মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ৩২তম ‘নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা’ নিউইয়র্কের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৪ জুলাই বইমেলা শুরু হয়ে চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ২৫টি প্রকাশনা সংস্থা মেলায় অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন করেছে। নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা উপলক্ষে ঢাকায় বুধবার বেলা ১১টায় মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব বিষয়ে জানান। এবারের বইমেলার আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কথাসাহিত্যিক ড. আবদুন নূর।
ড. আবদুন নূর বলেন, ‘বইমেলার গুরুত্বের দিক থেকে এটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। শুধু বই নয়, বিভিন্ন উদ্দেশে এ বইমেলা হচ্ছে। ভালোবাসা থেকে ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা বইমেলা। বাংলা শুধু বাংলাদেশের না, সারা বিশ্বের। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা যেমন আমাদের জন্য গর্বের, তেমনি ভাষাও আমাদের জন্য গর্বের। বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা নিয়ে যাদের আগ্রহ রয়েছে তারাই এই মেলায় অংশ নিতে পারবেন। বিভিন্ন দেশ থেকে যারা অংশ নিতে চান, তাদের মধ্যেও বাংলার প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে।’
কথাসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন বলেন, ‘বিদেশিদের অনেকেই অভিযোগ করেন আমাদের সাহিত্য অনুবাদ করা হয় না। আমাদের সাহিত্য ইংরেজিতে অনুবাদ করে এই বইমেলার অন্তত দুটি স্টল বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষার অনুবাদ রাখতে পারলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আরো মর্যাদা পাবে।’
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, অনুবাদ পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ। বাংলা একাডেমিতে অনুবাদ বিভাগ ৭০ বছর কাজ করার পরও তেমন উন্নতি হয়নি। অনুবাদের মান অবশ্যই ভালো হতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে তিনি প্রকাশকদের পাঁচটি করে বই অনুবাদ করানোর অনুরোধ জানান।
নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, এটি শুধু বইমেলা না, সংস্কৃতির মেলা। তরুণদের যুক্ত করার মিলনমেলা। প্রবাসী বাঙালিদের যুক্ত করাই এর সার্থকতা। বইমেলা নিয়ে পরামর্শ জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে অনেক সেমিনার হয়, সেগুলো দীর্ঘায়িত না করে এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে মেলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দেন আনিসুল হক, ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মিনার মনসুর, কাজল চক্রবর্তী, অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক ও সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদসহ প্রমুখ।
জানা যায়, প্রতিবছর বিভিন্ন গুণী লেখক এ বইমেলায় অংশগ্রহণ করেন।বাংলা ভাষার একজন লেখককে দিয়ে প্রতিবছর এ বইমেলার উদ্বোধন করা হয়। এ বছর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদাকে মেলার উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বছরও মুক্তধারা-জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার-২০১২ দেওয়া হবে। আগের বছর এ পুরস্কার পেয়েছেন ভাষা সাহিত্যের গবেষক ও লেখক অধ্যাপক গোলাম মুরশিদ।
পুস্কারের অর্থমান তিন হাজার ডলার। অভিবাসী লেখকদের সেরা বইএর জন্য শহীদ কাদরী গ্রন্থ পুরস্কার-২০২৩ এবং অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শ্রেষ্ঠ প্রকাশনাকে চিত্তরঞ্জন সাহা সেরা প্রকাশনা সংস্থা পুরস্কার-২০২৩ দেওয়া হবে।