সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আধুনিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। নির্মাণ করা হচ্ছে বিদেশের আদলে চোখধাঁধানো সৌন্দর্যের নতুন টার্মিনাল ভবন। কার্গো ভবন, ফায়ার স্টেশন, কন্ট্রোল টাওয়ারসহ আরও বেশ কিছু উন্নয়নকাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে এসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন হবে ১ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই দিন এ উন্নয়ন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ (সিএএ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ ১৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করছে ২ হাজার ২৪৭ কোটি ৬৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। আর সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অর্থায়ন ৬২ কোটি ১২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শুরু হতে হতেই ২০২১ সাল চলে এসেছে প্রায়। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর নির্মাণকাজের মেয়াদের শেষ কোয়ার্টারে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। যেহেতু এ প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে নির্ধারিত সময়ের ২১ মাস পর, সে কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়ার সুযোগ নেই।
মন্ত্রণালয় ও সিএএ সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় করা হবে বিমানবন্দরের ভূমি উন্নয়ন কাজ। নির্মাণ করা হবে ৩৪ হাজার ৯১৯ বর্গমিটারের আধুনিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবন। এ টার্মিনালে ৮টি বিমান একসঙ্গে যাত্রী ওঠানামা করাতে পারবে।
এর বাইরে ৬ হাজার ৮৯২ বর্গমিটারের কার্গো ভবন, ২ হাজার ৪১৫ বর্গমিটারের ফায়ার স্টেশন, ২ হাজার ৭৭২ বর্গমিটারের কন্ট্রোল টাওয়ার, ১ হাজার ৩৯৫ বর্গমিটারের প্রশাসনিক ভবন, ৬০৬ বর্গমিটারের মেইনটেনেন্স ভবন, ২ হাজার ৫২৪ বর্গমিটারের ইউটিলিটি ভবন এবং ৯ হাজার ২৯৯ বর্গমিটারের মধ্যে আবাসিক ভবন, আনসার ব্যারাক, স্কুল স্থানান্তর, রেস্ট হাউস ও ডরমেটরি নির্মাণ করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আধুনিক রূপ দিতে অ্যাপ্রোন, ট্যাক্সিওয়ে ও শোল্ডার, রাস্তা, কার পার্কিং ও ফুটপাথ নির্মাণ করা হবে। নির্মাণ করা হবে ড্রেনেজ সিস্টেম, পানি সরবরাহ ও স্যুয়ারেজ সিস্টেম। জানা গেছে, বিমানবন্দরটির আধুনিকায়নের কাজ করবে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (বিইউসিজি)।
প্রতিষ্ঠানটি সিলেট বিমানবন্দর এলাকায় তাদের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড গড়ে তুলেছে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের সাইট সার্ভে ও সয়েল ইনভেস্টিগেশনের কাজ চলছে।