ঝুলন্ত রেস্টুরেন্টে বসে রসনা বিলাসের সুযোগ তৈরি হয়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে যাত্রা শুরু করেছে ‘ফ্লাই ডাইনিং’ নামে এই ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা পয়েন্টে সৈকত তটে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হয়েছে রেস্টুরেন্টটি। বসার পর্যাপ্ত স্থান রেখে চালু করা হয়েছে ‘ফ্লাই ডাইনিং’ রেস্তোরাঁ ও রান্নাঘর। রেস্তোরাঁর পশ্চিম পাশে খালি স্থানে বসানো হয়েছে একটি ক্রেন। একটি বিশেষ পাটাতনে ২৪ জন ধারণ ক্ষমতার চেয়ার, টেবিল ও ওপরে ছাতার মতো এক ধরণের ছাদ তৈরি করে চারপাশ খোলা রাখা হয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের সমন্বয়ে তৈরি বিশেষ তার ক্রেনের মাথায় লাগিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে পাটাতন। রান্নাঘরে পছন্দমতো খাবার অর্ডার করলে ‘ঝুলন্ত পাটাতনে’ সেই খাবার পরিবেশন করবেন রেস্টুরেন্টের কর্মীরা।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অত্যাধুনিক মেশিনে ক্রেনের সাহায্যে সৈকতের ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৬০ ফুট উঁচুতে এই রেস্টুরেন্টে খাবার সরবরাহ করা হবে। এতে মেঘের রাজ্যে বসে আপ্যায়িত হওয়ার এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি পাবেন পর্যটকরা। এখানে খাবার গ্রহণের সময় বাড়তি আনন্দ উপভোগ করবেন গ্রাহকরা। আধুনিক জগতের এমন ব্যতিক্রম আয়োজন বদলে দেবে কক্সবাজারের পর্যটনের আবহ। এই ধরনের রেস্টুরেন্ট দেশে এই প্রথম। দেশের প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতির এই ‘ফ্লাই ডাইনিং’ নির্মাণ করেছে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘ইউর ট্রাভেলস লিমিটেড’।
ফ্লাই ডাইনিং রেস্টুরেন্টের কর্ণধার নবাব ফয়েজ আবু বক্কর খান জানান, ২৪ জনের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ‘ফ্লাই ডাইনিং’ রেস্টুরেন্টটি মাটি থেকে সৈকতের ১৬০ ফুট ওপরে তুলে চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে ক্রেতাদের খাবার পরিবেশন করবে। এ সময় আকাশ থেকে উপভোগ করা যাবে সৈকত ও আশপাশের দৃশ্য। এতে খাবার সহ জনপ্রতি খরচ পড়বে সর্বনিম্ন চার হাজার থেকে সাড়ে আট হাজার টাকা। পাটাতনে ওঠা, আকাশে উড্ডয়ন এবং অবস্থান ও নেমে আসার সময়সহ প্যাকেজের সময়সীমা থাকবে এক ঘণ্টা। রান্নাবান্না ও যাবতীয় ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী টনি খান।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৈকত পাড়ের সুগন্ধা পয়েন্টে এই রেস্টুরেন্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মুহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান ও প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম উদ্যোক্তা আমেরিকা প্রবাসী আল জুবাইর মানিক।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রেস্টুরেন্টে বসে খাবার গ্রহণ করেন ঢাকার উত্তরা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক আবদুল আজিজ। পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে ফ্লাই ডাইনিং-এ রসনা বিলাস করেন এই পর্যটক। তিনি জানান, এটি অন্যরকম অনুভূতি। পাটাতনের চেয়ারে বিমানের মতোই লাগানো সিট বেল্টে প্রথমে বাঁধা হয়। প্রথমে একটু ভীতি কাজ করলেও ওঠার পর মনের আনন্দে সব ভুলে গেছি। ওপর থেকে সাগরের ঢেউ দেখা, কক্সবাজারের পাহাড় এবং আশপাশের দৃশ্যে অবলোকন অন্য রকম এক অনুভূতি। সেই সঙ্গে অপূর্ব ছিল খাবার পরিবেশন। এটি পর্যটকদের বিনোদনের জন্য অনন্য অসাধারণ সংযোজন।