বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

ওয়াটার বাফেলো ফার্ম ট্যুর

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১

ছোট-বড়ো মিলে সুন্দর একটি দিন।

লেখাটির শুরুতে আমি আমার appreciation এবং ধন্যবাদ জানাই বনধু এবং bccb সদস্য ও প্রবাসী ব্লগের নিয়মিত পাঠক মি. আব্দুল্লা আল মামুন ভাইকে। উনি গত বছরে আমাকে এই ফার্মটির হদিস দেন। আমি এতদিন এখানে থাকলেও এটি সমন্ধে ধারণা ছিল না। এ বছর আমাদের এক cousin, Mohiuddin Ahmed তার Ryerson University তে পড়াশুনারত ছেলেকে দেখতে বাংলাদেশ থেকে এখানে এসেছেন। সময় স্বল্পতার কারণে তার সাথে একটি ক্যাম্পিং টুর ক্যান্সেল করতে হয়েছে। উনি প্রতি উইকেন্ডেই অবশ্য কোথাও না কোথাও যান। উল্লেখ্য আমরা বাংলাদেশে গেলে উনি আমাদেরকে যে ভি.আই.পি treatment দেন সেই তুলনায় আমরা উনার জন্য এখানে তেমন কিছু করতে পারি না। যাহোক এবার মনে করলাম উনাকে একটু different জায়গায় নিয়ে যাবো, যেটা সাধারণত ঘুরতে এসে কেউ যায় না। আর সে জন্যই এই ফার্ম পরিদর্শনের ধারণা। উনাকে এখানকার  ফার্মিং এর একটি ধারণা দেওয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাচ্চাদেরকে দেখানো যে এখানকার কৃষকেরা কিভাবে আমাদের জন্য প্রোডাক্ট তৈরী করে। আবারো মামুন ভাইকে ধন্যবাদ এই উদ্দেশ্য সাফল্যের অনুঘটক হিসাবে কাজ করায়।

ফার্মটি  টরন্টো থেকে দুই ঘন্টার মতো ড্রাইভ। Trenton শহরের একটু উত্তরে Stirling নামক জায়গায়। এই ধরণের ফার্ম নাকি কানাডাতে দুটি। এটি তার একটি। এখানে ৫০০ মত মহিষ আছে। এরা সাধারণত দুধ সরবরাহ করে। এদের water নামের কারণ মালিক লরি বললেন, কলম্বাস নাকি বাইসন কে দেখে bufello মনে করেছিলেন, তাই বাইসন থেকে পার্থক্য করার জন্য এদেরকে এখানে water buffeelo বলে। আমরা যেটাকে মহিষ বলি। উনার কাছ থেকে জানা গেলো পৃথিবীর ১৫% দুধই নাকি এই  water buffeelo দ্বারা সরবরাহ হয়, যদিও আমাদের দেশে গাড়ি টানা বা মাংস খাওয়াই বেশি বেবহার হয়, শুধু মাত্র বাংলাদেশের কিছু কিছু এলাকায় এদের দুধের দোই তৈরী হয়।

এই দেশের এই কঠিন weatherএ কিভাবে এরা এদের রক্ষণাবেক্ষন করে সেটা একটি জানার বিষয়। আমরা গত কাল রবিবার ৭ টি পরিবারের বাচ্চাসহ ২০ জনের একটি গ্রূপ যাই। সকালে প্রচন্ড বৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও আমরা আমাদের প্রোগ্রামের কোনো নড়চড় করি না। সকাল ১০:১৫র মধ্যে সবাই মিলে রওয়ানা হই। সারা পথে বৃষ্টি হলেও হাইওয়ে ৪০১ থেকে হাইওয়ে ৩৩ এর উত্তরে ওঠার পর বৃষ্টি কমে যায়। এর পর ট্রেনটন নদীর পাড় ধরে দুপাশের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে যাই ফার্মটিতে।

আমাদের আগের থেকে বলা ছিল, তাই মালিক লরি আমাদের সবাইকে একজাগা করে ফার্ম এবং এই water buffalo সমন্ধে কিছু ধারণা দিয়ে তার সঙ্গী কুকুর মলিকে নিয়ে ফার্ম ট্যুরে নিয়ে গেলেন। এক এক সেক্শনে গেলেন আর আমাদেরকে সেই জায়গার মহিষগুলি সমন্ধে ধারণা দিলেন এবং প্রতিনিয়ত আমাদের সফরসঙ্গী বাচ্চাদের উপর্যপুরি প্রশ্নের উত্তর দিতে থাকলেন।  বলতে গেলে আমরা বড়রাও তাদের প্রশ্নের উত্তর থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। শুধু দেখা নয়, শিক্ষণীয় অনেক কিছু ছিল।

আমাদের সৌভাগ্যও ছিল যে ঐদিন সকালে জন্ম নেওয়া একটি নবজাতক মহিষের বাচ্চার দেখা মেলা। ওরা বচ্চা মহিষদের এক জায়গায়, পুরুষদের এক জায়গায় এবং দুধ দেওয়া মহিষদের এক জায়গায় রাখে। নিদৃষ্ট একটি সময় ওদেরকে দুধ দেওয়ার জন্য বিশেষ sucking  মেশিনের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। মহিষগুলি বেশ frindly . আমাদের সবাই ওদেরকে গায়ে হাত বুলান এবং ছবি তোলেন। ওদের শিং গুলি ছোট বেলা কেটে দেওয়া হয় safety reasonএ। ওখানে জন্ম নেওয়া পুরুষদের একটু বড়ো হলে জবাই করে মাংস বিক্রি করে কারণ ওগুলি কেউ কিনে না এবং ডিমান্ড ও কম। এই ক্ষেত্রে অন্তত নারী পুরুষদের থেকে দামি এবং সম্মানিত !

টুর শেষে আমরা ওদের রিটেল স্টোর থেকে সুস্বাদু আইস ক্রিম খেলাম এবং ওখান থেকে সবাই মিলে প্রায় ৩০ লিটারের মতো ফ্রেশ দুধ কিনলাম। উল্লেখ ফ্রেশ দুধ কিনতে চাইলে আপনাকে আগের থেকে বলে রাখতে হবে কারণ ওরা ওখানে খুচরা বিক্রি করে না। ওদের চিজ এবং বাটার খুব সুস্বাদু। সব দেখেশুনে মালিক লরি এবং মার্টিন পরিবার ও এখানকার অন্নান্ন ফার্মারদের প্রতি আরো শ্রদ্ধা বেড়ে গেলো, ওদের মতো শত শত খেটে খাওয়া ফার্মাররা আমাদের শহরকে বাঁচিয়ে রেখেছে। সত্যি বলতে কি যদি ৫০০ মানুষ, আর বিশেষ করে যদি আমাদের দেশের মানুষ হয় তাদের সাথে অতটা সময় কাটালে আমি নিশ্চিত এতো ভালো লাগতো না। আমার সঙ্গের অন্যানদের একই কথা।

মালিক লরি আমার ভাতিজাকে একটি সুন্দর নবজাতক বিড়ালের বাচ্চা উপহার দেন (সে বিড়াল পছন্দ করে )। ওখানে আরো কিছু কিটেন ছিল, যেগুলি নিয়ে আমাদের বচ্চারা খুব মজা করেছে। বাচ্চারা ওদেরকে আদর করতে পেরে খুব মজা পেয়েছে, এবং সারাটা দিনে তারা ফোন, ট্যাবলেট বা ipod এর কথা উচ্চারণ করে নাই।  যাওয়ার পথে ছোট্ট একটি পারিবারিক চিকেন ফার্ম দেখেছিলাম তাই বাচ্চাদের দাবি তাদেরকে সেই চিকেন ফার্মে নিতে হবে। বললাম লাঞ্চ শেষে যাওয়া হবে।

টুর শেষ করে আবারো ট্রেনটন নদীর পাড় ধরে চলে গেলাম ট্রেনটন নদীর মোহনায় Centenial পার্কে লাঞ্চ করতে। potluck লাঞ্চ সেরে কেউকেউ ছবি তুললো, রেস্ট নিলে এবং মাছ ধরলো। এর পর অর্ধেক গ্রূপ সদস্য টরন্টো চলে আসলো, আর আমরা বাকিরা চলে গেলাম সেই চিকেন ফার্মে, সেখানেও বচ্চার ফার্মের মালিকিনিকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করলো।  আমরা কিছু ফ্রি রান ডিম্ কিনলাম এবং রওয়ানা হলাম পোর্ট পেরির উদ্দেশ্যে। সিদ্ধান্ত হলো যতোক্ষন আলো থাকে ততোক্ষন টরন্টো ফিরবো না। পোর্ট পেরিতে পৌঁছে সবাই মিলে ছোলা মুড়ি খেয়ে লেকের পাড় ধরে হাটাহাটি করলাম, কেউ কেউ ছবি তুললো, আর বাচ্চারা মহা আনন্দে খেলাধুলা করতে থাকলো।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে আমরা রওয়ানা হলাম টরোন্টোর উদ্দেশে। সব মিলিয়ে একটি সুন্দর দিন কাটলো। আমার বেক্তি গত ভাবে সব থেকে ভালো লাগার দুটি জিনিস হলো, নবজাতক মহিষের বাচ্চাটির মায়ের কাছে যাওয়ার আদো আদো ডাক, আর আমাদের বাচ্চাদের কাছ থেকে শোনা “এটা তাদের ভালো লাগার অন্যতম একটি দিন”, এবং সে জন্য তাদের thanks আমার সমস্ত সপ্তাহের ক্লান্তি দূর করার জন্য মহা ঔষধ।

সময় সুযোগ হলে একবার যান ঘুরে আসুন।  আপনার যদি inquisitive বা enthusisic মন থাকে এবং খড়-পালা আর কিছুটা গোবরের গন্ধে আপত্তি না থাকে তাহলে আমি নিশ্চিত আপনার ভালো লাগবে। আমরা ছোট বেলাতে যখন মায়ের দুধ পান করি তখন কি মায়ের গায়ের ঘামের গন্ধের তোয়াক্কা করি, ঠিক তেমনি ২/১ ঘন্টার জন্য একটু মহিষের গায়ের বা গোবরের গন্ধে আমার কোনো কিছু যায় আসে না, at the end of the day ওরা তো দুধ দিয়ে আমাদের ডেইরি প্রোডাক্টের অনেক চাহিদা মেটাস্ছে। এই ফার্ম সমদ্ধে হয়তো অনেকেই জানেন তাই এই লেখাটি শুধু মাত্র আমার মতো নাজানা লোকদের জন্য।

সবাই ভালো থাকবেন, আর সুযোগ এবং সামর্থের মধ্যে থাকলে অন্টারিওর তৈরী প্রোডাক্ট কিনে আমাদের ফার্মারদের সহযোগিতা করুন। ধন্যবাদ। The  address and ph no: 3346 Stirling Marmora Rd, ON KOK 3ED. Ph 613 395 1342. The owner name is Lori.

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com