক্রিয় ফটক, যান চলাচলে উপযুক্ত পাকা সড়কও। বাঘ-সিংহসহ হিংস্র প্রাণী বনে মুক্ত করে দেওয়া হলে খাঁচাযুক্ত গাড়িতে দর্শনাথীর্রা সংশ্লিষ্ট বেষ্টনীতে ঢুকে বিচরণরত বাঘ-সিংহ অবলোকন করেন।

কীভাবে পৌঁছাবেন এই পার্কে?

বাসে করে ঢাকা-কক্সবাজার যাওয়ার পথে ডুলাহাজারা নামক স্থানেই নেমে পড়ুন। প্রধান সড়ক হতে মাত্র ৩৫০ গজ পূর্বেই এই পার্কের অবস্থান। আবার কক্সবাজার থেকে বাসে করে ডুলাহাজারা গিয়েই সাফারি পার্ক পরিদর্শন করতে পারেন।

ডুলাহাজারা থেকে কক্সবাজার শহরের দূরত্ব মাত্র ৪৭ কিলোমিটার। পার্ক পরিদর্শন করে যে কোনো বাসে চড়ে মাত্র ৩০-৪০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাতে পারেন। সেখানে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপনের সুযোগ আছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com